মাধ্যমিক শিক্ষকদের এন্ট্রিপদ নবম গ্রেড ধরে যৌক্তিক পদসোপান চাই

মো. আব্দুল বাছেত
একটি রাষ্ট্র ব্যর্থ কি সফল তা অনেকাংশ নির্ভর করে ওই দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা কেমন তার ওপর। যে দেশে শিক্ষা ব্যবস্থা বিশেষ করে শিক্ষকদের জীবনযাত্রার মান যত বেশি উন্নত, সে দেশের সার্বিক উন্নয়ন তত সমৃদ্ধ। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ তথা ভারত, চীন, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, জার্মান, ফিনল্যান্ড, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যে শিক্ষার মান সর্বাগ্রে, যেখানে শিক্ষকবৃন্দ আর্থিক এবং সম্মানের দিক থেকে উচ্চ আসনে সমাসীন। চীনে শিক্ষকদের এতো মর্যাদা যার কারণে ছোট থেকেই ছেলে-মেয়েরা শিক্ষক হওয়ার স্বপ্ন দেখে। অপরদিকে জার্মানি শিক্ষকদের বেতন অন্য যে কোন প্রফেশন থেকে বেশি। এটা দেখে ডাক্তার ইঞ্জিনিয়ারসহ অন্যরা জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মার্কেলের কাছে দাবি করেছিলেন তাদের বেতন যেন শিক্ষকদের সমান করা হয়। উত্তরে তিনি বলেছিলেন ‘‘How can I compare you to those who taught you”
উপরিউক্ত সকল দেশে মানসম্পন্ন শিক্ষা বিরাজ করছে। যেখানে শিক্ষাখাতে সবচেয়ে বেশি পুঁজি বিনিয়োগ করে থাকেন। ইউনেস্কো নীতিমালা অনুযায়ী প্রত্যেক দেশে শিক্ষাখাতে জিডিপির কমপক্ষে ৬% এবং মোট বাজেটের ২৫% অংশ বরাদ্দ রাখা উচিত। উনচল্লিশটি দেশে গবেষনায় দেখা গেছে, শিক্ষকদের ১৫% বেতন বৃদ্ধির কারণে শিক্ষার্থীদের শিখন দক্ষতা ৬%-৮% বৃদ্ধি পেয়েছে (সবারজন্য শিক্ষা-২০০৪)। অথচ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রথম বাজেটে প্রতিরক্ষা খাতের চেয়ে শিক্ষা খাতে ৭% বরাদ্দ বেশি রেখেছেন। তাই বঙ্গবন্ধু বর্তমানের কথা চিন্তা করেই ১৯৭০ সালে নির্বাচনের পূর্বে এক টেলিভিশন সক্ষাতকারে বলেছিলেন- “সুষ্ঠু সমাজ ব্যবস্থা গড়ে তোলার জন্য শিক্ষাখাতে পুঁজি বিনিয়োগের চেয়ে উৎকৃষ্ট বিনিয়োগ আর কিছু হতে পারে না”।
একুশ শতকে পৃথিবীজুড়ে শিক্ষা একটি কৌশলগত ইস্যু। আর এই কৌশলকে বাস্তবে রুপায়িত করবেন শ্রদ্ধেয় শিক্ষকবৃন্দ, যাদের হাতেই গড়ে উঠবে নৈতিক মূল্যবোধে উজ্জ্বীবিত পরবর্তী প্রজন্ম। বাংলাদেশর স্বপ্নদ্রষ্টা জাতীর জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সেই জন্যেই বলেছিলেন- “আগামী প্রজন্মের ভাগ্য শিক্ষকদের ওপর নির্ভর করছে”। শিক্ষা জাতির মেরুদন্ড হিসেবে মাধ্যমিক শিক্ষা জাতির হৃদপিন্ড এবং এই স্তরের শিক্ষকরা জাতির ফুসফুস। অথচ আজো এই স্তরের শিক্ষকদের ২য় শ্রেণির মাস্টার হিসেক্ষে গণ্য করা হচ্ছে, যা মানসম্পন্ন শিক্ষার্জনে পরিপন্থি। যে দেশের শিক্ষকরা ২য় শ্রেণির, তাদের দ্বারা প্রথম শ্রেণির নাগরিক তৈরি কীভাবে সম্ভব। অবশ্য ১৯৫৪ সালের যুক্তফ্রন্টের ২১ দফার ৯ দফায় বলা হয়েছিল, ‘শিক্ষকদের সম্মানজনক বেতন ও সুবিধা দেওয়া হবে’। অথচ সেই দাবি কখনোই আমলে নেয়া হয়নি, এমনকি মুজিববর্ষে এসেও।
