মিয়ানমারের সেনা-বিজিপি সহসাই ফেরত পাঠানো হবে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৩:৫২ পিএম, ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪

মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা দেশটির সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিজিপি) ও সেনাসদস্যদের সহসাই ফেরত পাঠানো হবে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।

দিল্লি সফরে শেষে সোমবার (১২ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনিা এ কথা তথ্য জানান।

মিয়ানমার থেকে আসা সেনাসদস্যদের ফিরিয়ে নিতে তাদের জাহাজ চলে এসেছে, তবে সমন্বয়হীনতার জন্য জাহাজটি ভিড়তে পারছে না উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, তারা দ্রুতই তাদের নাগরিকদের ফিরিয়ে নিয়ে যাবে। এটা খুব সহসা হবে। কখন কোন জাহাজ ভিড়বে সেটি টেকনিক্যাল পার্ট। সে বিষয়ে আমার বলার প্রয়োজন আছে বলে মনে করি না।

মিয়ানমারে জান্তাদের সঙ্গে দেশটির জাতিগত বিদ্রোহীদের চলমান সংঘাতের প্রেক্ষাপটে জীবন বাঁচাতে বিজিপি ও সেনাবাহিনীর কিছু সদস্য বাংলাদেশে পালিয়ে আশ্রয় নেন। এসব সদস্য রোহিঙ্গা গণহত্যার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কি না, সে বিষয়টি তদন্তের দাবি উঠেছে। এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমরা আপাতত তাদের ফেরত পাঠানো নিয়েই কাজ করছি। কারণ, আমাদের প্রথম অগ্রাধিকার তাদের নাগরিকদের ফেরত পাঠানো। তারাও তাদের লোকদের নিয়ে যেতে চায়।

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য আরাকান আর্মি দখল করেছে, সেখানে বান্দরবানের মিয়ানমার সীমান্তে তারা টহল দিচ্ছে। এটি বাংলাদেশের নিরাপত্তা নিয়ে কোনো সংকট তৈরি করবে কি না- জানতে চাইলে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, মিয়ানমারে যেটি ঘটছে সেটি তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়। তাদের নিরাপত্তা চৌকি কে পাহাড়া দিচ্ছে সেটিও তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়।

তিনি বলেন, মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতকে তলব করে আমাদের বক্তব্য জানানো হয়েছে। তাদের অভ্যন্তরীণ গন্ডগোলের কারণে এখানে (বাংলাদেশে) নিরাপত্তা বিঘ্নিত হোক সেটি আমরা কখনো চাই না। তবে আমাদের এখানে নিরাপত্তা কিছুটা বিঘ্নিত হয়নি, সেটি তো সঠিক নয়। তাদের শেল এসেছে পড়েছে, দুজন নিহত হয়েছে। এ নিয়ে কিন্তু আমরা কড়া প্রতিবাদ জানিয়েছি।

মিয়ানমারের যেসব বিজিপি ও সেনাসদস্য পালিয়ে এসেছেন তাদের ফেরতের বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, মিয়ানমার থেকে যেসব বিজিপি ও সেনা এবং তাদের পরিবারের সদস্য পালিয়ে এসেছেন তাদের সহসা ফেরত পাঠাবো। এ বিষয়ে আমরা একমত হয়েছি। মিয়ানমার তাদের ফেরত নিয়ে যাবে। আমি দিনক্ষণ বলতে চাই না, কারণ এটি গোপনীয়। এখানে নিরাপত্তার বিষয় রয়েছে। তবে সহসাই তাদের ফেরত নেওয়ার বিষয়ে মিয়ানমার সম্মত হয়েছে। আমরা আশা করছি, শিগগির তাদের ফেরত পাঠাতে পারবো।

মিয়ানমারের রাখাইনের রাজধানী সিত্তে থেকে বাংলাদেশিদের সরিয়ে নেওয়া হয়েছে কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমাদের যারা নাগরিক রয়েছেন তাদের সরিয়ে নেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে। সেখানে আমাদের মিশনে যারা কর্মরত তাদের সরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা চলছে।

নাফ নদীর তীরে অনেক রোহিঙ্গা অপেক্ষা করছেন, তাদের জন্য বর্ডার খুলে দেওয়া হবে কি না- জানতে চাইলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এরই মধ্যে আমাদের দেশে ১ দশমিক ২ মিলিয়ন রোহিঙ্গা অবস্থান করছে। তাদের কারণে আমাদের দেশে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা তৈরি হয়েছে। পরিবেশগত, নিরাপত্তা ও মাদকজনিত সমস্যাসহ অন্যান্য সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে।

তিনি পাল্টা প্রশ্ন রেখে বলেন, আমাদের পক্ষে কি আরও রোহিঙ্গা আশ্রয় দেওয়া সম্ভব? মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের নিয়েই সংঘাত চলছে তা নয়। তাতের মধ্যে নানা জাতিগোষ্ঠী আছে। তাদের মধ্যে নানা সমস্যা চলছে। তাদের সংঘাতের উত্তাপের কারণে আমরা আমাদের দেশে নানা ধরনের সমস্যায় পড়বো, সেটি কি সঙ্গত?

আইএইচআর/এমকেআর/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।