প্রয়োজন নেই এমন অনেক ওষুধ রোগীদের দেওয়া হয়: স্বাস্থ্যমন্ত্রী

চিকিৎসায় সবচেয়ে বেশি ব্যয় ওষুধে হচ্ছে মন্তব্য করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, যদিও আমাদের দেশে অন্য দেশের তুলনায় ওষুধের দাম কম। তারপরও কেন ওষুধে এত খরচ, এটা আমাদের খুঁজে বের করতে হবে।
তিনি বলেন, আমাদের কাছে অনেক অভিযোগ আসে, রোগীর প্রয়োজন নেই -এরকম অসংখ্য ওষুধ রোগীদের লিখে দেওয়া হয়। এটা বন্ধ করতে হবে।
বুধবার (২৯ মার্চ) দুপুরে রাজধানীর হোটেল রেঁনেসায় আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি। ৫ম স্বাস্থ্য, জনসংখ্যা ও পুষ্টি সেক্টর কর্মসূচির (এইচপিএনএসপি) খসড়া স্ট্যাটেজিক ইনভেস্টমেন্ট প্ল্যান বিষয়ে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
দেশে চিকিৎসার পেছনে রোগীদের খরচ বেড়েছে উল্লেখ করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী চিকিৎসকদের প্রেসক্রিপশনে নজর দেওয়ার নির্দেশনা দেন। তিনি বলেন, চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তারা প্রয়োজনের তুলনায় বেশি ওষুধ লেখেন। এটি আমাদের বন্ধ করতে হবে।
মন্ত্রী বলেন, চিকিৎসা ব্যয় মেটাতে গিয়ে মানুষ দরিদ্র হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু সর্বজনীন স্বাস্থ্যসেবার আওতায় চলে এলে সেটা অনেকাংশেই কমে যাবে।
জাহিদ মালেক বলেন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে কাজ করছি ১০ বছর চলছে, যে কারণে কোথায় কী সমস্যা সব বিষয়ে আমি অবহিত। আমি চেষ্টা করেছি সবাইকে নিয়ে কাজ করতে। আমি যেই কাজ শুরু করেছি, সেটা শেষ করার চেষ্টা করেছি। বর্তমানে যেসব কাজ করা দরকার, সেগুলো চলমান। নতুন নতুন কিছু কাজও হাতে নিয়েছি।
মন্ত্রী বলেন, স্বাস্থ্যসেবার কাজ জাতির পিতা শুরু করেছিলেন, তখন স্বাস্থ্যসেবার বেহাল দশা ছিল। তখন মাতৃ-শিশু মৃত্যু অনেক ছিল, কলেরা হলে গ্রামের পর গ্রাম ছড়িয়ে যেত, অসংখ্য মানুষ মারা যেত। সেখান থেকে দু-তিন বছরে বঙ্গবন্ধু একটা স্ট্রাকচার তৈরি করে গেছেন। পরে শেখ হাসিনার অধীনে আমাদের অনেক অর্জন, যদিও অনেক সমালোচনা আছে।
স্বাস্থ্যসেবায় সফলতা প্রসঙ্গে জাহিদ মালেক বলেন, বাংলাদেশের যত বড় বড় অর্জন আর পুরস্কার আছে, বেশিরভাগই স্বাস্থ্যসেবার জন্য এসেছে। সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী ভ্যাকসিন হিরো হয়েছেন। আগের তুলনায় প্রাইমারি হেলথ কেয়ারে ভালো সেবা দেওয়া হচ্ছে। যে কারণে মাতৃ-শিশু মৃত্যুর হার কমে এসেছে।
তিনি বলেন, প্রতিটি জেলা-উপজেলা হাসপাতালে শয্যা দু-তিনগুণ বেড়েছে। ৯৮ শতাংশ ওষুধ দেশে তৈরি হচ্ছে। ভ্যাকসিন তৈরি করছি। এগুলো বাইরের মানুষ বুঝতে পারে না। মেডিকেলে সিট বেড়েছে, নার্সিংয়ে সিট বেড়েছে।
‘কীভাবে দুর্যোগ মোকাবিলা করতে হয়, করোনা আমাদের শিখিয়ে দিয়ে গেছে। আমাদের চিকিৎসকরা বড় একটা প্রশিক্ষণ পেয়েছেন। করোনায় ১০ হাজার ডাক্তার, ১৫ হাজার নার্স নিয়োগ হয়েছে। তারপরও উন্নতির কোনো শেষ নেই।’
মন্ত্রী উল্লেখ করেন, আমাদের ১৭ কোটি জনসংখ্যা। যতই শয্যা বাড়াই, কম পড়ে যাচ্ছে। সোহরাওয়ার্দী হাসপাতাল, পঙ্গু হাসপাতাল, মেন্টাল হাসপাতালে শয্যা প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে, তারপরও আমরা জায়গা দিতে পারছি না। কারণ স্বাস্থ্যসেবায় মানুষের আস্থা বাড়ছে, তারা হাসপাতালে আসছে।
সবশেষ উপস্থিত সবাইকে রমজানের শুভেচ্ছা জানিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, রোজার মাস শুরু হয়েছে, সবাইকে রমজানের শুভেচ্ছা। এই মাসের পবিত্রতা বজায় রেখে যেন আমরা কাজ করতে পারি। যেন দেশের সুখ, সমৃদ্ধি বজায় থাকে এজন্য সবাই দোয়া করবো।
এএএম/কেএসআর/এএসএম