দুর্নীতির দায়ে চাকরি হারালেন শিক্ষক নেতা কাওছার আলী শেখ
![দুর্নীতির দায়ে চাকরি হারালেন শিক্ষক নেতা কাওছার আলী শেখ](https://cdn.jagonews24.com/media/imgAllNew/BG/2023March/expel-20240423182425.jpg)
বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জাতীয়করণ আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়ে শিক্ষক মহলে সাড়া ফেলা কাওছার আলী শেখ দুর্নীতির দায়ে চাকরি হারিয়েছেন। তাকে চূড়ান্তভাবে বরখাস্তের বিষয়টি অনুমোদন দিয়েছে ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড।
ঢাকা বোর্ডের সচিব অধ্যাপক আজাদ হোসেন চৌধুরীর সই করা চিঠি থেকে এ তথ্য জানা গেছে। রাজধানীর যাত্রাবাড়ীর সবুজ বিদ্যাপীঠ স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রধান শিক্ষক ছিলেন কাওছার আলী।
চিঠিতে সূত্র হিসেবে ম্যানেজিং কমিটির সিদ্ধান্তসহ গত বছরের ১৩ নভেম্বরের আবেদন, বোর্ডের ২১ নভেম্বরের তদন্ত প্রতিবেদন, গত ২৮ মার্চের আপিল অ্যান্ড আরবিট্রেশন কমিটির যাচাই-বাছাই ও মতামত এবং কমিটি কর্তৃক যাচাই-বাছাইয়ের ভিত্তিতে ৪ এপ্রিলের ২৩০তম বোর্ড সভায় অনুমোদনের কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, সবুজ বিদ্যাপীঠ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক (বরখাস্তকৃত) মো. কাওছার আলী শেখের বিরুদ্ধে ম্যানেজিং কমিটি কর্তৃক আনীত অভিযোগ- সাহিদা পারভীনকে এমপিওভুক্ত করার প্রলোভনে দাবি করা ৬ লাখ টাকার মধ্যে সাড়ে ৪ লাখ টাকা আত্মসাৎ, ২০২০ সালে করোনা মহামারির সময় শিক্ষকদের প্রভিডেন্ট ফান্ডের ১ লাখ ৯৮ হাজার টাকা আত্মসাৎ, জি কিবরিয়া অ্যান্ড কোং ফার্মের অডিটে তিনি ২০১০ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত যাবতীয় তথ্য-উপাত্ত উপস্থাপনে ব্যর্থ হয়েছেন।
এছাড়া আয়ের খাতে ১ কোটি ৪২ লাখ ৭ হাজার ৪৮৯ টাকার অসঙ্গতি, ব্যয়ের খাতে ১ কোটি ৪৩ লাখ ৪৭ হাজার ২৫০ টাকার অসঙ্গতি, ২০১৬ সালে জাল সনদ ও খাতা টেম্পারিংয়ের মাধ্যমে নিজ আত্মীয় হোসেন শেখকে নিয়োগ, নতুন কারিকুলামের ব্যাপারে অসহযোগিতা, বিদ্যালয়ে সময় না দিয়ে ব্যবসায় ও শিক্ষক রাজনীতিতে সরব অংশগ্রহণ, বিধিবর্হিভূতভাবে অধ্যক্ষ পদবী ব্যবহার এবং রেজুলেশনের বাইরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ নথি নিজ জিম্মায় রাখার কথা বলা হয়েছে।
চিঠিতে আরও বলা হয়, এ অবস্থায় ঢাকা বোর্ডের আপিল অ্যান্ড আরবিট্রেশন কমিটির গত ২৮ মার্চের সভায় বাদী ও বিবাদী উভয়ের উপস্থিতিতে তদন্ত প্রতিবেদনের সুপারিশ এবং অভিযোগসমূহ পুঙ্খানুপুঙ্খ বিশ্লেষণপূর্বক ম্যানেজিং কমিটি কর্তৃক চূড়ান্ত বরখাস্তের বিষয়টি প্রমাণিত হয়। এ কারণে তাকে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়ার জন্য সুপারিশ করা হয়।
এরপর গত ৪ এপ্রিল অনুষ্ঠিত ২৩০তম বোর্ড সভায় বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক (বরখাস্তকৃত) মো. কাওছার আলী শেখের চূড়ান্ত বরখাস্তকরণের বিষয়ে ম্যানেজিং কমিটির গৃহীত সিদ্ধান্তটি অনুমোদন দেওয়া হয়েছে বলে চিঠিতে উল্লেখ করা হয়।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির ম্যানেজিং কমিটির কোনো সদস্য ও শিক্ষক কথা বলতে রাজি হননি। অন্যদিকে কাওছার আলী শেখ বলেন, `শুধুমাত্র শিক্ষকদের দাবি-দাওয়া নিয়ে আন্দোলন করায় আমাকে ষড়যন্ত্র করে চাকরিচ্যুত করা হলো। আমি বিষয়টি নিয়ে আইনি পদক্ষেপ নেবো।’
এএএইচ/এসআইটি/জেআইএম