ছিনতাই করা মোবাইলের আইএমইআই বদলে দিতো পাকিস্তানি এক্সপার্ট
চট্টগ্রামে চুরি-ছিনতাই করা মোবাইলের ইন্টারন্যাশনাল মোবাইল ইকুইপমেন্ট আইডেন্টিটি (আইএমইআই) বদলে দিতো পাকিস্তানি ও ইন্দোনেশিয়ান এক্সপার্ট। চট্টগ্রামে বসে তাদের কাছ থেকে বিশেষ সফটওয়্যারের মাধ্যমে এসব মোবাইলের আইএমইআই বদলে নিতো শাওন নামে এক মোবাইল মেকানিক।
বুধবার নগরীর পাহাড়তলী থানার মৌসুমী আবাসিকের একটি বাসা থেকে তাকে গ্রেফতার করে নগর গোয়েন্দার (বন্দর-পশ্চিম) একটি দল। এ সময় তার কাছ থেকে মোবাইলের আইএমইআই পরিবর্তনে ব্যবহৃত ল্যাপটপ উদ্ধার করা হয়।
অভিযানে অংশ নেওয়া গোয়েন্দা পুলিশের উপ-পরিদর্শক রাজীব হোসেন বলেন, পাহাড়তলীর মৌসুমী আবাসিকের বাসায় বসেই ল্যাপটপের মাধ্যমে বদলে ফেলা হচ্ছিল মোবাইলের আইএমইআই নম্বর। মূলত ল্যাপটপে বিশেষ সফটওয়্যারের মাধ্যমে এ কাজটি করে থাকে শাওন। কোনো মোবাইলের আইএমইআই বদলাতে অপারগ হলে অনলাইনে পাকিস্তানি ও ইন্দোনেশিয়ান এক্সপার্টদের দিয়ে এসব আইএমইআই নম্বর পাল্টে নেয় শাওন।
তিনি বলেন, দিনে ৫০-৬০টি মোবাইলের আইএমইআই পরিবর্তন করে সে। একটি মোবাইলের আইএমইআই বদলাতে তার মাত্র দুই মিনিটের প্রয়োজন হয়। পরে এসব মোবাইল তার অলংকার শপিং কমপ্লেক্সের নিজের দোকান ও অনলাইনে বিজ্ঞাপন দিয়ে বিক্রি করে দেওয়া হয়। বিশেষ করে হাটহাজারী, আমিরাবাদ, কক্সবাজারসহ অনলাইন বাজারে এসব মোবাইল বিক্রি করা হতো।
জিজ্ঞাসাবাদে শাওন গোয়েন্দা পুলিশকে জানিয়েছে, চোর, ছিনতাইকারী ও পকেটমারদের কাছ থেকে কেনা চোরাই মোবাইল ব্যবসায়ীরা আইএমইআই পরিবর্তনের জন্য শাওনের কাছে যায়। এসব কাজের জন্য সেটভেদে ১ থেকে ১৫ হাজার টাকা পর্যন্ত নিত সে। আবার চোর, ছিনতাইকারী এবং পকেটমারদের কাছ থেকেও কমদামে দামি মোবাইল কিনে নিত শাওন।
উপ-পরিদর্শক রাজীব হোসেন বলেন, চোরাই কিংবা ছিনিয়ে নেওয়ার পর মোবাইলের আইএমইআই বদলে ফেলার কারণে ভুক্তভোগী থানায় জিডি করলেও এসব মোবাইল উদ্ধার সম্ভব হয় না। কারণ একটি মোবাইল খুঁজে পেতে মূলত আইএমইআই দরকার হয়। কিন্তু সেটাই যখন পরিবর্তন হয়ে যাচ্ছে স্থায়ীভাবে তখন আর মোবাইলটিকে খুঁজে পাওয়া যায় না। শহরজুড়ে চোরাই মোবাইল চক্রের মূল ভরসা হয়েছিল শাওন। তার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। বৃহস্পতিবার তাকে আদালতে হাজির করা হয় বলে জানান তিনি।
ইকবাল হোসেন/এমআরএম/এএসএম