পররাষ্ট্রমন্ত্রী

ব্যাটারি চেঞ্জ না করলে বিএনপির গাড়ি কখনো স্টার্ট হবে না

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক চট্টগ্রাম
প্রকাশিত: ০৯:২১ পিএম, ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪

নেতৃত্বের পরিবর্তন ছাড়া বিএনপির রাজনীতি আর কখনো সচল হবে না উল্লেখ করে বিএনপিকে নেতৃত্ব পরিবর্তনের অনুরোধ জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ।

তিনি বলেন, বসে যাওয়া পুরাতন গাড়ির মতো বিএনপিকে দেশি-বিদেশি অনেকে ঠেলেও স্টার্ট দিতে পারেনি। বিএনপির এই পুরাতন গাড়ি স্টার্ট দিতে হলে ব্যাটারি চেঞ্জ করতে হবে। কিন্তু তাদের ড্যাম হয়ে যাওয়া ব্যাটারিও থাকে লন্ডনে। এই ব্যাটারি ফেলে না দিলে বিএনপির রাজনীতির গাড়ি আর কখনো স্টার্ট হবে না। বিএনপিকে অনুরোধ জানাবো, নেতৃত্বের পরিবর্তন ছাড়া আপনাদের এই দল এবং রাজনীতি আর কখনো সচল হবে না।

সোমবার (১২ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের প্রয়াত সভাপতি সাবেক সংসদ সদস্য মোছলেম উদ্দিন আহমদের স্মরণসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কথা বলেন। বোয়ালখালী উপজেলা আওয়ামী লীগ এ স্মরণসভার আয়োজন করে।

মন্ত্রী বলেন, এ পর্যন্ত ৭০ দেশের রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধান আমাদের প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। জো বাইডেন চিঠি লিখেছেন প্রধানমন্ত্রীর কাছে, বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে তারা কাজ করতে চায়। তার ক’দিন পর ঋষি সুনাকও চিঠি দিয়েছেন অভিনন্দন জানিয়ে। জাতিসংঘ মহাসচিবও চিঠি লিখে অভিনন্দন জানিয়েছেন। ইউরোপিয়ান কমিশনের সবাই অভিনন্দন জানিয়েছেন। এত অভিনন্দন বার্তা ইতিপূর্বে কখনো আসে নাই। সমস্ত পৃথিবী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারকে অভিনন্দন জানিয়েছে এবং এই সরকারের সঙ্গে কাজ করার ইচ্ছা ব্যক্ত করেছে। আর এগুলো দেখে মাথা খারাপ হয়ে বিএনপি কয়দিন কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে বসেছিল, কী করবে বুঝতে পারে নাই।

ড. হাছান মাহমুদ বলেন, এবার নির্বাচন নিয়ে অনেক ষড়যন্ত্র হয়েছিল। প্রথমে ষড়যন্ত্র ছিল নির্বাচন যাতে না হয়, যখন সেটি ঠেকাতে পারেনি, তারপর ষড়যন্ত্র ছিল নির্বাচনের মধ্যে নাশকতা সৃষ্টি করে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করা। সেটি যখন করতে পারেনি তারপর পরিকল্পনা ছিল নির্বাচন যাতে দেশে-বিদেশে গ্রহণযোগ্য না হয়। সমস্ত পৃথিবী যখন অভিনন্দন জানাচ্ছে, তারপর বিএনপি বললো- এখন আমরা লিফলেট বিতরণ করবো। আপনারা লিফলেট বিতরণ করেন, পেট্রলবোমা বিতরণ করতে যাবেন না। সেটা যদি করেন উচিত শিক্ষা আপনাদের দেওয়া হবে। দলের তরুণ কর্মীদের বলবো, বিএনপির কারা পেট্রলবোমা নিক্ষেপের পরিকল্পনা করে, সেটা খুঁজে বের করুন। আমরা তাদের এই কাজ করতে দেবো না।

