বাংলা একাডেমির ডিজি

গণহত্যা-জনবিরোধী রাজনীতিতে জড়িত থাকলে পুরস্কার বাতিল

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৪:২২ পিএম, ২৬ জানুয়ারি ২০২৫

বাংলা একাডেমি পুরস্কারের তালিকা প্রকাশের পর অভিযোগ ওঠায় তা স্থগিত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক (ডিজি) মোহাম্মদ আজম। তালিকায় নাম থাকা কারও বিরুদ্ধে গণহত্যা ও জনবিরোধী রাজনীতিতে জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া গেলে পুরস্কার বাতিল করা হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।

রোববার (২৬ জানুয়ারি) সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলনে মহাপরিচালক এ কথা বলেন। এসময় সংস্কৃতি বিষয়ক উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী উপস্থিত ছিলেন।

বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক বলেন, সম্প্রতি বাংলা একাডেমি পুরস্কার ঘোষিত হলেও আমরা বিভিন্ন মাধ্যম থেকে নানা ধরনের মনোভাব ও প্রতিক্রিয়া দেখেছি। আমরা পুরো ব্যাপারটা আমলে এনেছি। আমাদের ঘোষিত পুরস্কারের তালিকাটি সাময়িক স্থগিত করা হয়েছে।

তিনি বলেন, আমরা এই তালিকাটি রিভিউ করবো। প্রধানত গণহত্যা ও জনবিরোধী রাজনীতির সঙ্গে যদি কারও সরাসরি সংশ্লিষ্টতার কোনো প্রমাণ পাই, যে অভিযোগ আমাদের সামনে এসেছে, আমরা সেটা একটু খতিয়ে দেখছি। অনুসন্ধান করছি। যদি এ ধরনের সরাসরি সাক্ষ্য-প্রমাণ পাওয়া যায়, তাহলে নিশ্চয়ই আমরা সেটা বাতিল করবো। এর পরিবর্তে সেখানে কী ব্যবস্থা গ্রহণ করা যায়, সে বিষয়ে আমাদের যে কমিটিগুলো কাজ করছে তারা সিদ্ধান্ত নেবে। আশা করছি সেটা আমরা তিন কর্মদিবসের মধ্যেই করতে পারবো।

তাড়াহুড়া করে কেন তালিকা করে আবার স্থগিত করা হলো, এ বিষয়ে ডিজি বলেন, এটা আমাদের ভুল হয়েছে। বাংলা একাডেমির ঐতিহাসিকভাবে পুরস্কার প্রদানের সিস্টেমটাতে তাড়াহুড়াটা আছে। প্রস্তাবকরা প্রস্তাব দেন, এরপর একটি নির্দিষ্ট কমিটির সামনে খোলা হয়। কমিটি সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। বিদ্যমান পদ্ধতি মেনেই আমরা কাজ করেছি।

তিনি বলেন, আমরা পুরস্কারপ্রাপ্তদের তালিকা প্রকাশের পর তিনদিনের জন্য স্থগিত করেছি। এটা হয়তো বাংলা একাডেমি কিংবা যাদের নাম ঘোষণা করা হয়েছে তাদের সঙ্গে পুরোপুরি সদাচারণ করা হয়নি। কিন্তু সেটা যথার্থভাবে ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ ও নিরীক্ষার সঙ্গে কোনো সংশোধনের সুযোগ নেওয়াটাই অপেক্ষাকৃত অধিক সততা।

এবার যে দশজনের নাম ঘোষণা করা হয়েছে তার মধ্যে একজন নারীও নেই। এ বিষয়টি আপনারা পুনর্বিবেচনা করবেন কি না, জানতে চাইলে মোহাম্মদ আজম বলেন, যদি পুনর্বিবেচনার ক্ষেত্রে আমাদের যে স্ট্রাকচার আছে, সেটার মধ্যে এই প্রশ্নটিও যথাযথভাবে অ্যাড্রেস করার সুযোগ থাকে, সেটাও পুরস্কার কমিটি দেখবে।

সরকারি দায়িত্বশীল বা গোয়েন্দা সংস্থার মাধ্যমে কেউ অপরাধের সঙ্গে যুক্ত ছিল কি না সেই বিষয়টি যাচাইয়ের কাজ করা হবে বলেও জানিয়েছেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক।

সংস্কৃতি বিষয়ক উপদেষ্টা বলেন, ভুল করে বসে থাকার চেয়ে ভুল স্বীকার করে সংশোধন করাটা শ্রেয়।

বাংলা একাডেমি সংস্কারে হবে কমিটি

মহাপরিচালক বলেন, বাংলা একাডেমির সার্বিক পরিস্থিতি এবং সার্বিক পরিচালনা পদ্ধতি নিয়ে নানান পক্ষের কিছু অসন্তোষ আছে। অনেকদিন আগে আইন হয়েছে, বিধি হয়েছে, প্রবিধানমালা হয়েছে। সেগুলো আমাদের পুনঃনিরীক্ষার প্রয়োজন অনেকদিন ধরেই বোধ করছিলাম।

মোহাম্মদ আজম বলেন, ব্যস্ততার জন্য আমরা ঠিক করেছিলাম এগুলো মার্চ থেকে শুরু করবো। সেটা এখন আমরা একটু এগিয়ে এনে হয়তো খুব শিগগির একটা সংস্কার কমিটি গঠন করে, যেখানে মানুষের বুদ্ধিভিত্তিক ও সৃজনশীল কাজের যুক্ত বিভিন্ন পক্ষ যারা চিন্তা-ভাবনা করছেন বা এ বিষয়ে আগ্রহী তাদের একটা অংশগ্রহণ থাকবে। কমিটিটা অন্তর্ভুক্তিমূলক করে পুরো ব্যাপারটা রিভিউ করতে চাইবো। কী কী ভাবে বাংলা একাডেমিকে নতুন চিন্তা-ভাবনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট করা যায়, আরও বেশি কর্মক্ষম করা যায়। শিগগির আমরা এ ধরনের একটি কমিটি করবো। আমরা কর্মপরিকল্পনা করছি, কাজ শুরু করছি, শিগগির আপনাদের জানাতে পারবো।

আরএমএম/এমএইচআর/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।