‘ডিজিটাল মাধ্যম ব্যবহারে সুস্থ সাইবার সংস্কৃতি গড়ে তুলতে হবে’

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০২:৪৯ পিএম, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩

‘ডিজিটাল মাধ্যমের ব্যবহার বেড়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সাইবার অপরাধ বেড়েছে। বিদেশি প্রযুক্তি ব্যবহারের ফলে সাইবার নিরাপত্তার ঝুঁকিও বাড়ছে দিনকে দিন। তাই ডিজিটাল মাধ্যমে কীভাবে চলতে হবে সেই সংস্কৃতি গড়ে তুলতে হবে। ডিজিটাল সুরক্ষার বিষয়টিকে গুরুত্ব দিতে হবে। সে লক্ষ্যে দেশীয় প্রযুক্তি তৈরি করে তার ব্যবহার বাড়াতে হবে।’

শনিবার (২৩ সেপ্টেম্বর) সকালে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির নসরুল হামিদ মিলনায়তনে অক্টোবর মাসব্যাপী সাইবার নিরাপত্তা সচেতনতা কর্মসূচি ঘোষণা উপলক্ষে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন বক্তারা।

আমাদের বিশ্বকে সুরক্ষিত করি-এই প্রতিপাদ্যে সাইবার নিরাপত্তা সচেতনতাবিষয়ক জাতীয় কমিটির (এনসিসি) সারাদেশে শুরু হচ্ছে অষ্টম সাইবার নিরাপত্তা সচেতনতার মাস, অক্টোবরের কর্মসূচি।

সংবাদ সম্মেলনে সাইবার নিরাপত্তা সচেতনতাবিষয়ক জাতীয় কমিটির (এনসিসি) সদস্য ফাস্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক লিমিটেডের প্রধান প্রযুক্তি কর্মকর্তা প্রকৌশলী মো. মুশফিকুর রহমান বলেন, বৈশ্বিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, নতুন ধরনের সাইবার অপরাধ বেড়েছে। আর এটা ঘটছে অসচেতনতার কারণে। এ কারণেই আমরা ডিজিটাল ডিভাইস ব্যবহার এবং অনলাইনের বাসিন্দা হতে কিংবা ডিজিটাল স্পেসে কীভাবে চলতে হবে সেই সংস্কৃতি গড়ে তুলতে কাজ করবো। এ জন্য আমরা চাই এই মাসটি জাতীয়ভাবে পালন করা হোক। আমরা সম্মিলিতভাবে ডিজিটাল হাইজিন গড়ে তুলি।

তিনি বলেন, সোশ্যাল অ্যাপকে ব্যবহার করে অনেকেই প্রতারণা করে। সেকারণে প্রয়োজন আমাদের সচেতনতা। এই জায়গায় আমাদের অনেক ঘাটতি রয়েছে।

মোবাইল ফোন অপারেটর রবির সাইবার সিকিউটি অ্যান্ড প্রাইভেসি বিভাগের ভাইস প্রেসিডেন্ট সঞ্জয় চক্রবর্তী বলেন, এক বছরে রবির ২০ শতাংশ ইন্টারনেট ব্যবহারকারী বেড়েছে। ১৮ কোটির বেশি মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিস (এমএফএস) অ্যাকাউন্ট আছে। জিমেইলে আসা প্রায় দুই শতাংশ মেইল ফিশিং। আর এই ফিশিং এর মাধ্যমেই ডিজিটাল প্রতারণা ও হামলা বেশি হয়।

তিনি আরও বলেন, একটু ভিন্নভাবে চিন্তা করলেই আমরা এর গুরুত্ব বুঝতে পারি। পাসওয়ার্ড বা সচেতনতা হচ্ছে গাড়ির ব্রেকের মতো। ব্রেক করতে হয় কেবল নিরাপদ থাকার জন্যই নয়, গতি বাড়াতেও। ফাস্ট মুভ করতে হলেই ডিজিটাল সিকিউরিটি দরকার।

আরও পড়ুন> যা আছে সাইবার নিরাপত্তা আইনে

ইন্টারনেট সোসাইটি বাংলাদেশ চ্যাপ্টারের সাধারণ সম্পাদক কাওছার উদ্দিন বলেন, কোভিডের সময়ে আমরা শিশু ও এমন কিছু ব্যক্তিকে ইন্টারনেট বা ডিজটাল ডিভাইসে যুক্ত করেছি যা আরো অনেক পরে হতো। কিন্তু তাদের হাতে ডিজিটাল ডিভাইস তুলে দিলেও আমরা এগুলো ব্যবহারে সচেতন করতে পারিনি। তাছাড়াও আমাদের শিক্ষিত মানুষরাও এ বিষয়ে অসচেতন। আমার জানা মতে, ‘খোদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেয়েরা প্রেমিকের সঙ্গে বিশ্বাসের প্রশ্নে ফেসবুকের পাসওয়ার্ড শেয়ার করেন। এমনকি একজন পুরুষ শিক্ষকও এভাবে আক্রান্ত হয়েছেন।’

তিনি বলেন, আমাদের ভুলে গেলে চলবে না পাসওয়ার্ড হচ্ছে টুথব্রাশের মতো। এটি সবাই ব্যবহার করতে পারে না। তাই আমাদের এসব বিষয়ে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিতে হবে সচেতনতায়।

সাইবার নিরাপত্তা সচেতনতাবিষয়ক জাতীয় জাতীয় কমিটির সদস্য মোহাম্মাদ আবুল হাসান বলেন, করোনাকালীন আমরা শিশুদের ইন্টারনেট ও ডিজিটাল ডিভাইস দিয়েছি কিন্তু তাদের এর ব্যবহার ও নিরাপদ থাকার কৌশল শেখাইনি। আবার নিজেরাও অসতর্ক। তাই সবাইকে সচেতন করেতই এই ক্যাম্পেইন।

বাংলাদেশ সিস্টেম অ্যাডমিনিস্ট্রেট ফোরামের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মাদ আশফাকুর রহমান জানান, এই ক্যাম্পেইনে যুক্ত হয়ে তার সংগঠন এন্টারপ্রাইজ পর্যায়ে আইওটি ডিভাইস ও সিস্টেমের নিরাপত্তায় বিভিন্ন সচেতনতামূলক প্যাকেজ তৈরি করবে।

আরও পড়ুন>সাইবার জগতে মানুষের প্রবেশ বাড়ায় ঝুঁকিও বাড়ছে

বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস (ব্লাস্ট) এর পরিচালক (সালিস এবং প্রশিক্ষণ) তাপসী রাবেয়া বলেন, শিশুর হাতে ডিভাইস তুলে দিলেও তাদের সুরক্ষার বিষয় জানা নেই, তাদের কেউ কেউ অপরাধ করছে, কেউবা আক্রান্ত হচ্ছে। তাই নারী ও শিশুদের সচেতন করতে গুরুত্ব দিতে হবে।

সাইবার নিরাপত্তা সচেতনতাবিষয়ক জাতীয় কমিটির (এনসিসি) সভাপতি কাজী মুস্তাফিজের সঞ্চালনায় সংবাদ সম্মেলনে মাসব্যাপী নানা কর্মসূচির ঘোষণা করা হয়। তরুণ ও শিশুদেরকে টার্গেট করে বেসরকারি খাতের অংশীজনদের নিয়ে আগামী অক্টোবর মাস, সাইবার নিরাপত্তা সচেতনতার মাস পালন করবে সাইবার সিকিউরিটি অ্যাওয়ারনেস ফাউন্ডেশন।

আরএসএম/এসএনআর/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।