ওয়েবিনারে বক্তারা

সহিংসতা-ভুল তথ্য মোকাবিলায় আন্তর্জাতিক মিত্রদের পাশে থাকা উচিত

জাগো নিউজ ডেস্ক
জাগো নিউজ ডেস্ক জাগো নিউজ ডেস্ক
প্রকাশিত: ০২:৩৯ পিএম, ০৮ নভেম্বর ২০২৩

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে চলমান অর্থনৈতিক উন্নয়নের পথে সহিংসতা ও ভুল তথ্য বা গুজব দুটি প্রধান বাধা। এই সংকট মোকাবিলায় আন্তর্জাতিক মিত্রদের বাংলাদেশের পাশে থাকা উচিত। ‘সহিংসতা ও ভুল তথ্য: বাংলাদেশে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির প্রতিবন্ধকতা’ শীর্ষক ওয়েবিনারে এসব মন্তব্য করেছেন বক্তারা।

বক্তারা বাংলাদেশের অগ্রগতি, বিশেষ করে পদ্মা সেতু, কর্ণফুলী টানেল এবং মেট্রোরেলের মতো বড় অবকাঠামোগত উন্নয়নের (মেগা প্রকল্প) কথা উল্লেখ করে টানা ১৫ বছর সরকারের ধারাবাহিকতাকে কৃতিত্ব দেন।

ওয়েবিনার আলোচনায় সভাপতিত্ব করেন কাউন্সিলম্যান, মুক্তিযোদ্ধা ও লেখক ড. নুরুন নবী। এতে অংশ নেন অধ্যাপক আবদুর চৌধুরী, অধ্যাপক এ বি এম নাসির, নিরাপত্তা বিশ্লেষক ক্রিস ব্ল্যাকবার্ন, রাজনৈতিক বিশ্লেষক সেথ ওল্ডমিক্সন এবং জ্যেষ্ঠ গবেষক ড. মাজহারুল ইসলাম রানা।

বক্তারা লাখ লাখ মানুষকে দারিদ্র্য থেকে বের করে আনতে মুক্তিযোদ্ধা, বয়স্ক ও প্রতিবন্ধীদের উপবৃত্তিসহ সামাজিক সেবা প্রদানের মাধ্যমে সামাজিক নিরাপত্তাবেষ্টনী সম্প্রসারণে বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য অগ্রগতির কথা উল্লেখ করেন। এছাড়া বিএনপি-জামায়াত নেতৃত্বাধীন বিরোধী দল নৈরাজ্য ও সহিংসতা সৃষ্টি না করলে বাংলাদেশ আরও অগ্রগতি অর্জন করতে পারে বলেও দাবি করেন তারা।

তাদের মতে, গত ২৮ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দক্ষিণ এশিয়ার প্রথম নদীর তলদেশে তৈরি টানেল উদ্বোধনের দিন বিএনপি-জামায়াত ঢাকায় সরকারবিরোধী সমাবেশের আয়োজন করে, সহিংসতা চালায়, একজন পুলিশ সদস্যকে হত্যা করে, হাসপাতালে বেশ কয়েকটি বাস ও অ্যাম্বুলেন্স জ্বালিয়ে দেয়, প্রধান বিচারপতির বাড়িতে হামলা চালায় এবং বেশ কয়েকজন সাংবাদিককে আহত করে।

বাংলাদেশে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের জন্য বিরোধী দলগুলোর দাবির কথা উল্লেখ করে বক্তারা প্রশ্ন দেন, কেন তারা অসাংবিধানিক কিছু দাবি করেছে? তারা সংবিধানের কথা উল্লেখ করে জানান, নির্বাচন কমিশনের তত্ত্বাবধানেই নির্বাচন হওয়া উচিত।

আলোচনায় অংশ নিয়ে অধ্যাপক আবদুর চৌধুরী বলেন, গোল্ডম্যান স্যাকস অ্যান্ড চেজ’ বাংলাদেশকে বিশ্বের পাঁচটি উদীয়মান অর্থনীতির একটি হিসেবে চিহ্নিত করেছে। ১৯৭১ সালে যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ থেকে এ পর্যায়ে উঠে আসা এক আশ্চর্যজনক অগ্রগতি। বাংলাদেশ ২০৩১ সালের মধ্যে উচ্চ মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হওয়ার পথে রয়েছে। বাংলাদেশ কাজ করছে এর বিশাল মানবসম্পদ থেকে দক্ষ শ্রমশক্তি নিয়ে। তিনি বাংলাদেশে অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, বিশেষ করে ধারাবাহিক ও বৈচিত্র্যময় খাতে বিদেশি বিনিয়োগের পক্ষে মত দেন।

ক্রিস ব্ল্যাকবার্ন ইন্টারন্যাশনাল রিপাবলিকান ইনস্টিটিউটের (আইআরআই) সাম্প্রতিক এক জরিপের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন, বর্তমান সব অর্থনৈতিক ইস্যু সত্ত্বেও শেখ হাসিনার ৭০ শতাংশ অনুমোদন রেটিং রয়েছে। সম্প্রতি ফরাসি প্রেসিডেন্ট বলেছেন, ধর্মীয় মৌলবাদের বিরুদ্ধে জোরালোভাবে লড়াইয়ে বাংলাদেশের অব্যাহত সমর্থনের কারণে ফ্রান্স বাংলাদেশে তৃতীয় ধারাবাহিকতাকে সমর্থন করবে।

ব্ল্যাকবার্ন আরও উল্লেখ করেন, জামায়াত-বিএনপি নেতৃত্বাধীন একচেটিয়া ভুল তথ্য বাংলাদেশের অর্থনীতিতে প্রভাব ফেলে। তাই ইউরোপীয় ও আমেরিকান উভয় অংশীদারদেরই বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ভুল তথ্য প্রচারের বিরুদ্ধে লড়াই করতে এগিয়ে আসা উচিত।

ড. মাজহারুল ইসলাম বাংলাদেশে ভুল তথ্য ও ভুল তথ্যের প্রভাব এবং এটি কীভাবে সামাজিক-রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতাকে প্রভাবিত করতে পারে, সে সম্পর্কে আলোচনা করেন।

তিনি মনে করেন, ২০২৩ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর ইইউ পার্লামেন্টে অধিকারের মামলা নিয়ে রেজল্যুশন পাস এবং ২৮ অক্টোবর বাংলাদেশে বিএনপির সহিংসতা নিয়ে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের কার্যালয় থেকে ৩১ অক্টোবরের প্রেস ব্রিফিং নোটগুলো ভুল তথ্যের ফসল।

তিনি বলেন, ২০২৩ সালের ২৮ অক্টোবর বিএনপি-জামায়াতের দেশব্যাপী আন্দোলন কর্মসূচি শুরু হওয়ার পর থেকে একই ধরনের সহিংসতা পুনরায় দেখা দিয়েছে।

সেথ ওল্ডমিক্সন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি গবেষণার উদ্ধৃতি দিয়ে সতর্ক করে দিয়ে বলেন, সহিংস চরমপন্থিরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করে বাংলাদেশে সহিংসতা উসকে দিতে বেশ সক্রিয়।

এমআরএম/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।