তৃতীয়-চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী

পিএসসির মাধ্যমে নিয়োগের সুপারিশ পর্যালোচনা করে সিদ্ধান্ত

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০১:৪৮ পিএম, ২৮ মে ২০২৪
সচিবালয়ের গণমাধ্যম কেন্দ্রে ‘বিএসআরএফ সংলাপে’ জনপ্রশাসনমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন

সরকারি কর্মকমিশনের (পিএসসি) মাধ্যমে ১৩ থেকে ২০তম গ্রেড (আগের তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণি) কর্মচারী নিয়োগে কমিটির সুপারিশ পর্যালোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন জনপ্রশাসনমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন।

মঙ্গলবার (২৮ মে) সচিবালয়ের গণমাধ্যম কেন্দ্রে ‘বিএসআরএফ সংলাপ’ অনুষ্ঠানে এ কথা জানান প্রতিমন্ত্রী। বাংলাদেশ সেক্রেটারিয়েট রিপোর্টার্স ফোরাম (বিএসআরএফ) এ সংলাপের আয়োজন করে।

মন্ত্রী জানান, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের একজন অতিরিক্ত সচিবের নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছিল। সেই কমিটি পিএসসির মাধ্যমে ১৩ থেকে ২০তম গ্রেডের কর্মচারীদের নিয়োগের সুপারিশ করেছে।

আগামী তিন মাসের মধ্যে তাদের সুপারিশ পর্যালোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলেও জানিয়েছেন ফরহাদ হোসেন।

জনপ্রশাসনমন্ত্রী বলেন, ‘১৩-২০ গ্রেডের অর্থাৎ তৃতীয় বা চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের নিয়োগের জন্য কর্তৃপক্ষ এবং নিয়োগের পদ্ধতি নির্ধারণের জন্য অতিরিক্ত সচিবের নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছিল। কমিটি গত ১১ জানুয়ারি প্রতিবেদন দাখিল করে। তাদের রিপোর্ট নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছে যে এটি সঠিক কি না। এতে কোনো ত্রুটি আছে কি না।’

তিনি বলেন, ‘পর্যালোচনা শেষে আমরা এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবো। এটি প্রক্রিয়াধীন। আমরা কি পিএসসির মাধ্যমে নিয়োগ দেবো, না কি একটি কর্তৃপক্ষ করব। তবে কমিটি ১৩-২০ গ্রেডের সরকারি কর্মচারীদের নিয়োগের জন্য সরকারি কর্ম কমিশনকে দায়িত্ব প্রদানের সুপারিশ করেছে। সরকারি কর্মকমিশন বলেছে তারা এটা করতে সক্ষম হবে।’

আরও পড়ুন

‘আপনাদের বলে রাখতে চাই- এই কমিটির সুপারিশ চূড়ান্ত নয়। আমরা এটি নিয়ে আরও চিন্তা-ভাবনা করছি, বিষয়টি নিয়ে আমরা আরও বিস্তারিত আলোচনা করবো। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গেও আমরা বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করবো। এছাড়া আমরা আরও কিছু কিছু মন্ত্রণালয় এবং দপ্তরের মতামতও নেবো। কিছু টেকনিক্যাল মিনিস্ট্রি আছে, তারা তাদের লোক কীভাবে নেবে, সেটার একটা ব্যাপার আছে। এটা যখন ওখানে (পিএসসি) হবে সেটা নিয়ে বিভ্রান্তি তৈরি হয় কি না।’

ফরহাদ হোসেন বলেন, ‘কারণ বেশ কিছু জটিলতা ওখানে রয়েছে। কারিগরি কিছু বিষয় রয়েছে। সেটি কীভাবে হবে, আলাপ-আলোচনা সাপেক্ষে আমরা পুরোপুরি সিদ্ধান্ত নেবো। আশা করি আগামী তিন মাসের মধ্যে বিষয়টি শেষ করতে পারবো।’

অযথা পদোন্নতি নয়, আরও কর্মকর্তা প্রয়োজন

যথাযথ নীতিমালা অনুসরণ করে প্রশাসনে পদোন্নতি এবং পদায়ন করা হয় বলেও দাবি করেন মন্ত্রী। অনেক সময় কর্মকর্তারা বিদেশে প্রশিক্ষণ এবং উচ্চশিক্ষার জন্য থাকেন, কেউ কেউ অসুস্থ থাকেন। এছাড়া অবসরের বিষয়টি মাথায় রেখে অনেক সময় অতিরিক্ত কর্মকর্তাদের পদোন্নতি দেওয়া হয় বলেও জানান জনপ্রশাসনমন্ত্রী।

তিনি বলেন, ‘প্রয়োজনের থেকে আমরা বেশি পদোন্নতি দিচ্ছি, সেটা কাজে লাগছে। কাউকে কিন্তু অযথা প্রমোশন দিয়ে, ডেস্ক নেই তার কোনো কাজ নাই, এ রকম কিছু নাই কিন্তু। বরং আমাদের আরও (কর্মকর্তা) প্রয়োজন, সে অনুযায়ী ভবিষ্যতের পরিকল্পনাগুলো আছে।’

প্রয়োজন অনুযায়ী সব মন্ত্রণালয়ের অর্গানোগ্রাম পুনর্নির্ধারণ করা হচ্ছে বলেও জানিয়েছেন ফরহাদ হোসেন।

ভোটের আগে বিশেষ পরিস্থিতিতে কয়েকজন সচিবকে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী সব সময় চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ নিরুৎসাহিত করেন। এখন আমরা সাধ্যমত চেষ্টা করছি ভালো লোক খুঁজে দেওয়া। সব সময় চুক্তিভিত্তিক নিয়োগকে নিরুৎসাহিত করে এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর অনুশাসনও রয়েছে। চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দিলে যার সুযোগ ছিল তিনি হয়তো বঞ্চিত হয়ে যান।’

মাঠ পর্যায়ে কর্মকর্তাদের গাড়ি কেনার বিষয়ে ফরহাদ হোসেন বলেন, ‘আমাদের অনেক কাজ। সে অনুযায়ী ইউএনওদের ঠিকমতো কাজ করতে হবে। সেখানে তাদের গাড়ির প্রয়োজন। মাঠ পর্যায়ের গাড়িগুলো ১৭ বছরের পুরোনো।’

মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের জন‌্য মোট ২৬১টি গাড়ি কেনা হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এর মধ্যে ডিসিদের গাড়ি ৬১টি। বাকিগুলো ইউএনওদের। সরকারি প্রতিষ্ঠান প্রগতি ইন্ডাস্ট্রিজের কাছে ১৬১টি গাড়ি তৈরির সরঞ্জাম রয়ে গেছে। প্রতিটি গাড়ির দাম মূলত ৩৫ লাখ ৩৮ হাজার ৭২০ টাকা। এরমধ্যে প্রতিটি গাড়ির জন্য এক কোটি ১০ লাখ ৩১ হাজার ২৮০ টাকা সরকারের ট্যাক্স। এনবিআর বা অর্থ মন্ত্রণালয় টাকাটা পেয়ে যাচ্ছে। অনেকে হয়তো মনে করছে এত দামি গাড়ি।’

বিএসআরএফ সভাপতি ফসিহ উদ্দীন মাহতাবের সভাপতিত্বে সংলাপ সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক মাসউদুল হক।

আরএমএম/এমএইচআর/জেডএইচ/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।