‘কাল রাস্তায় ইফতার করেছি, আজও রাস্তাতেই করতে হবে’

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৫:২৫ পিএম, ২৮ মার্চ ২০২৩

রাজধানীর মতিঝিলে একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন শাহরিয়ার হাসান। বিকেল ৩টার দিকে অফিস থেকে বের হয়েছেন তিনি। ৪টার দিকে মৎস্যভবনের সামনে অবস্থান করছিলেন। শাহরিয়ারের মতো এমন অনেকেই বাসে বসে মোবাইল ও হাত ঘড়িতে সময় দেখছেন। বাসায় পৌঁছে ঠিক সময়ে ইফতার করতে পারবেন কি না, তা নিয়ে ভাবনা তাদের।

মৎস্যভবন মোড়ে নীলাচল বাসে দীর্ঘক্ষণ ঠায় বসে আছেন আব্দুস সোবহান। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, ‘গতকাল সোমবার মতিঝিল থেকে অফিস শেষ করে বাসে উঠেছিলাম। এক ঘণ্টা লেগেছিল মৎস্যভবন পর্যন্ত। গতকাল যেমন রাস্তায় ইফতার করতে হয়েছে, আজও মনে হচ্ছে রাস্তায়ই ইফতার করতে হবে।’

trafic-2.jpg

এমন ভোগান্তি শুধু শাহরিয়ার বা সোবহানের একার নয় কিংবা এ যানজটের চিত্রও শুধু মতিঝিল-মৎস্যভবনের নয়, রাজধানীর বেশিরভাগ সড়কের চিত্রই এমন। বিশেষ করে ইফতারের আগে যানজটে যেন স্থবির রাজধানী।

সরেজমিনে দেখা যায়, ট্রাফিক পুলিশের সদস্যরাও যানজটে অসহায় বোধ করছেন। সড়কের চারদিকে এতো বেশি গাড়ির চাপ, যেন তাদেরও করার কিছু নেই। দুই সেকেন্ড গাড়ির চাকা এগোলে আবার আধা ঘণ্টা পর একটু নড়াচড়া করে। এতে অফিস থেকে বাসায় ফেরা মানুষের ভোগান্তির শেষ নেই।

trafic-2.jpg

মঙ্গলবার (২৮ মার্চ) বিকেলে রাজধানীর ফার্মগেট, কারওয়ান বাজার, শাহবাগ, পল্টন, গুলিস্তান, যাত্রাবাড়ী, মতিঝিল, কাকরাইল, মগবাজার, হাতিরঝিল, রামপুরা, ধানমন্ডি, মহাখালী, বিমানবন্দর, কুড়িল, বনানী, উত্তরা, বাড্ডা ও কালশী এলাকায় খোঁজ নিয়ে তীব্র যানজটের এমন তথ্য পাওয়া গেছে।

কারওয়ান বাজার মোড়ে যানজটে দাঁড়িয়ে থাকা বিআরটিসি বাসের চালক হুমায়ুন কবির জাগো নিউজকে বলেন, ‘দুপুর ২টার দিকে গুলিস্তান থেকে বাস ছেড়েছি। কারওয়া বাজার মোড় পর্যন্ত আসতে সাড়ে ৪টা বেজে গেছে। যাত্রীরা যানজটের কারণে অতিষ্ঠ। অনেকেই নেমে গেছেন। কেউ কেউ আবার হেঁটে কিছুদূর এগিয়ে আবারও বাসে উঠছেন।’

trafic-2.jpg

বিজয়নগর এলাকায় রিকশাচালক সাবদার আলী বলেন, ‘শাহবাগ থেকে একজন যাত্রী নিয়ে মালিবাগ মোড়ে যাওয়ার কথা। কিন্তু যানজটের কারণে বিজয়নগর মোড়ে এসে যাত্রী অর্ধেক ভাড়া দিয়ে নেমে গেছেন।’

ট্রাফিক পুলিশের রমনা বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) জয়নুল আবেদীন বলেন, ‘অন্য সময়ের তুলনায় গতকাল ও আজ রমনা এলাকায় যানজট বেড়েছে। একইসঙ্গে অফিস শেষ হওয়ার কারণে গাড়ির চাপ বেড়েছে। তাই যানজটের মাত্রাও বেড়েছে। যানজট নিরসনে রোজা রেখেও রোদে দাঁড়িয়ে ট্রাফিক পুলিশ সদস্যরা কাজ করে যাচ্ছেন।’

trafic-2.jpg

জানতে চাইলে ডিএমপি মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ফারুক হোসেন বলেন, ‘ঢাকা শহরের যানজট নিরসন করা পুলিশের একার পক্ষে সম্ভব নয়। আমরা যারা সড়কে চলাচল করি, এ বিষয়ে সবার সহযোগিতা প্রয়োজন। রোজা শুরুর আগে যানজট নিরসনে ১৫টি নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, সেগুলো মেনে চললে যানজট কম হবে।’

টিটি/এএএইচ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।