ভাসানচর: মানবতার এক মহাকাব্যিক উপাখ্যান

সফিউল আযম
বিশাল বঙ্গোপসাগরের মধ্যে এক চিলতে সবুজের সমারোহ। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরা দ্বীপ। দূর থেকে দ্বীপের সারি সারি গাছ মনে প্রশান্তি জোগায়। সাগরের জলরাশিতে সূর্যের আলো পড়ায় দেখা যায় এব মনোমুগ্ধকর দৃশ্য। এটি নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলাধীন চর ঈশ্বর ইউনিয়নের অধীন এক ভূখণ্ড। স্থানীয়রা এটিকে ঠেঙ্গারচর, জালিয়ারচর ইত্যাদি নামে ডাকলেও প্রধানমন্ত্রী এই চরের নাম দিয়েছেন ভাসানচর। ভৌগোলিকভাবে চরের অবস্থান সন্দ্বীপ ও হাতিয়ার মাঝখানে। সন্দ্বীপ থেকে এর দূরত্ব সাড়ে চার নটিক্যাল মাইল পশ্চিমে এবং হাতিয়া থেকে ১৩ নটিক্যাল মাইল পূর্বে। গত কয়েক দিন সরেজমিনে পরিদর্শনে দেখা যায়, এক বিশাল কর্মযজ্ঞে বাংলাদেশ বিশ্বের বুকে অনন্য উদাহরণ সৃষ্টি করেছে।
বাংলাদেশ নৌবাহিনী বাস্তবায়িত আশ্রয়ণ প্রকল্প ৩
এক লাখ রোহিঙ্গাকে ভাসানচরে স্থানান্তরের লক্ষ্যে ২০১৭ সালের নভেম্বরে সরকার আশ্রয়ণ ৩ নামে এ প্রকল্পটি গ্রহণ করে। দায়িত্ব পেয়ে অত্যন্ত দক্ষতার সাথে বাংলাদেশ নৌবাহিনী এই প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করে। ১৩ হাজার একর এই চরের মাত্র ৪৩২ একর রোহিঙ্গাদের আবাসন ও অন্যান্য স্থাপনার জন্য ব্যবহার করা হয়েছে। মোট ১২০টি ক্লাস্টার এবং ১২০টি শেল্টার স্টেশন বা আশ্রয়কেন্দ্র নিয়েই গড়ে উঠেছে ভাসান চরের আশ্রয়ণ প্রকল্প, যা সরকারিভাবে আশ্রয়ণ প্রকল্প-৩ নামে পরিচিত।
দৃষ্টিন্দন বাসস্থানে রয়েছে বহুমাত্রিক সুবিধা
ভাসানচরে এক লাখ রোহিঙ্গার জন্য ১২০টি ক্লাস্টার বা গুচ্ছগ্রাম নির্মাণ করা হয়েছে। মোট ঘরের সংখ্যা এক হাজার ৪৪০টি এবং ১২০টি শেল্টার স্টেশন নিয়ে গুচ্ছগ্রামটি গঠিত। প্রকল্পটিতে এক লাখ এক হাজার ৩৬০ জন শরণার্থী বসবাস করতে পারবে।
প্রতিটি ক্লাস্টারে রয়েছে একটি পুকুর, প্রতিটি পরিবারের রান্নার জন্য আলাদা আলাদা চুলার ব্যবস্থা। প্রতি আটটি কক্ষের জন্য তিনটি টয়লেট এবং নারী পুরুষের জন্য গোসলখানা। প্রতিটি কক্ষে দুটো ডাবল বাঙ্কার বা দোতলা খাট। আটটি খাটে চারজন থাকতে পারবেন। যাদের পরিবারে লোকজন বেশি তাদের জন্য বেশি কক্ষ বরাদ্দ রাখা হয়েছে। ক্লাস্টারের প্রতিটি পুকুরের গভীরতা প্রায় ১০ ফুট, যা গোসল কিংবা গৃহস্থালির কাজের ব্যবহার উপযোগী। প্রতিটি ক্লাস্টার একই আদলে নির্মাণ করা হয়েছে। সব ঘর দেখতে একই রকম। পাকা দেয়ালের ওপর টিনশেডের প্রতিটি হাউজে রয়েছে ১৬টি করে কক্ষ। ভেতরে টিউবওয়েল, যা রান্না, খাওয়া ও ধোয়ার কাজে ব্যবহার করছে শরণার্থীরা। প্রতিটি কক্ষের সাইজ ৩.৯ বর্গমিটার, যা আদর্শ মান থেকও বেশি।
