সংখ্যালঘু কমিশন করবে ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১২:৫৩ এএম, ২২ মে ২০২৪

দেশে সংখ্যালঘুদের অধিকার রক্ষায় সংখ্যালঘু কমিশন গঠন করার কথা জানালেন একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সদ্য বিদায়ী সভাপতি শাহরিয়ার কবির।

তিনি বলেন, ‘সংখ্যালঘুদের অধিকার রক্ষায় সরকারের কর্মসূচি পর্যাপ্ত মনে হচ্ছে না। দীর্ঘদিন ধরে আমরা সংখ্যালঘু কমিশন গঠনে আইন প্রণয়নের দাবি জানিয়েছি। সরকার যদি তা করতে না পারে, তবে আমরাই জাতীয় সংখ্যালঘু কমিশন গঠন করবো।’

মঙ্গলবার (২১ মে) জাতীয় প্রেস ক্লাবের আবদুস সালাম হলে নতুন কার্যনির্বাহী কমিটি ঘোষণা অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

এ বিষয়ে অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক বলেন, ‘ভারত, কানাডা, অস্ট্রেলিয়ায় বিচারিক ক্ষমতাসম্পন্ন জাতীয় সংখ্যালঘু কমিশন রয়েছে। বাংলাদেশে যদিও জাতীয় মানবাধিকার কমিশন রয়েছে, তবে তাদের তেমন ক্ষমতা দেওয়া হয়নি। আমরা এখনো সরকারের কাছে বিচারিক ক্ষমতাসম্পন্ন সংখ্যালঘু কমিশনের দাবি জানাই। সরকার যদি না পারে, তবে আমরা নিজেরাই এ কমিশন গড়ে তুলতে উদ্যোগ নেবো।’

একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির অষ্টম জাতীয় সম্মেলনের পরে ৯১ সদস্যবিশিষ্ট নতুন কমিটির সদস্যদের নাম আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করা হয়েছে।

নবনির্বাচিত কমিটির সভাপতির দায়িত্বে এসেছেন শহীদজায়া শ্যামলী নাসরিন চৌধুরী। সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বে এসেছেন আগের কমিটির আইসিটি সেলের প্রধান শহীদ সন্তান আসিফ মুনীর তন্ময়।

নতুন কমিটিতে নির্বাহী সভাপতির দায়িত্বে রয়েছেন আগের কমিটির সাধারণ সম্পাদক কাজী মুকুল। সাতজন সহ-সভাপতির মধ্যে রয়েছেন তিনজন শহীদের সন্তান ড. মেঘনা গুহ ঠাকুরতা, তানভীর হায়দার চৌধুরী শোভন ও শমী কায়সার। এছাড়া সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্বে রয়েছেন সমাজকর্মী কেশব রঞ্জন সরকার।

কমিটির উপদেষ্টা মুনতাসীর মামুন বলেন, ‘কমিটি পরিচালনা করতে গিয়ে পদে পদে প্রতিবন্ধকতার শিকার হয়েছি। উচ্চ পর্যায় থেকে ভুল তথ্য দেওয়া হয়েছে আমাদের। আমাদের পরিত্যাজ্য করার একটা সিন্ডিকেট রয়েছে। অথচ সরকার যখন বিপদে পড়ে, তখন সরকারের পক্ষ থেকে শাহরিয়ার কবিরকে অনুরোধ জানায় তাদের পক্ষে যেন বিবৃতি দেয়।’

সাম্প্রদায়িকতা ও জাতিগত বিদ্বেষের বিস্তার ঘটছে উল্লেখ করে নবনির্বাচিত কমিটি অনলাইন প্ল্যাটফর্মে এ বিষয়ে সক্রিয় হবে বলে জানান যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মারুফ রসূল। পাশাপাশি দেশে সংখ্যালঘু নিপীড়নের ঘটনায় নির্যাতিত নারীরা যেন আইনি সহায়তা পান সেজন্য কাজ করার কথা জানিয়েছে নতুন কমিটি।

সারাদেশে ৬২টি এলাকাকে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করেছে কমিটি। এসব এলাকায় নির্যাতনের ঘটনা ঘটলে ১৩টি মেডিকেল টিম কাজ শুরু করবে। কারণ হিসেবে কমিটির সদস্যরা বলেন, নির্যাতনের শিকার নারীদের মাত্র ১০ শতাংশ বিচার চাইতে যান। তখন অনেকাংশে দেখা যায়, ঘটনার আলামত নষ্ট করে ফেলা হয়েছে বা ভুক্তভোগীদের শারীরিক পরীক্ষার সময় পেরিয়ে যায়। তখন মামলার কার্যক্রমে জটিলতা দেখা দেয়।

নির্মূল কমিটি ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে হয়রানির শিকার ভিকটিমদের আইনি সহায়তা দেবে বলেও প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। কমিটির সাধারণ সম্পাদক আসিফ মুনীর তন্ময় জানান, নতুন প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় আলোকিত করতে একাত্তরের ১১ জন শহীদ বুদ্ধিজীবীর নামে তরুণ বিগ্রেড গঠন করা হয়েছে। নিয়মিত প্রশিক্ষণ ও পাঠদান কর্মসূচির মাধ্যমে তাদের আলোকিত মানুষ হিসেবে গড়ে তোলা হবে।

একাত্তরের মুক্তিসংগ্রামের ঐতিহাসিক আলোকচিত্র, ভিডিওচিত্র এবং নথিপত্র রাষ্ট্রীয় সম্পত্তি হিসেবে ঘোষণা করার দাবি নিয়ে কাজ করবে নব-নির্বাচিত কেন্দ্রীয় পরিষদ।

৫৫ সদস্যবিশিষ্ট কেন্দ্রীয় উপদেষ্টা কমিটির সভাপতির পদে রয়েছেন শাহরিয়ার কবির। সদস্য হিসেবে রয়েছেন সাবেক আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ, অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক, অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি শামসুল হুদা, অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি মমতাজউদ্দিন আহমেদ, বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক অনুপম সেন, অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন, বীর মুক্তিযোদ্ধা নাট্যজন রামেন্দু মজুমদার, বীর মুক্তিযোদ্ধা নাট্যজন নাসির উদ্দীন ইউসুফ, সংসদ সদস্য ও শহীদ পরিবারের সন্তান মানবাধিকারকর্মী আরমা দত্ত প্রমুখ।

আরএএস/কেএসআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।