স্বাস্থ্যখাতের নৈরাজ্য নিয়ে প্রশ্ন মানবাধিকার কমিশনের
![স্বাস্থ্যখাতের নৈরাজ্য নিয়ে প্রশ্ন মানবাধিকার কমিশনের](https://cdn.jagonews24.com/media/imgAllNew/BG/2023March/national-human-rights-commission-20240224171257.jpg)
সম্প্রতি ঢাকা শহরের বিভিন্ন হাসপাতালে খতনা করাতে গিয়ে শিশু মৃত্যুর ঘটনায় চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন।
প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘এসব ঘটনা জাতির জন্য চরম দুর্ভাগ্যজনক। ফলে স্বাস্থ্যখাত চরম নৈরাজ্য বা নিষ্ঠুরতার খাত কি না- তা নিয়ে প্রশ্ন করা যেতেই পারে।’
শনিবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) কমিশনের উপ-পরিচালক ফারহানা সাঈদের সই করা এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান বলেন, ‘দেশ যেখানে বিভিন্ন ক্ষেত্রে দুর্বার গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে, সেখানে স্বাস্থ্যখাতের চরম নৈরাজ্য কোনোভাবেই প্রত্যাশিত কিংবা গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। স্বাস্থ্যখাতের অব্যবস্থাপনা, প্রয়োজনীয় মনিটরিংয়ের অভাবে যত্রতত্র অনুমোদনহীন হাসপাতাল/ক্লিনিক প্রতিষ্ঠিত হওয়া ও চিকিৎসক এবং নার্সদের কোনো ন্যূনতম যোগ্যতা ছাড়াই লাগামহীনভাবে অস্ত্রোপচার এবং চিকিৎসা কর্মকাণ্ড চলছে।’
ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘স্বাস্থ্যখাতে প্রতিনিয়ত হওয়া অন্যায়, অবিচার, নিষ্ঠুরতার বিভিন্ন ঘটনা কমিশন লক্ষ্য করছে। দেশ যখন দুর্বার গতিতে এগিয়ে চলছে তখন স্বাস্থ্যখাতের এই ধরনের নৈরাজ্য কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যাবে না।’
বিজ্ঞপ্তিতে কমিশন জানায়, রাজধানীর বিভিন্ন অভিজাত হাসপাতালসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ভুল চিকিৎসা, অবহেলা ও গাফিলতির কারণে রোগীদের মৃত্যুর ঘটনা উদ্বেগজনকহারে বেড়েছে। রাজধানীর মালিবাগের জেএস হাসপাতালে গত ২০ ফেব্রুয়ারি ১০ বছর বয়সী আহনাফ তাহমিদকে খতনা করাতে নিয়ে লোকাল অ্যানেসথেসিয়া না দিয়ে মাত্রাতিরিক্ত জেনারেল অ্যানেসথেসিয়া দেওয়াতেই শিশুটির মারা গেছে বলে অভিযোগ করে তার পরিবার।
এতে আরও বলা হয়, কিছুদিন আগেও রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে খতনা করাতে গিয়ে আরেক শিশু আয়ানের মৃত্যু হয়। এছাড়াও, গত ১৬ জানুয়ারি বরগুনার বামনায় লাইসেন্সবিহীন অবৈধ সুন্দরবন হসপিটাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে প্রসূতি নারী মেঘলাকে ভর্তি করানো হয়। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় অনভিজ্ঞ আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা সবুজ কুমার দাসসহ ৫-৬ জন মিলে তার অস্ত্রোপচার করেন।
কমিশনের চেয়ারম্যান বলেন, ‘আস্থাহীনতার কারণে বিপুল সংখ্যক রোগী চিকিৎসার জন্য বিভিন্ন দেশে যাচ্ছেন। এর ফলে বর্তমান সংকট সময়েও দেশের বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা বেহাত হচ্ছে।’
অনতিবিলম্বে এসব অনুমোদনহীন হাসপাতাল চিহ্নিত করে বেআইনি ও হঠকারিতামূলক চিকিৎসা কর্মকাণ্ড বন্ধের দাবি জানান ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ। পাশাপাশি দোষীদের আইনের আওতায় এনে শাস্তি নিশ্চিত করতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে আহ্বান জানান তিনি। একই সঙ্গে শিশু আয়ান, আহনাফসহ ভুল চিকিৎসা এবং চিকিৎসা অবহেলার কারণে নিহত রোগীদের পরিবারকে যথাযথ ক্ষতিপূরণ প্রদান এবং দায়ীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিতের আহ্বান জানান তিনি।
এসএম/কেএসআর/এমএস