অর্থপাচার ঠেকাতে সরকারকে কঠোর হতে বললেন সালমা ইসলাম

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৮:৪৭ পিএম, ০৩ মার্চ ২০২৪

খেলাপি ঋণ ও অর্থপাচার বন্ধে সরকারকে কঠোর হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট সালমা ইসলাম।

তিনি বলেছেন, খেলাপি ঋণ লাগামহীন গতিতে বেড়েই চলছে। হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার হয়ে যাচ্ছে। কোনোভাবেই এর লাগাম টেনে ধরা যাচ্ছে না। খেলাপি ঋণ, ব্যাংক লুটেরা এবং অর্থপাচারকারীরা আমাদের অর্থনীতির মেরুদণ্ড ভেঙে দিচ্ছে। তাদের কোনোভাবেই ছাড় দেওয়া যাবে না। এক্ষেত্রে বর্তমান সরকারকে আরও কঠোর হতে হবে।

রোববার (৩ মার্চ) জাতীয় সংসদে রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আনা ধন্যবাদ প্রস্তাবের আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এ কথা বলেন।

সালমা ইসলাম বলেন, বর্তমানে আমাদের সামনে তিনটি বড় চ্যালেঞ্জ। একটি হচ্ছে দ্রব্যমূল্য ও মূল্যস্ফীতি কমানো। আরেকটি হচ্ছে সুশাসন নিশ্চিত করা এবং শেষটি হচ্ছে আন্তর্জাতিক কূটনীতি বাংলাদেশের পক্ষে নিয়ে আসা।

জাতীয় পার্টির এই সংসদ সদস্য আরও বলেন, দ্রব্যমূল্য কমাতে হলে শুধু সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে অ্যাকশন নিলেই চলবে না। ডলার সংকটের সমাধান করতে হবে। কারণ ডলার না থাকলে পণ্য আমদানি করা যাবে না আর তাতে বাজারে পণ্যের সরবরাহ না থাকলে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে অসাধু ব্যবসায়ীরা দাম বাড়াবে। সুশাসন নিশ্চিত করতে হলে দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। এমনকি প্রভাবশালী কারো বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ উঠলেও তার বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে হবে। আইনের শাসন নিশ্চিত করতে হবে।

তিনি বলেন, আমেরিকা, চীন ও ভারত- এই তিন দেশই আমাদের রাজনীতি ও অর্থনীতির সঙ্গে সম্পর্কিত। সুতরাং কূটনীতিতে ভারসাম্য দরকার। জিএসপি সুবিধা যাতে ব্যাহত না হয়, সেজন্য ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে সফল কূটনৈতিক তৎপরতা চালাতে হবে। ২০২৬ সালের পর আমরা যখন উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হবো, তখন যেসব চ্যালেঞ্জ আসবে, সেগুলো মোকাবিলার জন্য এখন থেকেই প্রস্তুতি নিতে হবে।

মূল্যস্ফীতিসহ অর্থনীতির নানান চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার চিত্র তুলে ধরে অ্যাডভোকেট সালমা ইসলাম বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে বাংলাদেশ ট্রিলিয়ন ডলারের অর্থনীতির দেশে পৌঁছানোর অভিযাত্রা ঠিক করেছে। কিন্তু এ অভিযাত্রায় আমাদের অন্যতম বড় চ্যালেঞ্জ মূল্যস্ফীতি। এরসঙ্গে যুক্ত হয়েছে আর্থিক খাতে চরম অব্যবস্থা। খেলাপি ঋণ লাগামহীন গতিতে বেড়েই চলছে। হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার হয়ে যাচ্ছে। কোনোভাবেই এর লাগাম টেনে ধরা যাচ্ছে না। ডলার সংকট বাড়ছে। রিজার্ভ ক্রমাগত নিম্নমুখী। ব্যাংকগুলো তারল্য সংকটে ভুগছে। অনেক ব্যাংক রুগ্ন হয়ে যাচ্ছে। ঋণখেলাপি, ব্যাংক লুটেরা এবং অর্থপাচারকারীরা আমাদের অর্থনীতির মেরুদণ্ড ভেঙে দিচ্ছে। তাই তাদের কোনোভাবেই ছাড় দেওয়া যাবে না। এক্ষেত্রে বর্তমান সরকারকে আরও কঠোর হতে হবে।

বেইলি রোডে অগ্নিকাণ্ডে হতাহতের প্রসঙ্গ টেনে জাতীয় পার্টির নেত্রী বলেন, ওই নির্মম অগ্নিকাণ্ডে অনেকগুলো তাজা প্রাণ ঝরে পড়ল। এর দায় কে নেবে? অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় প্রাণহানির পর বলা হয় সিলিন্ডার থেকে দুর্ঘটনা ঘটেছে। বলা হচ্ছে এ সিলিন্ডার ছিল মেয়াদ উত্তীর্ণ। বলা হচ্ছে ভবনগুলোতে অগ্নি নির্বাপক যন্ত্রের অভাব ছিল। কিংবা ভবন নির্মাণে বিল্ডিং কোড মানা হয়নি। এসব বলে প্রতিটি দুর্ঘটনায় দায় এড়ানোর চেষ্টা চলে। এভাবে প্রাণহানি রোধে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কার্যকর কী পদক্ষেপ নিচ্ছে? দেশের মানুষ তা জানতে চায়।

আইএইচআর/এমএইচআর/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।