স্বাস্থ্যখাতের সেই মিঠুর বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা চায় দুদক

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৪:০৯ পিএম, ১৯ অক্টোবর ২০২৩

স্বাস্থ্যখাতে আলোচিত ও প্রভাবশালী ঠিকাদার মোতাজ্জেরুল ইসলাম ওরফে মিঠুর ৭৩ কোটি ৭৪ লাখ ৭১ হাজার ৭৩৮ টাকার সম্পদ জব্দ ও তার বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আবেদন করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

বুধবার (১৮ অক্টোবর) দুদকের প্রধান কার্যালয় থেকে এ বিষয়ে পৃথক আবেদন সংশ্লিষ্ট দপ্তরে পাঠানো হয়েছে। কমিশনের অনুমোদনক্রমে অনুসন্ধানকারী টিমের প্রধান সংস্থাটির উপ-পরিচালক মো. মশিউর রহমান এ আবেদন করেছেন।

দুদক সূত্রে জানা যায়, আদালতের নির্দেশে অভিযুক্ত ঠিকাদারের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করে দুদক। মিঠুর বিরুদ্ধে মূলত সিন্ডিকেট করে অতি উচ্চমূল্য দেখিয়ে নিম্নমানের মালামাল সরবরাহ করার অভিযোগ রয়েছে। পাশাপাশি মালামাল সরবরাহ না করেই বিল উত্তোলন, অপ্রয়োজনীয় মালামাল সরবরাহের মাধ্যমে বিপুল সম্পদের মালিক হয়েছেন স্বাস্থ্যের এ ঠিকাদার, এমন অভিযোগও রয়েছে।

মোতাজ্জেরুল ইসলাম ওরফে মিঠু ঢাকাসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে ও দেশের বাইরে আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়ার ও সিঙ্গাপুরসহ বিভিন্ন দেশে বিপুল অর্থপাচার করে অবৈধ সম্পদের মালিক হয়েছেন এমন তথ্য-প্রমাণ রয়েছে দুদকের কাছে। তার বিরুদ্ধে প্রাথমিকভাবে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল, দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, বরিশাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, মুগদা জেনারেল হাসপাতাল, জেনারেল হাসপাতাল মৌলভীবাজার, জেনারেল হাসপাতাল গোপালগঞ্জ, আই এইচ টি সিলেট, ঢাকা ডেন্টাল কলেজ, ঢাকা ডেন্টাল হাসপাতাল ও সিএম এসডিতে ঠিকাদারির নামে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির প্রমাণ পেয়েছে সংস্থাটি।

সিন্ডিকেট করে বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে স্বাস্থ্যখাতে মালামাল সরবরাহ উন্নয়ন কাজের নামে প্রভাব বিস্তার করে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ সংক্রান্ত বিষয়ে এরই মধ্যে অনুসন্ধান শুরু করেছে কমিশন।

মিঠুর ক্রোকের আবেদন করা সম্পদের মধ্যে রয়েছে বনানী ডিওএইচএসে পাঁচ কাঠা জমি ও ৫ তলা বাড়ি, উত্তরা ৬ নম্বর সেক্টরে ৫ দশমিক ২৫ কাঠা জমি ও ৪ তলা বাড়ি, উত্তরা ৫ নম্বর সেক্টরে ৬ তলা বাড়ি, বনানীতে ১৮২৫ বর্গফুটের অ্যাপার্টমেন্ট, গুলশানে ৩৭২৫ বর্গফুটের ফ্ল্যাট ও দুটি কার পার্কিং, দক্ষিণ কল্যাণপুরে ১৫৮৩ বর্গফুটের ফ্ল্যাট এবং প্রগতি সরণি গুলশানে ৫৮৫ বর্গফুটের ফ্ল্যাটসহ বিপুল সম্পদ।

দুদক সূত্রে আরও জানা যায়, সাউথইস্ট ব্যাংক লিমিটেড ও এবি ব্যাংকসহ বিভিন্ন ব্যাংকে শত কোটি টাকার সম্পদ রয়েছে তার নামে। এছাড়া আমেরিকা সিঙ্গাপুর, অস্ট্রেলিয়াসহ বিভিন্ন দেশে বিপুল সম্পদের মালিক হয়েছেন তিনি।

স্বাস্থ্যখাতে সব ধরনের টেন্ডার ও কেনাকাটায় একচ্ছত্র আধিপত্য কায়েমের অভিযোগ আছে মিঠুর বিরুদ্ধে। আমেরিকাসহ কয়েকটি দেশে বিপুল সম্পদ রয়েছে তার। তার বিরুদ্ধে অর্থপাচারের একটি অভিযোগে দুদকের অনুসন্ধান চলমান।

২০২০ সালের ৬ আগস্ট মাস্ক-পিপিই কেনায় দুর্নীতির অনুসন্ধানে মোতাজ্জেরুল ইসলাম মিঠুকে দুদকে তলব করা হলেও অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে হাজির হননি তিনি।

এসএম/এমকেআর/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।