সাবের হোসেন চৌধুরী

জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করবে যুক্তরাষ্ট্র

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০২:০৯ পিএম, ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৪

পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করার আশ্বাস দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। একইসঙ্গে এ দুটি ক্ষেত্রে বাংলাদেশের চাহিদা পূরণে কাজ করবে দেশটি।

রোববার (২৫ ফেব্রুয়ারি) সচিবালয়ে যুক্তরাষ্ট্রের উপসহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী আফরিন আক্তারের নেতৃত্বাধীন মার্কিন প্রতিনিধি দল পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরীর সঙ্গে বৈঠকে এ আশ্বাস দেন।

বৈঠকের পর সচিবালয়ে সাংবাদিকদের এ কথা জানান পরিবেশ বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী।

বৈঠকের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘তাদের কয়েকটি উদ্বেগের জায়গা আছে, যেমন জলবায়ু পরিবর্তন, সেটা নিয়ে আমরা আলোচনা করেছি। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রেক্ষাপটে টেকসই উন্নয়ন নিয়েও আলোচনা হয়েছে। ইউএসএইডের এশিয়া ব্যুরোর দায়িত্বে যিনি আছেন, তিনি এসেছিলেন। সেসব বিষয় নিয়ে আমরা আলোচনা করেছি, রাজনৈতিক কোনো আলোচনা হয়নি।’

মন্ত্রী বলেন, ‘এখন একটা নতুন সরকার আসছে। এই সরকার পাঁচ বছর ধরে থাকবে। আগামী দিনে তাদের যে কর্মসূচিগুলো আছে, তারা যে জায়গাগুলোতে আমাদের সহযোগিতা করতে চায়, সেসব বিষয়ে আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি কী, আমরা জলবায়ুকে কীভাবে দেখছি, পরিবেশের বিষয়গুলো কীভাবে দেখছি- তারা এটার একটা ধারণা চেয়েছে। তারা যখন তাদের পরিকল্পনাগুলো চূড়ান্ত করবে আমাদের চাহিদাগুলোকে তারা তাদের মাথায় রাখবে।’

‘তাদের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নত আছে। আগামী দিনে এটাকে আরও কীভাবে জোরালো করা যায়, সেই বিষয় নিয়ে আমরা আলোচনা করেছি।’

পরিবেশ ও বনমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা যখন দুটো দেশের সঙ্গে সম্পর্কের কথা বলবো, সেখানে অনেক দিক থাকবে। কিছু কিছু দিক থাকে তারা যেখানে একটু বেশি জোর দিবে। পরিবেশ, জলবায়ু পরিবর্তন এটা তাদের অগ্রাধিকার এরিয়া। সেখানে তারা বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করবে। আমি মনে করি, এটার ওপর ভিত্তি করে আমাদের যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আছে আগামী দিনে আরও জোরালো হবে।’

জলবায়ু ইস্যুতে তারা কোন চ্যালেঞ্জের কথা উল্লেখ করেছে কি না জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, ‘জলবায়ুতে তো প্রতিদিনই চ্যালেঞ্জ। এটা যে একটা জরুরি বিষয়, এটা তারা উপলব্ধি করে। বাংলাদেশ বিগত বছরগুলোতে যেভাবে এগিয়েছে, এই ধারা যদি আমরা ধরে রাখতে চাই তাহলে এই উন্নয়নের একটা স্থায়িত্ব থাকা প্রয়োজন। এটা টেকসই হতে হবে, টেকসই হতে হলে পরিবেশবান্ধব হতে হবে। পরিবর্তনের বিষয়গুলো আমাদের গুরুত্ব দিতে হবে, যেটা আমরা দিচ্ছি।'

সাবের হোসেন চৌধুরী বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বাংলাদেশ শুধু ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তা নয়, বাংলাদেশের জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে অনেক সমাধান আছে। বাংলাদেশকে একটা রোল মডেল হিসেবে তারা দেখে। সেটা তাদের জন্য উপকার হবে। আমরা যখন অভিযোজনের কথা বলি, আমাদের কাছ থেকে তারা অনেক কিছু জানতে পারে। তারা অনেক কিছু তাদের দেশে কাজে লাগাতে পারে।'

জলবায়ু তহবিলে অর্থায়নের বিষয় কোন আলোচনা হয়েছে কি না প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, 'অর্থায়নের বিষয় নিয়ে আমরা আলোচনা করেছি। তবে এখন আমরা মূলত আলাপ করছি তাদের নতুন যে কর্মসূচি বাংলাদেশ নিয়ে, তাদের এখন যে পরিকল্পনা, সেই পরিকল্পনায় পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন আলোকে আমাদের চাহিদাটা কী, সেই চাহিদা পূরণে তারা কীভাবে আমাদের সহযোগিতা করবে, সেটা নিয়ে মূলত আলোচনা করেছি।'

১৫ বিলিয়ন ডলারের ফান্ড গঠনের কথা বলেছিলেন, সেখানে যুক্তরাষ্ট্র কীভাবে সহযোগিতা করতে পারে- এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা একটা নতুন প্ল্যাটফর্ম দাঁড় করাচ্ছি। সেখানে উন্নয়ন সহযোগীরা সহযোগিতা করতে পারে। আমরা আশাবাদী সেখানে যুক্তরাষ্ট্রও থাকবে।’

উন্নয়ন সহযোগীদের কাছ থেকে যতটুকু সম্ভব হল তহবিল আদায় করে নেওয়ার চেষ্টা করা হবে বলেও জানিয়েছেন মন্ত্রী।

বায়ু দূষণ নিয়ে কী পদক্ষেপ জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, ‘ইটভাটার বিরুদ্ধে আমরা যে অভিযোগ চালাচ্ছি, সেটার দুটি দিক আছে। একটি হচ্ছে আইনের শাসন, অনুমতি ছাড়া ইটভাটা পরিচালনা করলে সেটা তো আইনসম্মত হচ্ছে না। আরেকটি বিষয় হচ্ছে বায়ু দূষণের ক্ষেত্রে আমরা যে বার্তাটি দিতে চাচ্ছি, সনাতন পদ্ধতি থেকে আমাদের ব্লকে চলে আসতে হবে। ব্লকের বিষয়ে আমরা উদ্যোক্তা, বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে আমরা মতবিনিময় করব। এখন আমরা চাহিদার ১০ শতাংশ ব্লক উৎপাদন করি। এটা আমরা আগামীতে কিভাবে বাড়াতে পারি সেটা নিয়ে কাজ করছি।’

বায়ু দূষণের ক্ষেত্রে ইটভাটা একটি উৎস জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের এখানে ডিজেলের সালফারের অংশ অন্যান্য দেশের তুলনায় অনেক বেশি। সেখানে আমাদের মানের দিকে নজর দিতে হবে। ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে চলা যানবাহনের ফিটনেসের দিকে নজর দিতে হবে। প্রতিটি উৎস চিহ্নিত করে আমাদের ব্যবস্থা নিতে হবে।’

আরএমএম/জেএইচ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।