শুক্রবার বৃষ্টি কমার আভাস, জেঁকে বসবে শীত
শুক্রবার (৮ ডিসেম্বর) দুপুরের পর থেকে সারাদেশ থেকে বৃষ্টি বিদায় নিতে পারে বলে জানিয়েছেন আবহাওয়াবিদরা। আগামী কয়েকদিন রাতের তাপমাত্রা ক্রমে কমে শীত জেঁকে বসতে পারে বলেও জানিয়েছেন তারা।
বৃহস্পতিবার (৭ ডিসেম্বর) প্রায় সারাদেশেই বৃষ্টি হয়েছে। বুধবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় সবচেয়ে বেশি ৯৬ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে যশোরে। সারাদেশে আবহাওয়া অধিদপ্তরের ৪৪টি কেন্দ্রের মধ্যে তেঁতুলিয়া ও খেপুপাড়া ছাড়া সব জায়গায় বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।
গত রাত থেকে ঢাকায় থেমে থেমে বৃষ্টি হচ্ছে। বৃহস্পতিবার রাত ৮টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ঢাকায় গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হচ্ছিল। গত ২৪ ঘণ্টায় ঢাকায় ৪৪ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া বিভাগ।
একদিকে অবরোধে, অন্যদিকে রাজধানীতে দিনভর বৃষ্টির কারণে ভোগান্তির শেষ ছিল না নগরবাসীর। সকালে বৃষ্টির কারণে ভোগান্তিতে পড়ে অফিসমুখী মানুষ। কষ্ট হয়েছে শ্রমজীবী মানুষেরও। বিকেলে অফিসে শেষে ঘরমুখী মানুষও দুর্ভোগ পোহায়। কেউ কেউ নিরুপায় হয়ে ভিজেই গন্তব্যে ছোটেন। ফার্মগেট, কারওয়ানবাজার, শাহবাগ, জিরোপয়েন্টসহ রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে যানজট লেগে থাকতে দেখা গেছে। নগরীর কোথাও কোথাও দেখা দেয় জলাবদ্ধতা।
আগামী দুদিনের মধ্যে রাতের তাপমাত্রা ৪-৫ ডিগ্রি কমে যেতে পারে। এতে শীত বাড়বে। তবে এ সময়ে বৃষ্টি দূর হওয়ায় দিনের তাপমাত্রা বাড়বে বলেও জানিয়েছেন আবহাওয়াবিদরা।
আবহাওয়াবিদ মুহাম্মদ আবুল কালাম মল্লিক জানান, উত্তর অন্ধ্র প্রদেশ ও তৎসংলগ্ন উড়িষ্যা এলাকায় অবস্থানরত লঘুচাপটি বর্তমানে গুরুত্বহীন হয়ে পড়েছে। মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে তিনি জানান, রংপুর, রাজশাহী, ময়মনসিংহ, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে ভারী বর্ষণ হতে পারে। এসময়ে সারাদেশে রাতের তাপমাত্রা ১ থেকে ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস কমতে পারে এবং দিনের তাপমাত্রা ১ থেকে ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস বাড়তে পারে।
শুক্রবার দুপুরের পর অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারাদেশের আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত দেশের নদী অববাহিকা এবং উত্তরাঞ্চেলের কোথাও কোথাও হালকা থেকে মাঝরি ধরনের কুয়াশা পড়তে পারে। এ সময়ে সারাদেশে রাতের তাপমাত্রা ১ থেকে ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস কমতে পারে এবং দিনের তাপমাত্রা ১ থেকে ৪ ডিগ্রি সেলিসিয়াস বাড়তে পারে বলে জানিয়েছেন একজন আবহাওয়াবিদ।
বৃহস্পতিবার দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১৭ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছিল পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায়। ঢাকায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল কক্সবাজারে, ৩২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়।
নদীবন্দরে ১ নম্বর নৌ-হুঁশিয়ারি সংকেত
বৃহস্পতিবার রাত ১টা পর্যন্ত অভ্যন্তরীণ নদীবন্দরগুলোর জন্য আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে-রাজশাহী, পাবনা, রংপুর, বগুড়া, টাঙ্গাইল, ময়মনসিংহ, ঢাকা, ফরিদপুর, যশোর, কুষ্টিয়া, খুলনা, বরিশাল, পটুয়াখালী, নোয়াখালী, কুমিল্লা, সিলেট এবং চট্টগ্রাম অঞ্চলের ওপর দিয়ে পূর্ব বা দক্ষিণ-পূর্ব দিক থেকে ঘণ্টায় ৪৫ থেকে ৬০ কি. মি. বেগে অস্থায়ীভাবে দমকা বা ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। এসব এলাকার নদীবন্দরগুলোকে ১ নম্বর নৌ-হুঁশিয়ারি সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
আরএমএম/এমআইএইচএস/জেআইএম