জীবিকায়ন কর্মকাণ্ডে রোহিঙ্গাদের অংশগ্রহণ
ভাসানচর ঘুরে দেখা যায়, রোহিঙ্গারা সাগরে গিয়ে মাছ ধরছেন, কেউবা কৃষিকাজে নিজেদের নিয়োজিত করছেন। আঙ্গিনায় সবজি চাষ এবং ফসল বুনছেন। এই এলাকাটি মূলত গরু, ছাগল, মহিষের চারণভূমি। হাজার হাজার মহিষ বিচরণ করছে এই চরে। অনেক রাখাল ভেড়া ও হাঁসের খামার করেছেন। জীবিকা নির্বাহ ও টিকে থাকার সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা আছে ভাসানচরে। সরেজমিনে দেখা যায়, ইতোমধ্যে অনেকেই হস্তশিল্পের কাজে নিজেদের নিয়োজিত করেছেন। চরের মধ্যে রয়েছে সম্ভাবনাময় আবাদি জমি, যা বিভিন্ন ফসলের উপযোগী। উর্বর পলিমাটিতে খুব সহজে ও সাশ্রয়ে ফসলাদি চাষের রয়েছে অবারিত সুযোগ।
ক্যাম্পের অভ্যন্তরে যাতায়াত সুবিধা
প্রতিটি ঘরের সামনে বেশ চওড়া রাস্তা। এসব রাস্তার প্রশস্ততা ২০ থেকে ২৫ ফুট। বাংলাদেশের কোনো গ্রামে সাধারণত এ ধরনের রাস্তা দেখা যায় না। কক্সবাজারের টেকনাফ কিংবা উখিয়ার ক্যাম্পে এসব কল্পনাও করা যায় না। প্রত্যেক ক্লাস্টারে যেহেতু রাস্তা রয়েছে, এক ক্লাস্টার কিংবা প্যাকেজ থেকে সহজেই অন্য স্থানে যাতায়াত করা যাচ্ছে। ক্যাম্পের অভ্যন্তরে অনুমোদিত রিকশা রয়েছে, যেগুলো অভ্যন্তরীণ যোগাযোগকে আরো সহজ করেছে।
রাতে নিরবচ্ছিন্ন আলো
কক্সবাজারের ক্যাম্পে বিদ্যুতের সরবরাহ না থাকলেও ভাসানচরে আলোর ব্যবস্থা করা হয়েছে। রোহিঙ্গাদের রাখার জন্য আবাসিক কাঠামোর প্রতিটি ব্যারাকে পৃথক সৌর বিদ্যুতের ব্যবস্থা থাকছে। সরেজমিনে দেখা যায়, প্রতিটি শেল্টারে ৫ কিলোওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন পৃথক সোলার সেলের মাধ্যমে প্রতিটি ঘর আলো সুবিধা দেয়ার পাশাপাশি সৌর পাম্প ব্যবহার করে পানি তোলার ব্যবস্থা রয়েছে। এক মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন ডিজেল জেনারেটর এবং দুটি ৫০০ কিলোওয়াট ডিজেল জেনারেটর বসানো হয়েছে। এছাড়া রয়েছে ৩২ ফুয়েল ট্যাংকও।
দুর্যোগ মোকাবিলায় রয়েছে প্রস্তুতি
