শখ থেকে স্বপ্নপূরণ রাইসুলের

জাগো নিউজ ডেস্ক
জাগো নিউজ ডেস্ক জাগো নিউজ ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৮:১২ পিএম, ১৯ মে ২০২৪

রাইসুল ইসলাম পাটওয়ারী, যিনি মো রাইসুল ইসলাম নামেও পরিচিত, নিজের উদ্যম ও পরিশ্রমের মাধ্যমে সামাজিকমাধ্যম ফেসবুকে জনপ্রিয়তা অর্জন করেছেন। পড়াশোনার পাশাপাশি ভিডিও কনটেন্ট তৈরি করে নিজের খরচ নিজেই চালাচ্ছেন। রাইসুলের গ্রামের বাড়ি নোয়াখালী। তার বাবা মো. রফিকুল ইসলাম ও মা সাজেদা বেগম। দুজনেই পেশায় শিক্ষক। তিন ভাই-বোনের মধ্যে রাইসুল মেজো। মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকে জিপিএ-৫ পেয়েছেন এবং ভবিষ্যতে বিদেশে পড়াশোনা করার ইচ্ছা রয়েছে।

শুরুটা যেভাবে
রাইসুল ছোটবেলা থেকেই ভিডিও বানানোর শখ ছিল। ২০১৬ সালে সাহস করে ইউটিউবে ভিডিও বানানো শুরু করলেও নানা প্রতিকূলতার কারণে থেমে যেতে বাধ্য হন। তবে ২০২০ সালে তিনি পুরো দমে কনটেন্ট ক্রিয়েশনে মনোনিবেশ করেন। প্রথমে ইউটিউবে সফলতা না পাওয়ায় ২০২২ থেকে ফেসবুকে কনটেন্ট তৈরি শুরু করেন। ২৫,০০০ টাকার স্মার্টফোন দিয়েই তার কনটেন্ট জার্নি চালিয়ে যাচ্ছেন।

রাইসুল বলেন, ‘ছোটবেলা থেকেই ভিডিও বানানো আমার শখ ছিল। আসলে সত্যি বলতে আমার ভিডিও বানানোটা খুবই শখের একটা কাজ। আমি সব সময় ক্যামেরার সামনে প্রচুর বকবক করতাম। খুব ইচ্ছে ছিল যে, আমার ভিডিও দেখে যেন একটা মানুষ হলেও হাসে। এরপর এই পথ বেছে নেওয়া, আমার মনে হয় ফেসবুকই একমাত্র মাধ্যম যার মাধ্যমে সহজে আমি আমার কনটেন্ট দর্শকের কাছে পৌঁছাতে পারি।’

শখ থেকে স্বপ্ন
রাইসুল কনটেন্ট ক্রিয়েশনের মাধ্যমে নিজের হাতখরচ চালাতে পারছেন। নিজের ছোটখাটো ইনকাম দিয়ে মা-বাবার জন্য কিছু গিফট কেনা, বন্ধুদের মাঝে কিছু গিফট দেওয়া এবং ফলোয়ারদেরও উপহার দেওয়া তার ভালো লাগে।

বন্ধুদের গ্রহণযোগ্যতা
শুরুর দিকে বন্ধুদের মাঝে স্ট্রাগল করতে হলেও, অল্প কয়েকজন বন্ধুর সাপোর্টেই কাজ করার ইচ্ছা জেগে থাকে। বর্তমানে তার বন্ধুরা অনেক সাপোর্টিভ, বিশেষ করে ভার্সিটির বন্ধুদের সঙ্গে তিনি ভিডিও বানাতে কমফোর্টেবল ফিল করেন।

নিরবচ্ছিন্নভাবে কাজ করে যাওয়া
প্রথম ভিডিও করার পর কয়েকমাস ঘরবন্দী থাকতে হয় রাইসুলকে। তখন ভালো মানের ভিডিও তৈরি করা ছিল তার জন্য দুঃসাধ্য। ২০২২ সালের শেষের দিকে ইউটিউব ছেড়ে ফেসবুকে পুরোদমে লেগে পড়েন এবং তারপর থেকে পেছনে তাকাতে হয়নি। তিনি নিয়মিত ভিডিও বানিয়ে যান। ১০০ ভিউস হলেও ভিডিও বানানো বন্ধ করতেন না। বর্তমানে প্রায়শই মিলিয়ন ভিউস পেয়ে থাকেন।

নোয়াখালী থেকে যাত্রা
রাইসুল বিশ্বাস করেন, যারা হাল না ছেড়ে নিয়মিত কাজ করে, তারা একদিন সফল হবে। নোয়াখালীর অনেক কনটেন্ট ক্রিয়েটরদের মধ্যে রাইসুল ব্যতিক্রম কারণ তিনি কখনোই কনটেন্ট ক্রিয়েশন বন্ধ করেননি।

ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা
রাইসুলের ভবিষ্যৎ ইচ্ছা একজন ভালো কিছু কাজ উপহার দেওয়া। নিজের প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে তরুণ প্রজন্মের মাঝে ভালো সামাজিক বার্তা পৌঁছে দেওয়া। যারা পেশা হিসেবে ইউটিউব বা ফেসবুকে ক্যারিয়ার গড়তে চান তাদের উদ্দেশ্যে রাইসুল বলেন, ‘ফেসবুক/ইউটিউবে ভালো ক্যারিয়ার আছে সামনে। এটা এমন একটা প্ল্যাটফর্ম যেখানে আপনি যদি আপনার প্রতিভা দেখাতে পারেন তাহলেই আপনি প্রায় সফল, শুধু লেগে থাকতে হবে!’

রাইসুল ইসলামের গল্প প্রমাণ করে যে, শখ থেকে শুরু করে কঠোর পরিশ্রম ও ধৈর্যের মাধ্যমে স্বপ্ন পূরণ সম্ভব। তার উদাহরণ নতুন প্রজন্মকে অনুপ্রাণিত করবে এবং দেখাবে যে পরিশ্রমের মাধ্যমে সবকিছুই অর্জন করা সম্ভব।

 জেএইচ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।