সভাজুড়ে ক্ষোভ

ব্যাটারিচালিত রিকশা ও হকারদের নিয়ে মাথাব্যথা চসিকের

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক চট্টগ্রাম
প্রকাশিত: ১১:০৭ এএম, ৩০ অক্টোবর ২০২৩

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) সাধারণ সভাজুড়ে ব্যাটারিচালিত রিকশা ও অবৈধ হকারদের নিয়ে ক্ষোভ জানিয়েছেন জনপ্রতিনিধিরা। রোববার (২৯ অক্টোবর) নগরীর থিয়েটার ইন্সটিটিউটে সাধারণ সভা হয়।

চসিকের নির্বাচিত ষষ্ঠ পরিষদের ৩৩তম সাধারণ সভায় মেয়র, কাউন্সিলর ও কর্মকর্তারা বক্তব্য রাখেন। দ্রুত ব্যাটারিচালিত রিকশা বন্ধে এবং অবৈধ হকারদের দৌরাত্ম্য রোধে পদক্ষেপ গ্রহণের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করেন তারা।

হকারদের প্রসঙ্গে মেয়র বলেন, হকার সবসময় ছিল। কিন্তু এখন এমন একটা অবস্থা তৈরি হয়েছে যেন ফুটপাতগুলো টাইলস করে দেওয়াই হয়েছে তাদের ব্যবসা করার জন্য। আর রাস্তায় ভ্যান গাড়ির কারণে প্রচণ্ড জ্যাম হচ্ছে। হকারদের জন্য শিক্ষার্থীরা, বিশেষ করে মেয়েরা স্কুলেও ঢুকতে পারে না। অনেকে হকার পুনর্বাসনের কথা বলেন। পূর্বে হকার পুনর্বাসন কোনো সুফল বয়ে আনেনি। এর আগে হকারদের জহুর হকার মার্কেটে পুনর্বাসন করা হয়। কিন্তু দোকান বরাদ্দ পেয়েই অনেকে দোকান বিক্রি করে আবারো ফুটপাত দখল করে ব্যবসা শুরু করেন। একারণে, শুক্র ও শনিবার আগ্রাবাদসহ বিভিন্ন এলাকায় উপযুক্ত স্থানে হলিডে মার্কেট চালু করার পক্ষে আমি।

পে-পার্কিং বিষয়ে মেয়র বলেন, অভিযোগ পেয়েছি বেশ কিছু বড় মার্কেট কাস্টমারদের পার্কিং ব্যবহার করতে না দেওয়ায় গাড়ি রাস্তায় পার্কিং করে। ফলে প্রচণ্ড জ্যাম হচ্ছে। ট্রাফিক বিভাগ ও চসিকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বলবো এসব মার্কেটের কর্তৃপক্ষকে আইনের আওতায় আনতে। এরই মধ্যে ডিসি ট্রাফিক আমার সঙ্গে দেখা করেছেন। আমরা ঠিক করেছি, চসিক ও ট্রাফিক বিভাগ এক সঙ্গে পে-পার্কিং বাস্তবায়নে কাজ করবে এবং নগরীর ট্রাফিক ব্যবস্থাপনাকে ঢেলে সাজাবে।

ব্যাটারিচালিত রিকশা প্রসঙ্গে মেয়র বলেন, ব্যাটারিচালিত রিকশা এখন আতঙ্কের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এগুলোর ব্রেক অত শক্তিশালী না, আবার ছোট বাচ্চারাও চালায় অনেক সময়। সঙ্গে বিদ্যুৎ চুরি ও অপচয়ের বিষয়টি তো আছেই। এজন্য সোলার রিকশা চালু করতে হবে।

চসিক জনপ্রতিনিধি এবং ট্রাফিক বিভাগ সম্মিলিতভাবে কাজ করে হকারদের অবৈধ দখল ও ব্যাটারি রিকশা কমানো সম্ভব বলে মন্তব্য করেন সিএমপির অতিরিক্ত উপ কমিশনার মো. কাজী হুমায়ুন রশীদ। তিনি বলেন, ষোলশহর দুই নম্বর গেট এবং জিইসি খুবই জনবহুল এলাকা। এদুটি এলাকায় ফুটওভার ব্রিজসহ শহরজুড়ে জেব্রা ক্রসিং বাড়াতে পারলে সড়ক দুর্ঘটনা কমানো সম্ভব।

সুপেয় জলের ব্যবস্থা করতে ওয়াসার প্রতি আহ্বান জানিয়ে মেয়র বলেন, পতেঙ্গা এলাকায় লবণাক্ততার জন্য পানি খাওয়া তো দূরে থাক, সে পানি দিয়ে গোসলও করা যাচ্ছে না। আবার একসময়ের সুপেয় পানির উৎস পুকুর-দীঘিগুলোও নেই। এজন্য ওয়াসাকে জলাবায়ু পরিবর্তন ও নগরীতে দ্রুত জনসংখ্যা বৃদ্ধির বিষয়টি মাথায় রেখে সুপেয় পানি সরবরাহের সক্ষমতা বাড়াতে হবে। আমি কাউন্সিলরদের বলবো, আপনাদের এলাকায় যেসব নালা-কালভার্টের নীচে ওয়াসা-টিএন্ডটিসহ বিভিন্ন সংস্থার পাইপ গিয়ে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হচ্ছে সেগুলো চিহ্নিত করে ওয়াসাসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরের সঙ্গে যোগাযোগ করে সেগুলো অপসারণ করুন।

জবাবে চট্টগ্রাম ওয়াসার নির্বাহী প্রকৌশলী আবদুর রউফ জানান, সুপেয় জল সরবরাহে সক্ষমতা বাড়াতে ওয়াসা সচেষ্ট আছে। চসিকের সাধারণ সভায় উঠে আসা বিষয়গুলো দ্রুত সমাধানে কর্তৃপক্ষকে অবহিত করবো। অনুমতি ছাড়া সড়ক কাটা ঠিকাদার ও গ্রাহকদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। ফিরিঙ্গিবাজারসহ বিভিন্ন এলাকায় ওয়াসার পাইপ লাইনের লিকেজ মেরামতের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।

ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে চলমান কার্যক্রম প্রসঙ্গে মেয়র বলেন, মশা নিধনের পর্যাপ্ত মেডিসিন ক্রয় করা হয়েছে, বাড়ানো হচ্ছে জনবল। শুষ্ক মৌসুমে ৬ মাস কাজ করলে আগামী বছর ভালো ফল পাওয়া যাবে বলে আশা মেয়রের। সভায় চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলাম, প্যানেল মেয়র, কাউন্সিলরসহ চসিকের বিভাগীয় ও শাখা প্রধান এবং নগরীর বিভিন্ন সরকারি সংস্থার প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

ইকবাল হোসাইন/এসএনআর/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।