শিক্ষাক্ষেত্রে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু যে স্বপ্ন দেখেছিলেন, ১৯৭৫ সালে ১৫ আগস্টে তাকে যদি নরপিশাচরা নির্মম ভাবে হত্যা না করতো, তাহলে অনেক আগেই আমরা সরকারি মাধ্যমিকের শিক্ষকরা প্রথম শ্রেণির কর্মকর্তা হিসেবে ভূষিত হতাম। ০২/০৫/১৯৭৫ সালে জতির জনক সরকারি মাধ্যমিকের সহকারী শিক্ষকের পদকে ২শ্রেণির গেজেটেড পদমর্যাদা ঘোষণা দিয়েছিলেন। তারপর দীর্ঘ সময় অতিবাহিত হলেও অবশেষে ৩৮ বছর পর ১৫/০৫/২০১২ তারিখে বঙ্গবন্ধু কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরতœ শেখ হাসিনার ঘোষণা ও নির্দেশনা মোতাবেক সহকারী শিক্ষক পদটি ২য় শ্রেণির গেজেটেড মর্যাদায় কার্যকর হয়।
দুঃখের বিষয় হলো- স্বাধীনতার সূচনা লগ্নে পিটিআই ইন্সট্রাক্টর, সাব-রেজিস্টার, উপজেলা সমাজসেবা অফিসার, হিসাবরক্ষণ, সমবায় অফিসার, নির্বাচন অফিসার, প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা, থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ইত্যাদি পদগুলো ছিল জাতীয় বেতনস্কেল সরকারি মাধ্যমিকের সহকারী শিক্ষকদের সমগ্রেডের পদ অথার্ৎ ১০ম গ্রেড ভূক্ত পদ। বর্তমানে উপর্যুক্ত পদসহ অন্যান্য ডিপার্টমেন্টের সমমানের পদের আপগ্রেড করা হয়েছে অর্থাৎ ৯ম গ্রেড (১ম শ্রেণি) করা হয়েছে।
কিন্তু খুবই দুঃখজনক হলেও সত্যি, সরকারি মাধ্যমিকের সহকারী শিক্ষক এখনো সেই ১০ গ্রেডে রয়ে গেছেন। ইতোমধ্যে উপজেলা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা, সহকারী ইন্সট্্রাক্টর, উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তাসহ আরো বিভিন্ন ডিপার্টমেন্টের ১০ম গ্রেডের পদকে ৯ম গ্রেড তথা ১ম শ্রেণির পদে উন্নীতকরণের প্রস্তাব সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে বিবেচনাধীন। অপরদিকে নার্স, পরিবার পরিকল্পনা পরিদর্শক, খাদ্য পরিদর্শক, কৃষি মন্ত্রণালয়ের ব্লক সুপারভাইজার (উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা ) পদসমূহ নিম্ন গ্রেড (১৩,১২,১১) হতে ১০ম গ্রেডে তথা ২য় শ্রেণির গেজেটেড পদে উন্নীত করা হয়। বর্তমানে প্রাথমিকের প্রধান শিক্ষক ও অডিটর পদ ১০ম গ্রেডে উন্নীতকরণের জন্য মন্ত্রণালয়ে বিবেচনাধীন। এগুলো বাস্তবায়নের জন্য শিক্ষাবান্ধব সরকারকে সাধুবাদ জানাচ্ছি।
কিন্তু অত্যন্ত দুঃখ ভারাক্রান্ত হৃদয়ে বলতে হয়, ৪৫ বছর আগে জাতির জনকের ঘোষিত ২য় শ্রেণির সহকারী শিক্ষক পদের মানোন্নয়নের কোন পদক্ষেপ এখনো নেওয়া হয়নি। যার ফলশ্রুতিতে সরকারি মাধ্যমিক শিক্ষক সমাজের মধ্যে একধরনের অশান্তি বিরাজ করছে। সাংবিধানিক অধিকার প্রশ্নে সমগ্রেডের এবং পরস্পর বদলিযোগ্য পদের একটি আপডেট হলে বাকি পদগুলো আপডেট হওয়ার দাবিদার।
