চট্টগ্রাম বন্দর

মাল্টিপারপাস টার্মিনাল: আমিরাতের প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সমঝোতা

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৭:২৭ পিএম, ১৬ মে ২০২৪

চট্টগ্রাম বন্দরের বে-টার্মিনাল প্রকল্পসহ মাল্টিপারপাস টার্মিনাল নির্মাণ ও যন্ত্রপাতি সংগ্রহে সংযুক্ত আরব আমিরাতের আবুধাবি পোর্টস গ্রুপের সঙ্গে সমঝোতা স্মারক সই করেছে সরকার।

বৃহস্পতিবার (১৬ মে) রাজধানীর হোটেল ওয়েস্টিনে চট্টগ্রাম বন্দরের বে-টার্মিনাল প্রকল্পসহ মাল্টিপারপাস টার্মিনাল নির্মাণ সংক্রান্ত চট্টগ্রাম বন্দর ও আবুধাবি পোর্টস গ্রুপের মধ্যে সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) সই হয়।

সমঝোতা স্মারকে সই করেন চট্টগ্রাম বন্দরের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল মোহাম্মদ সোহায়েল এবং আবুধাবি পোর্টস গ্রুপের চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার সাইফ আল মাজরুই। এসময় নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরীসহ মন্ত্রণালয়ের অন্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, চট্টগ্রাম বন্দরের সক্ষমতা বাড়াতে নগরীর দক্ষিণ পাশে বঙ্গোপসাগরের তীরে বে-টার্মিনাল নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়। বে-টার্মিনাল নির্মাণের পরিকল্পনা নেওয়ার পর সেখানে ফিজিবিলিটি স্টাডির জন্য ২০১৭ সালে কনসালটেন্ট নিয়োগ করা হয়। কনসালটেন্ট প্রতিষ্ঠান ফিজিবিলিটি স্টাডি ও মাস্টারপ্ল্যান প্রণয়ন করে। গত বছরের ১৪ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী চূড়ান্ত মাস্টারপ্ল্যানের মোড়ক উন্মোচন করেন।

সমীক্ষা অনুযায়ী, মাস্টারপ্ল্যানের এক হাজার ২২৫ মিটার দীর্ঘ দুটি কন্টেইনার টার্মিনাল এবং এক হাজার ৫০০ মিটার দীর্ঘ একটি মাল্টিপারপাস টার্মিনালসহ মোট তিনটি টার্মিনাল রয়েছে। তিনটি টার্মিনালের দৈর্ঘ্য ৪ দশমিক ৯৫ কিলোমিটার। মাস্টারপ্ল্যানে মোট ১১টি জেটি রাখার প্রস্তাব করা হয়। চ্যানেলে যথোপযুক্ত নাব্যতা থাকায় সেখানে ১২ মিটার ড্রাফটের এবং ৩০০ মিটার দৈর্ঘ্যের জাহাজ ভেড়ানো সম্ভব হবে। আবহাওয়া এবং সাগরের বড় বড় ঢেউ থেকে রক্ষা করতে একটি ছয় কিলোমিটার দীর্ঘ ব্রেক ওয়াটার বা ঢেউ নিরোধক বাঁধ নির্মাণ করা হবে। বে-টার্মিনাল থেকে বহির্নোঙ্গরের দূরত্ব এক কিলোমিটার।

চট্টগ্রাম বন্দর, মাল্টিপারপাস টার্মিনাল: আমিরাতের প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সমঝোতা

মাল্টিপারপাস টার্মিনালটি চট্টগ্রাম বন্দর এবং আবুধাবি পোর্টস গ্রুপ যৌথভাবে নির্মাণ করবে। এক হাজার ২২৫ মিটার দৈর্ঘ্যের একটি কন্টেইনার টার্মিনাল সিঙ্গাপুরের পিএসএ এবং অন্যটি দুবাইয়ের ডিপি ওয়ার্ল্ডের অর্থায়ন করার সম্ভাবনা রয়েছে। ছয় কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের ব্রেক ওয়াটার ও এক্সেস চ্যানেল ড্রেজিং করবে বিশ্বব্যাংক।

বে-টার্মিনাল প্রকল্পের জন্য ৬৬ দশমিক ৮৫ একর ব্যক্তি মালিকানাধীন জমি এরই মধ্যে অধিগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে এবং ৫০০ দশমিক ৬৯ একর সরকারি খাস জমি অনুমোদন দিয়েছে সরকার। ব্রেক ওয়াটার নির্মাণের জন্য বিশ্ব ব্যাংকের বিনিয়োগ করতে পারে। বছরে ৫০ লাখ কন্টেইনার হ্যান্ডলিং লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে ২০২৬ সালে অপারেশনে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়েছে।

অনুষ্ঠানে নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, বর্তমানে চট্টগ্রাম বন্দরে বিদেশি বন্দর পরিচালনাকারীরা বিনিয়োগ করছে। আমি সম্ভাবনা ও স্বপ্ন দেখি, এমন সময় আসবে যখন চট্টগ্রাম বন্দর পৃথিবীর অন্য কোনো দেশের কার্যক্রম পরিচালনা করবে।

তিনি বলেন, চট্টগ্রাম বন্দর গত ১৫ বছরে আন্তর্জাতিক বন্দরের সক্ষমতা অর্জন করেছে। মোংলা বন্দরের আপগ্রেডেশন হচ্ছে। মোংলা বন্দর চট্টগ্রাম বন্দরের মতো সক্ষমতা অর্জন করবে। পায়রা বন্দরে নির্মাণাধীন জেটিতে ২০০ মিটার দৈর্ঘ্যের জাহাজ ভিড়েছে। এটি নতুন অনুভূতি। আগে মাদার ভেসেলে পণ্য পরিবহনের জন্য আমাদের কলম্বো ও সিঙ্গাপুর বন্দরের ওপর নির্ভরশীল হতে হতো। বর্তমানে মাতারবাড়ীতে গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মিত হচ্ছে। এতে করে নির্ভরশীলতা কমে যাবে। মাতারবাড়ী বন্দর আঞ্চলিক ‘হাব’-এ পরিণত হবে।

অনুষ্ঠানে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব মো. মোস্তফা কামাল, চট্টগ্রাম বন্দরের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল মোহাম্মদ সোহায়েল, বাংলাদেশে নিযুক্ত সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাষ্ট্রদূত আব্দুল্লা আলী আব্দুল্লা কাসিফ আল মৌদি, আবুধাবি পোর্টস গ্রুপের ইন্টারন্যাশনাল অফিসের রিজিওনাল চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার আহমেদ আল মুতাওয়া প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

আরএমএম/এমকেআর/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।