পদবি গোপন করে পুরস্কারের আবেদন, সাবেক ইউএনওকে তিরস্কার

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৫:৩৭ এএম, ১০ এপ্রিল ২০২৪

 

পদবি গোপন করে নিজের ও স্ত্রীর নামে পুরস্কারের জন্য আবেদন করে শাস্তি পেলেন চট্টগ্রামের হাটহাজারীর সাবেক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ রুহুল আমীন।

রুহুল আমীনকে লঘুদণ্ড তিরস্কার দিয়ে গত ৩ এপ্রিল জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। তিনি বর্তমানে চট্টগ্রামের বাংলাদেশ চা বোর্ডের সচিব (ভারপ্রাপ্ত)।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, হাটহাজারীর ইউএনও থাকার সময় রুহুল আমীন ২০২২ সালের গত ৫ জুন অনুষ্ঠিত বিশ্ব পরিবেশ দিবস ও পরিবেশ মেলা এবং জাতীয় বৃক্ষরোপণ ও বৃক্ষমেলার প্রাক্কালে হীন ব্যক্তিস্বার্থ হাসিল না হওয়ায় পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের যথাযথ ও আইনসম্মত কার্যক্রমকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছেন। এর মাধ্যমে সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করেছেন। তিনি হাটহাজারী উপজেলায় ইউএনও হিসেবে কর্মরত থাকাকালে নিজ পদবি গোপন করে নিজের ও স্ত্রীর নামে ‌‘বৃক্ষরোপণে প্রধানমন্ত্রীর জাতীয় পুরস্কার ২০২২’ এর জন্য আবেদন করেছেন। এ পুরস্কার প্রদান সংক্রান্ত উপজেলা কমিটির সভাপতি হিসেবে ওই আবেদন জেলা ও বিভাগীয় কমিটির কাছে সুপারিশ করেছেন। এর মাধ্যমে সুস্পষ্টভাবে স্বার্থের সংঘাত সংঘটিত হয়েছে।

এতে আরও বলা হয়, বৃক্ষরোপণে প্রধানমন্ত্রীর জাতীয় পুরস্কার প্রদানের নীতিমালা অনুযায়ী 'গ' শ্রেণিতে কেবল ইউনিয়ন পরিষদ/উপজেলা পরিষদ/জেলা পরিষদ/পৌরসভা/সিটি কর্পোরেশন প্রাতিষ্ঠানিকভাবে আবেদন করার যোগ্য। সে মোতাবেক উপজেলা পরিষদের সৃজিত ব্লক বাগানের জন্য হাটহাজারী উপজেলা পরিষদের নাম জেলা কমিটি, বিভাগীয় কমিটি, পদক মূল্যায়ন উপ-কমিটি এবং জাতীয় কমিটি কর্তৃক যথাযথ প্রক্রিয়ায় 'গ' শ্রেণিতে পুরস্কারের জন্য চূড়ান্তভাবে মনোনীত করেছে। এ সত্ত্বেও তিনি হীন ব্যক্তিস্বার্থে পুরস্কারের জন্য বিজয়ী নির্ধারণ প্রক্রিয়াকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছেন।

'ব্যক্তিস্বার্থ চরিতার্থ না হওয়ায় ও বদলিজনিত কারণে চূড়ান্ত পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে ব্যক্তিগতভাবে পুরস্কার গ্রহণের সুযোগ না থাকায় ক্ষুব্ধ হয়ে তিনি মিথ্যা তথ্য এবং জাল কার্যবিবরণী সহকারে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিবের কাছে ২০২২ সালের ২৮ মে পুরস্কারের আবেদন প্রত্যাহার করে পত্র দিয়েছেন। ওই মিথ্যা তথ্য ও জাল দলিল সরবরাহ করে একাধিক জাতীয় পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ করানোর মাধ্যমে মন্ত্রণালয় ও সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করেছেন এবং ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিব্রত করেছেন।'

এজন্য রুহুল আমীনের বিরুদ্ধে 'সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮' অনুযায়ী 'অসদাচরণ'-এর অভিযোগে বিভাগীয় মামলা করা হয়। পরে তাকে কারণ দর্শানোর নির্দেশ, ব্যক্তিগত শুনানি গ্রহণ, তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগ করা হয়।

তদন্তে তার বিরুদ্ধে আনা 'অসদাচরণ'-এর অভিযোগ প্রমাণিত হয়। তবে তিনি বেশ কয়েকটি বাগান সৃজন করে জনস্বার্থের জন্য ইতিবাচক কাজ করেছেন বিধায় তার বিরুদ্ধে অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হলেও তাকে সর্বনিম্ন দণ্ড বা লঘুদণ্ড 'তিরস্কার' দেওয়া হয় বলে প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়েছে।

আরএমএম/এমএএইচ/

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।