‘ইটিপি বন্ধ রেখে বাইরে বর্জ্য ফেলে গাড়ি-বাড়ি কেনেন শিল্পপতিরা’

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৯:২০ পিএম, ০২ অক্টোবর ২০২৩

‘তরল বর্জ্য পরিশোধন প্ল্যান্ট (ইটিপি) বন্ধ রেখে বিষাক্ত শিল্পবর্জ্য নদী-কৃষি জমিতে ফেলে খরচ কমাতে চান শিল্প-কারখানার মালিকরা। সেই টাকা বাঁচিয়ে তাদের অনেকে বাড়ি-গাড়ি কেনেন।’

‘পরিবেশের ওপর ইটিপি পরিচালনার প্রভাব’ শীর্ষক সেমিনারে সভাপতির বক্তব্যে এসব কথা বলেন জাতীয় বিজ্ঞান জাদুঘরের মহাপরিচালক (ডিজি) মোহাম্মাদ মুনীর চৌধুরী।

সোমবার (২ অক্টোবর) দুপুরে জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি জাদুঘরে এ সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (ডুয়েট) কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ এ সেমিনারের আয়োজন করে। বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা সেমিনারে অংশ নেন।

মোহাম্মাদ মুনীর চৌধুরী বলেন, বিষাক্ত বর্জ্য বাইরে যত্রত্র ফেলার মতো অপরাধ বন্ধে প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা ও আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার প্রয়োজন। কিন্তু আমাদের বহু মেধাবী প্রকৌশলী করপোরেট কোম্পানিতে চাকরি করেন। তারা অনেকটা বাধ্য হয়ে মালিকদের অনৈতিক কর্মকাণ্ডের দাসে পরিণত হয়েছেন। বিবেক বিসর্জন দিয়ে ইটিপি চালানো বন্ধ রাখছেন তারা। এমনকি ত্রুটিপূর্ণ ইআইএ রিপোর্ট দাখিল করে পরিবেশ অধিদপ্তর থেকে ছাড়পত্রও গ্রহণ করছেন।

waste-2.jpg

তিনি বলেন, ইটিপি বন্ধ রেখে বিষাক্ত বর্জ্য ফেলে নদ-নদী ও কৃষি জমি ধ্বংস করা মারাত্মক অপরাধ। দূষণজনিত মানুষ ও জীববৈচিত্র্যের ক্ষতির জন্য এসব অপরাধীকে মহান স্রষ্টার বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড়াতেই হবে।

আরও পড়ুন>> উন্নয়নে বেড়েছে ভোগের প্রবণতা, ভোগে বেড়েছে বর্জ্যের পরিমাণ: তাজুল

শিল্প-কারখানায় বর্জ্য পরিশোধন যন্ত্র সঠিকভাবে পরিচালিত হচ্ছে কি না, তা সুষ্ঠু মনিটরিংয়ের আওতায় আনা উচিত। এজন্য কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ভিত্তিক আধুনিক প্রযুক্তির প্রয়োগ অপরিহার্য বলেও মনে করেন বিজ্ঞান জাদুঘরের মহাপরিচালক।

পরিবেশদূষণ বিশাল এক অপরাধের জগৎ উল্লেখ করে তিনি বলেন, মানবীয় শক্তি দিয়ে এ অপরাধ ঠেকানো সম্ভব নয়। ড্রোন ও সেন্সর ব্যবহার করে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কার্যক্রম মনিটরিং করে শাস্তির ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। শুধু জরিমানা নয়, জরিমানার সমান্তরালে আইনের আওতায় সাময়িক মেয়াদে কারখানা বন্ধ রাখতে হবে।

মুনীর চৌধুরী আরও বলেন, প্রকৌশল বিষয়ে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের ইটিপি পরিচালনাভিত্তিক বিশেষ প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে। তাদের নিয়মিত কারখানা পরিদর্শন ও নদ-নদী পর্যবেক্ষণের ব্যবস্থা করিয়ে পরিবেশের প্রতি মমত্ববোধ ও কর্তব্যবোধ জাগ্রত করতে হবে। যে যে অপরাধই করুক না কেন, প্রত্যেককেই তার কাজের জন্য মহান স্রষ্টার কাছে জবাবদিহি করতে হবে।

সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন পরিবেশ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আবুল কালাম আজাদ। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ডুয়েটের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. ওবায়দুর রহমান, বিজ্ঞান জাদুঘরের সহকারী কিউরেটর মো. তৌহিদুল হাসান প্রমুখ।

এএএইচ/ইএ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।