হতাশাজনক হলেও সত্য যে, জাতির বিনির্মাণের কারিগর সরকারি মাধ্যমিক সহকারী শিক্ষকগণের পদের আপগ্রেড হয় না। বর্তমানে তিনটি বিসিএস (৩৪,৩৫,৩৬তম) হতে এক ঝাঁক মেধাবী, তরুণ শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। পিএসসি’র মাধ্যমে আরো ২০০০ শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়াধীন। এসব মেধাবী তরুণ শিক্ষকদের মাধ্যমে মাধ্যমিক শিক্ষার মানোন্নয়ন ও গুণগত শিক্ষা বাস্তবায়নের পথ আরো ত্বরান্বিত করবে। কিন্তু মাধ্যমিক স্তরের পদোন্নতি খুবই সীমিত ও ধীরগতি হওয়ায় এবং পদটি ১ম শ্রেণির না হওয়ায় মেধাবীরা শিক্ষকতা পেশায় আগ্রহ পোষণ করছে না এবং তরুণ মেধাবী শিক্ষকবৃন্দ শিক্ষকতায় আসলেও পরে ছেড়ে অন্য পেশায় চলে যাচ্ছেন। ফলে মানসম্পন্ন শিক্ষার্জনের ব্যত্যয় ঘটবে বলে মনে করছি।
সরকারি মাধ্যমিক শিক্ষা ক্ষেত্রটিতে পদোন্নতির সুযোগ খুবই সীমিত। মাত্র ৪-৫% শিক্ষকবৃন্দ পদোন্নতির সুযোগ পায়। বাকী ৯৫-৯৬% শিক্ষক যে পদে (সহকারী শিক্ষক) চাকুরি শুরু সেই পদেই ৩০-৩৫ বছর চাকরি করে অবসরে চলে যাচ্ছেন। এ যেন সরকারি মাধ্যমিক শিক্ষকদের হৃদয়ের রক্তক্ষরণ ও গুমরে গুমরে কান্না থামানোর কেও নেই,আমাদের দেখার কেও নেই। তাইতো দুঃখ করে ফেসবুকে এক শ্রদ্ধেয় শিক্ষক স্ট্যাটাস দিয়েছিলেন- “আমি মারা গেলে আমার কবরে সহকারী শিক্ষক কথাটি লিখে রেখ”। মাধ্যমিকে এতো অবহেলা, এতো বঞ্চনা, এতো অপ্রাপ্তির মূল কারণ যৌক্তিক পদসোপানের মাধ্যমে পদোন্নতি না হওয়া।
বর্তমানে মাধ্যমিক স্তরের গুরত্বপূর্ণ পদ গুলো ভারপ্রাপ্ত শিক্ষকদের দ্বারা পরিচালিত হচ্ছে। নিয়মিত পদোন্নতি না থাকায় সরকারি মাধ্যমিকের এই আকাল। অথচ ৫৩০২ টি সিনিয়র শিক্ষক, ৩৯৮ টি সহকারী প্রধান শিক্ষক, ২৬৪ টি প্রধান শিক্ষক, ১৮ টি বিদ্যালয় পরিদর্শক, ১০ টি সহকারী পরিচালক, ১০টি উপ-পরিচালকের পদ দীর্ঘদিন যাবৎ শূণ্য আছে যা পূর্ণ করার জন্য মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর, মাউশি’র দৃশ্যমান কোন পদক্ষেপ নেই।
অন্যদিকে জাতীয় বেতনস্কেল ২০১৫ তে টাইমস্কেল/ সিলেকশনগ্রেড ব্যবস্থা বাতিল হওয়ায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর অনুশাসন হল-সরকারি চাকরিতে পদোন্নতির সুযোগ সৃষ্টি করা। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের আধাসরকারি পত্রসংখ্যা - ০৪.০০.০০০০.৭১২.০৬.০১০.১৫.১৯ তারিখ ১৬ জানুয়ারি, ২০১৬ এর ৪৬ নং সিদ্ধান্ত মোতাবেক ১৫/১২/২০১৫ তারিখের আদেশে টাইমস্কেল-সিলেকশন গ্রেড বিলুপ্ত হওয়ার কারণে কর্মচারীরা যাতে ক্ষতিগ্রস্থ না হয় সেজন্য নতুন পদ সৃষ্টি, পদের মানোন্নয়ন ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের অর্গানোগ্রাম সংশোধন করে পদোন্নতি যোগ্য পদ সৃষ্টি করার নির্দেশনা প্রদান করেন।