জানা যায়, গত ১৭৬ বছরের ঘূর্ণিঝড় পর্যালোচনা করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত কোনো ঘূর্ণিঝড় এই এলাকার ওপর দিয়ে যায়নি। ১৩ হাজার একর আয়তনের এই দ্বীপের মধ্যে ১৭০২ একর জমির চারপাশে উঁচু বাঁধ নির্মাণ করা হয়েছে জোয়ার ও জলোচ্ছ্বাসের ঝুঁকি থেকে রক্ষার জন্য। বেড়িবাঁধ নির্মাণকাজ চলছে, যা ১৯ ফুট পর্যন্ত উঁচু করা হবে বলে জানা যায়। সমুদ্রের ঢেউ ভেঙে দেয়ার জন্য শোর প্রোটেকশন দেয়া হয়েছে। ক্লাস্টার হাউজ ও শেল্টার স্টেশনগুলো নির্মাণ করা হয়েছে ভূমি থেকে চার ফুট উঁচু করে। প্রতিটি ক্লাস্টারের জন্য রয়েছে একটি করে চারতলা কম্পোজিট স্ট্রাকচারের শেল্টার স্টেশন। এই শেল্টার স্টেশন ঘণ্টায় ২৬০ কিলোমিটার গতিবেগের ঘূর্ণিঝড়েও টিকে থাকতে সক্ষম। সেই সঙ্গে ঝড় ও জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষার জন্য দ্বীপের চারপাশে উপকূলীয় সবুজ বেষ্টনী গড়ে তোলা হচ্ছে। অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা এবং ফায়ার স্টেশনের স্থান ও সরঞ্জামাদি রয়েছে।
পরিবেশ সংরক্ষণ ও জীববৈচিত্র্যে রক্ষায় উদ্যোগ
আছে পানি নিষ্কাশনের জন্য ড্রেনের ব্যবস্থা। বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য রয়েছে কেন্দ্রীয় সংরক্ষণাগার। ভাসানচরে বসতির সঙ্গে ব্যাপক বনায়নের সুযোগ রয়েছে, ভূমিধস, বায়ুদূষণ কিংবা ভূমি ক্ষয়ের শঙ্কা নেই। টেকনাফের ক্যাম্পগুলোতে রান্নার জন্য জ্বালানি কাঠ বা কয়লার ওপর নির্ভর করতে হয়। কিন্তু ভাসানচরে বায়োগ্যাস ও পরিবেশবান্ধব চুলার ব্যবস্থা রয়েছে। ক্লাস্টারে পচনশীল আবর্জনা ফেলার স্থান রয়েছে, যাতে ব্যবহৃত আবর্জনা সহজেই এখানে ফেলতে পারছে। মানব বর্জ্যভিত্তিক বায়োগ্যাস প্লান্ট প্রতিটি ক্লাস্টারে রয়েছে। ফলে পরিবেশ দূষণের সুযোগ নেই।
শিশু-কিশোরদের বিনোদনের ব্যবস্থা
শিশুদের জন্য দুটি খেলার মাঠ তৈরি করা হয়েছে। এছাড়া প্রতিটি ক্লাস্টার হাউজেও খোলা জায়গা আছে খেলার জন্য। সরেজমিনে দেখা যায়, শিশুরা ক্যাম্পের বাইরে খোলা জায়গায় নিজেদের মতো খেলায় মেতে উঠেছে। ক্যাম্পের অভ্যন্তরে কিশোর ও কিশোরীদের স্পোর্টিং ক্লাবও রয়েছে। ফুটবল, বলিবল ও ব্যাডমিন্টন খেলার রয়েছে বিশাল মাঠ। শিশুদের পার্কে রয়েছে বিভিন্ন রাইড, যেগুলো উন্মুক্ত হওয়ায় শিশুরা খেলতে পারে মনের আনন্দে। ক্যাম্পের বাইরে রয়েছে দুটি লেক, যেখানে বসে উপভোগ করার সুযোগ আছে মনোরম প্রাকৃতিক দৃশ্য।
