জমে উঠেছে রংপুরের হারাগাছ পৌরসভা নির্বাচন

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি রংপুর
প্রকাশিত: ১২:২৮ পিএম, ১২ মার্চ ২০১৬

রংপুরে কাউনিয়া উপজেলার হারাগাছ পৌরসভার নির্বাচনকে ঘিরে জমে উঠেছে প্রার্থীদের প্রচার-প্রচারণা। ৫ মার্চ প্রতিক বরাদ্দ পাওয়ার পর পরই কোমর বেঁধে মাঠে নেমেছেন প্রার্থীরা। দলীয় প্রতীকে নির্বাচন হওয়ায় এবারে ভিন্ন আমেজ সৃষ্টি হয়েছে হারাগাছ এলাকায়। রাজনৈতিক দলের নেতা কর্মীরা দলীয় মনোমালিন্য ভুলে গিয়ে নিজ নিজ দলের প্রার্থীদের সাথে কাজ শুরু করেছেন।  আগামী ২০ মার্চ অনুষ্ঠিত হবে হারগাছ পৌরসভার নির্বাচন।

এবারে হারাগাছ পৌরসভায় মেয়র পদে ৪ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এরা হলেন আওয়ামী মনোনীত প্রার্থী হাকিবুর রহমান মাস্টার, বিএনপির মোনায়েম হোসেন ফারুক, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের জাহিদ হোসেন এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী বর্তমান মেয়র সাদাকাত হোসন ঝন্টু।
 
নির্বাচনী এলাকা ঘুরে স্থানীয় ভোটারদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, বিড়ি শিল্প খ্যাত হারাগাছে মূলত বিড়ি মহাজন কেন্দ্রিক নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। বিড়ি কারখানার মালিকদের সমর্থনের উপর সাধারণ ভোটাররা অনেকটাই নির্ভর করেন। সেই সাথে (হানাফি এবং আহলে হাদিস) ধর্মীয় একটি বিষয় ভোটের সময় কাজ করে। এছাড়াও টাকার ছড়াছড়ি তো রয়েছেই।

বর্তমানে ভোটারদের মাঝে তিন প্রার্থীকে নিয়েই বেশি আলোচনা হচ্ছে। বিএনপির সাবেক এমপি শিল্পপতি আলহাজ্ব রহিম উদ্দিন ভরসা এবং জাপার সাবেক এমপি করিম উদ্দিন ভরসার ভাগিনা মোনায়েম হোসেন ফারুক ধানের শীষ নিয়ে শক্ত অবস্থানে রয়েছেন। পাশাপাশি বর্তমান এমপি বীর মুক্তিযোদ্ধা টিপু মুনশির নির্বাচনি এলাকায় আ.লীগের হাকিবুর রহমান মাস্টার নৌকা প্রতীক নিয়ে এবং দীর্ঘদিন শিক্ষকতা পেশায় নিয়োজিত থাকায় তারও জনপ্রিয়তা রয়েছে অনেকটাই।

অপরদিকে বর্তমান মেয়র সাদাকাত হোসেন ঝন্টু মোবাইল প্রতীক নিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। গত মেয়াদে এলাকার সার্বিক উন্নয়নের বার্তা নিয়ে তিনিও ছুটছেন ভোটারের দ্বারে দ্বারে। মূলত এই তিন হেভিওয়েট প্রার্থীর মধ্যেই হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে বলে মনে করছেন সাধারণ ভোটাররা।
 
হারাগাছ পৌর এলাকার বাসিন্দা জুবায়ের আলম জুবেল জাগো নিউজকে বলেন, ভোটের সমিকরণে ঝন্টুর একটা রিজার্ভ ভোট আছে কিন্তু দলীয় প্রতীকে ভোট হওয়ায় তা ভেস্তে যেতে পারে।

ওই এলাকার ভোটার আব্দুল হক জাগো নিউজকে বলেন, হারাগাছে ভরসা পরিবারের একটা ঐতিহ্য রয়েছে। এ কারণে বিএনপির রিজার্ভ ভোটের পাশাপাশি জাপাসহ সাধারণ ভোটারদের মন জয়ে আপ্রাণ চেষ্টা চালাচ্ছেন মোনায়েম হোসেন ফারুক।

এদিক থেকে পিছিয়ে নেই আ.লীগ প্রার্থী হাবিকুর রহমান মাস্টার। হারাগাছের অনেক প্রতিষ্ঠিত বিড়ি কারখানার মালিক ছাড়াও বর্তমান সংসদ সদস্য টিপু মুনশী এমপির সমর্থন এবং শিক্ষকতা পেশাকে কাজে লাগিয়ে অনেকটাই শক্ত অবস্থান তৈরি করেছেন হাকিবুর রহমান।
 
স্থানীয় ভোটাররা জানান, হারাগাছে ভোটের হাওয়া বদলে যায় ভোটের আগের দিন ও ভোটের রাতে। শেষ পর্যন্ত কার গলায় বিজয়ের মালা উঠবে তা নিশ্চিত করে বলা না গেলেও লড়াইটা হাড্ডাহাড্ডি হবেই বলে মনে করছেন তারা।

জেলা নির্বাচন কার্যালয় সূত্র মতে, হারাগাছ পৌরসভায় মোট ভোটার ৪৬ হাজার ২০৫ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ২২ হাজার ২৮৭ এবং নারী ভোটার রয়েছেন ২৩ হাজার ৯১৮ জন। মোট ২০টি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।

এদিকে হারাগাছে বিগত নির্বচনে ভোট কেন্দ্র দখল বা কারচুপির কোনো ঘটনা ঘটেনি। এবারও হবে না, নির্বাচন সুষ্ঠু ও অবাধ  হবে বলেই মনে করছেন জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা জি এম সাহাতাব উদ্দিন।
 
জিতু কবীর/এফএ/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।