তাই মুজিববর্ষে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন, সরকারি মাধ্যমিক শিক্ষার মানোন্নয়নের জন্য শিক্ষকদের সবচেয়ে বড় উপহার হিসেবে প্রথম শ্রেণির কর্মকর্তায় ভূষিত করুন। এন্ট্রিপদ নবম গ্রেড ধরে যৌক্তিক পদসোপান তৈরির মাধ্যমে নিয়মিত পদোন্নতির সুযোগ সৃষ্টি হলে ৩০/৩৫ বছরের একই পদে থাকার বঞ্চনার অবসান ঘটবে। হতাশাগ্রস্ত সরকারি মাধ্যমিকের শিক্ষকদের শিখন-শেখানো দক্ষতার গতি ত্বরান্বিত হবে। মাধ্যমিকের আকাশে আন্ধকার মেঘ কেটে আলোর সন্ধান মিলবে।
সরকারি মাধ্যমিকের জন্য নবম গ্রেড (১ম শ্রেণি) ধরে নিন্মোল্লিখিত পদসোপান সংযুক্ত করে একটি প্রস্তাবিত সমন্বিত নিয়োগ বিধি উপস্থাপন/প্রস্তাব করছি।
১। সহকারী শিক্ষক: (৯ম গ্রেড)
এটিই কেবল সরকারি মাধ্যমিকের সহকারী শিক্ষকদের জন্য এন্ট্রিপদ (৯ম গ্রেড)হবে। উপজেলা সহকারী মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা(৯ম গ্রেড করতে হবে) পদে তাদের তিন বছরের জন্য শতভাগ পদায়ন করা যাবে ।
২। সিনিয়র শিক্ষক : (৭ম গ্রেড)
ফাউন্ডেশন কোর্স (২ মাস), বিএড/বিপিএড/বিএজিএড থাকা সাপেক্ষে সহকারী শিক্ষক পদে ৫ বছর পূর্ণ হলে শততভাগ সিনিয়র শিক্ষক পদে পদোন্নতি পাবেন। সিনিয়র শিক্ষকদের উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ,একাডেমিক সুপারভাইজার,সহকারী প্রোগ্রামার পদে তিন বছরের জন্য শতভাগ পদায়ন করা যাবে।
৩। সহকারী প্রধান শিক্ষক : (৬ষ্ঠ গ্রেড)
পদ শূন্য থাকা সাপেক্ষে এমএড, সিনিয়রিটি(বয়স),দক্ষতা, যোগ্যতা ও আবেদনের প্রেক্ষিতে প্রতিবছর সিনিয়র শিক্ষক হতে সহকারী প্রধান শিক্ষক পদে পদোন্নতি পাবে। তবে সিনিয়র শিক্ষক পদে নূন্যতম ৫ বছর পূর্র্ণ হতে হবে। সহকারী প্রধান শিক্ষকদের সহকারী জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা,সহকারী বিদ্যালয় পরিদর্শক,গবেষণা কর্মকর্তা(মাউশি),শিক্ষা কর্মকর্তা (মাউশি) পদ সমূহে শতভাগ ডেপুটেশনে তিন বছরের জন্য পদায়ন করা যাবে।
৪। প্রধান শিক্ষক : (৫ম গ্রেড)
পদ শূন্য থাকা সাপেক্ষে সিনিয়রিটি (বয়স),দক্ষতা,যোগ্যতা ও আবেদনের প্রেক্ষিতে প্রতি বছর সহকারী প্রধান শিক্ষক হতে প্রধান শিক্ষক পদে পদোন্নতি পাবেন। তবে সহকারী প্রধান শিক্ষ পদে নূন্যতম ৫ বছর পূর্ণ হতে হবে। প্রধান শিক্ষকদের জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা,বিদ্যালয় পরিদর্শক,সহকারী পরিচালক (মাউশি) পদ সমূহে শতভাগ ডেপুটেশনে তিন বছরের জন্য পদায়ন করা যাবে।
৫। উপ- পরিচালক : (৪র্থ গ্রেড)
পদ শূন্য থাকা সাপেক্ষে সিনিয়রিটি( বয়স),দক্ষতা,যোগ্যতা ও আবেদনের প্রেক্ষিতে প্রধান শিক্ষক হতে উপ-পরিচালক (আঞ্চলিক/মাউশি) পদে পদোন্নতি পাবেন। তবে প্রধান শিক্ষক পদে নূন্যতম ৪ বছর পূর্ণ হতে হবে।