স্বাস্থ্যসেবা প্রদানে রয়েছে সুবিধা
স্বাস্থ্যসেবার জন্য ২০ শয্যার দুটি হাসপাতাল এবং চারটি কমিউনিটি ক্লিনিক করা হয়েছে। প্রতি ২৫ হাজারের জন্য একটি কমিউনিটি ক্লিনিক। নার্স ও ডাক্তারদের থাকার ব্যবস্থা রয়েছে একই ভবনে। হাসপাতাল ও ক্লিনিকগুলো এমনভাবে স্থাপন করা হয়েছে, যাতে ক্যাম্পের সব সদস্যই অল্প সময়ে স্বাস্থ্য সুবিধা নিতে পারে। ক্যাম্পে নবজাতক শিশুরও জন্ম হয়েছে বিনা জটিলতায়।
সহজ যোগাযোগ ও টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা
পণ্য পরিবহন ও মানুষ পারাপারের সুবিধার জন্য নির্মাণ করা হয়েছে জেটি। মোবাইল অপারেটরের নেটওয়ার্ক টাওয়ার রয়েছে তিনটি, যাতে মোবাইল যোগাযোগ নিরবচ্ছিন্ন থাকে। বাংলাদেশ নৌবাহিনী চট্টগ্রাম থেকে জাহাজ সুবিধা দিচ্ছে এই চরে আসার জন্য। নোয়াখালীর সুবর্ণচরের জনতাঘাট থেকে ট্রলার এবং চেয়ারম্যানঘাট থেকে বিআইডব্লিইটিএ পরিচালনা করছে সি ট্রাক। এছাড়া অল্প সময়ে এই ভাসানচরে আসার জন্য স্পিডবোট সুবিধাও রয়েছে। ভাসানচরের বাতিঘর ১৪ নটিক্যাল মাইল পর্যন্ত নেভিগেশন সুবিধা দিতে পারবে, যা এ এলাকা দিয়ে জাহাজ চলাচলে দিকনির্দেশনা দিচ্ছে। ক্যাম্পের অভ্যন্তরে তিনটি আন্তর্জাতিক মানের হেলিপ্যাড, যাতে ভিআইপি সহজেই এখানে অবতরণ করতে পারেন।
খাদ্য সংরক্ষণ ও বাজার ব্যবস্থাপনা
খাদ্য সংরক্ষণের জন্য নির্মাণ করা হয়েছে চারটি গুদাম, যাতে এক লাখ মানুষের তিন মাসের খাবার সংরক্ষণ করা সম্ভব। খাদ্য সংরক্ষণে ২০৫ ফুট দৈর্ঘ্যের চারটি সুবিশাল ওয়্যারহাউস (গুদামঘর) থাকায় বর্ষা মৌসুমে সাগর দিয়ে মালামাল পরিবহনের প্রয়োজন হবে না। ক্যাম্পের বাইরে রয়েছে বাজার, যেখানে সব ধরনের পণ্য পাওয়া যায়। এছাড়া রোহিঙ্গাদের জন্য দুটি বাজার তৈরি করা হয়েছে। যেখানে রোহিঙ্গাদের ক্রয় ও বিক্রয়ের সুযোগ রয়েছে। বাজারগুলো সুন্দরভাবে সাজানো হয়েছে, দোকানিদের বসার স্থান ও মালামালের জন্য শৃঙ্খল ব্যবস্থা রয়েছে।
নেই অবৈধ কর্মকাণ্ড ও মাদকের ছোবল
কক্সবাজারে প্রায়ই মানবপাচারের খবর পাওয়া যায়। যার প্রধান শিকার হচ্ছে রোহিঙ্গারা। এই ভাসানচর সুরক্ষিত হওয়ায় সেই সুযোগ নেই। মাদক চোরাচালান কিংবা অবৈধ কাজের সুযোগ এখানে একদম নেই। সরকারের নানা স্তরের নিরাপত্তার কারণে ভাসানচর একটি সুরক্ষিত স্থান।
উপাসনালয় ও শিক্ষার সুযোগ