প্রয়াত মোছলেম উদ্দিন আহমেদ একজন কর্মী থেকে নেতা হয়ে ওঠা মানুষ উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, মিছিলের পেছনের সারির কর্মী থেকে তিনি নেতৃত্বের আসনে আসীন হয়েছিলেন। একজন কর্মী কীভাবে নেতা হতে পারেন সেটির উদাহরণ তিনি। আজকের নতুন প্রজন্ম যারা ৩০ বছর বয়স, তারা জানে না বিরোধী দল কী, বিরোধী দলে থাকলে যন্ত্রণা কী, সেটি অনেকে বুঝতে পারে না। সমস্ত প্রতিকূলতা উপড়ে ফেলে মোছলেম উদ্দিনের মতো যারা জননেত্রী শেখ হাসিনার ভ্যানগার্ডকে এগিয়ে নিয়ে গেছেন, আজ ধীরে ধীরে তাদের অনেকে প্রয়াত হয়েছেন। পঁচাত্তরের পর দম্ভ করে অনেকেই বলতো আওয়ামী লীগ কখনো ক্ষমতায় যাবে না। সেই সময় বুকে পাথর বেঁধে জিয়া-এরশাদের সমস্ত দমন-নিপীড়ন ও রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে, নিজের জীবনকে বিপন্ন করে যারা এই সংগঠন গড়ে তুলেছেন; এই চট্টগ্রামে তাদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন মোছলেম উদ্দিন আহমেদ।

তিনি বলেন, মোছলেম উদ্দিন আহমেদ মুক্তিযুদ্ধের সময় যেই সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছেন তা নতুন প্রজন্মের অনেকেই জানেন না। তিনি এবং আমাদের প্রয়াত আরেক নেতা এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী একসঙ্গে যুদ্ধকালীন পাকিস্তানিদের হাতে গ্রেফতার হয়েছিলেন। গ্রেফতারের পর তারা পাগলের অভিনয় করা শুরু করলেন। তখন পাকিস্তানিরা মনে করলো এরা পাগল। সেজন্য তাদের ছেড়ে দিয়েছিল এবং ছাড়া পাওয়ার পর আবার মুক্তিযুদ্ধে যোগদান করেছিলেন।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান বলেন, এখন অনেকেই রেডিমেড নেতা হতে চান, অনেকে টাকা দিয়ে রাজনীতি কিনতে চান, অনেকে রাতারাতি নেতা বনে যেতে চান, সেজন্য বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ নয়, টাকা দিয়ে রাজনীতি কেনা যায় বিএনপি-জাতীয় পার্টিতে, আওয়ামী লীগে নয়। অর্থ আর বৃত্তকে আমাদের দল মূল্যায়ন করে না, কর্মীর মূল্যায়ন করে।

কর্ণফুলী নদীর ওপর কালুরঘাট সেতুর ডিজাইন অ্যাপ্রুভ হয়েছে উল্লেখ করে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, আমি যথাযথ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেছি, এরই মধ্যে প্রধানমন্ত্রী এই ডিজাইনে সম্মতি দিয়েছেন। এটি একনেকে গিয়ে অ্যাপ্রুভ হলে কাজ শুরু হবে ইনশাআল্লাহ। প্রয়াত মোছলেম উদ্দিন আহমেদ ও মাইনুদ্দিন খান বাদল কর্ণফুলী সেতুর জন্য অনেক দৌড়াদৌড়ি করেছেন। আমিও তাদের একাজে সবসময় সহযোগিতা করেছি। সেতু মন্ত্রণালয়ের সচিবের সঙ্গে আমি বেশ কয়েক দফা কথা বলেছি। একটু অপেক্ষা করুন এটি হয়ে যাবে।

বোয়ালখালী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নুরুল আমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক উপজেলা চেয়ারম্যান রেজাউল করিম রাজার সঞ্চালনায় স্মরণসভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরী, চট্টগ্রাম-৮ আসনের সংসদ সদস্য মো. আবদুস সালাম, দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক প্রদীপ দাশ, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক আব্দুল কাদের সুজন প্রমুখ।

ইকবাল হোসেন/বিএ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।