৬। পরিচালক ( মাধ্যমিক): (৩য় গ্রেড)
পদ শূন্য থাকা সাপেক্ষে সিনিয়রিটি (বয়স),দক্ষতা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে উপ-পরিচালক হতে পরিচালক (মাধ্যমিক) পদে পদোন্নতি পাবেন। তবে উপ-পরিচালক পদে নূন্যতম তিন বছর পূর্ণ হতে হবে।
(এই নীতিমালা কার্যকরের পর হতে সরকারী মাধ্যমিকে কেবল সহকারী শিক্ষক পদ ব্যতীত অন্য কোনো পদে সরাসরী নিয়োগ হবে না। মাঠ পর্যায়ে যে সকল কর্মকর্তা আছেন তাদের বয়স, চাকুরিকাল,চাকুরির শর্ত, যোগ্যতা,দক্ষতার ভিত্তিতে উপর্যুক্ত বিধিবিধানের আলোকে সমম্বয় করে নিতে হবে। নতুন করে মাধ্যমিক শিক্ষা সংশ্লিষ্ট কোন স্তরে আর সরাসরি কোনো কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়া হবে না। মাধ্যমিক শিক্ষা সংশ্লিষ্ট কোনো প্রকল্প চলমান থাকলে কিংবা নতুন করে শুরু হলে প্রকল্প সংশ্লিষ্ট ৯ম গ্রেড হতে তদূধ্র্ব পদ সমূহে মাধ্যমিক শিক্ষা বিভাগ হতে নিয়োগ প্রদান করা হবে।)
উপর্যুক্ত পদসোপান ও বেতন গ্রেডের আলোকে উপজেলা থেকে অধিদপ্তর পর্যন্ত প্রসাসনিক পদসমূহকে (ইকুভ্যালেন্ট পদ) ডেপুটেশনের পদ বিবেচনায় নিয়ে বিসিএস রিক্রুটমেন্ট রুলস- ১৯৮০ এবং বিসিএস কম্পোজিশন এন্ড ক্যাডার রুলস ১৯৮১ এর স্কুল এন্ড ইন্সপেকশন ব্রাঞ্চ এর পরিমার্জন/ সংশোধন সাপেক্ষে, সরকারি মাধ্যমিকের জন্য ১৮ সালের নিয়োগবিধিতে সহকারী প্রধান শিক্ষক ও প্রধান শিক্ষকের কোন পদোন্নতির বিধান উল্লেখ না থাকায় পদসোপান সংযুক্ত করে সম্পূর্ণ নতুন নিয়োগ ও পদোন্নতি বিধি প্রণয়ন সময়ের দাবী।
পরিশেষে, এই মুজিববর্ষে মাদার অব হিউমিনিটি, দক্ষিণ এশিয়ার স্তম্ভ, বিশ্ব মানবতার আলোকবর্তিকা, মানবিক বিশ্বের প্রধান নেতা বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে প্রাণের আকুতি, আপনি আমাদের অভিভাবক, আপনিই আমাদেরকে ২য় শ্রেণির গেজেটেড কর্মকর্তায় উত্তীর্ণ করার ন্যায় ২য় শ্রেণি থেকে ১ম শ্রেণিতে (৯ম গ্রেড) উন্নীত করতে পারবেন। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার প্রত্যয়ে, শিক্ষাকে দারিদ্রমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার প্রধান হাতিয়ারকে শক্তিশালী করতে,টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রায় উল্লিখিত গুণগত শিক্ষা নিশ্চিত করণ এবং রুপকল্প ২০৪১ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে মুজিববর্ষে সরকারি মাধ্যমিকের শিক্ষকদের জন্য এন্ট্রিপদ ৯ম গ্রেড ধরে যৌক্তিক পদসোপান কার্যকর করার জোর দাবি জানাচ্ছি।
লেখক : ৩৪ তম বিসিএস নন-ক্যাডার (মাধ্যমিক শিক্ষা) সহকারী শিক্ষক, বি.এল.সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, সিরাজগঞ্জ।
এইচআর/এমএস