এই ক্যাম্পে ধর্মীয় অনুভূতি, সামাজিক মূল্যবোধের বিষয়গুলোকেও প্রাধান্য দেয়া হয়েছে। তিনটি শেল্টারকে মসজিদ হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। মসজিদগুলোকে এমনভাবে নির্ধারণ করা হয়েছে, যাতে সহজেই মুসল্লিরা নামাজ আদায় করতে পারেন। ধর্মীয় শিক্ষার রয়েছে আলাদা ব্যবস্থা। অনাথ ও এতিমদের জন্য রয়েছে আলাদা ব্যবস্থা। ক্যাম্পের বাইরে করা হয়েছে বিশাল কবরস্থান। গত ৯ এপ্রিল পর্যন্ত এখানে চার রোহিঙ্গাকে কবরস্থ করা হয়েছে। ডে কেয়ার সেন্টারের ব্যবস্থাও রয়েছে। শিক্ষা প্রদানের জন্য রয়েছে সুন্দর ব্যবস্থা। দুটি শেল্টারকে শিক্ষাদানের জন্য তৈরি করা হয়েছে।
সরকারি, বেসরকারি কর্মকর্তাদের অফিস ও আবাসন সুব্যবস্থা
বিভিন্ন সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য রয়েছে আলাদা থাকার ব্যবস্থা। ভিআইপিদের জন্যও আছে ভবন। যেখানে খুব সহজেই ক্যাম্পের সাথে সংযোগ রাখা সম্ভব হচ্ছে। বিদেশি অতিথিরাও নির্বিঘ্নে এখানে থাকতে পারবেন। কর্মরত বিভিন্ন সংস্থার অফিস হিসেবেও বিভিন্ন কক্ষ বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। যাতে রোহিঙ্গাদের সেবাদান সহজ হয়।
নিরাপত্তার চাদরে ঢাকা পুরো এলাকা
আইন শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য সরকারের নানা সংস্থা কাজ করছে। পুরো এলাকাটিতে বাংলাদেশ নৌবাহিনী এবং কোস্টগার্ড ঘিরে রেখেছে। কিছুদিন আগে ভাসানচর থানার উদ্বোধন করা হয়েছে এবং পর্যপ্ত পুলিশও মোতায়েন রয়েছে। ক্যাম্পে কেউ প্রবেশ করলে তিন স্তরের নিরাপত্তা ভেদ করে ভেতরে যেতে হবে। আইনশৃঙ্খলার যাতে অবনতি না ঘটে সেজন্য ক্যাম্পের অভ্যন্তরে টহল রয়েছে। বলা যায় এ ক্যাম্পটি নিরাপত্তার চাদরে ঢাকা একটি পরিকল্পিত আবাসস্থল বাস্তুচ্যুত মিয়ানমার নাগরিকদের জন্য।
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুযোগ্য কন্যা মাদার অব হিউম্যানিটি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মানবতা ও মানবিকতার যে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন তা বিশ্বে বিরল। মানুষের প্রতি অকৃত্রিম ভালোবাসা ও ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে সব সাহসিকতার যে উজ্জ্বল প্রমাণ স্থাপন করেছেন, তা বিশ্বের বুকে বাংলাদেশের সম্মানকে অনেক উচুঁতে স্থান দিয়েছে।
রোহিঙ্গাদের শুধু আশ্রয়ই নয়, তাদের মৌলিক চাহিদা সঠিকভাবে পূরণে সরকারের প্রশংসনীয় ভূমিকা আজ বিশ্বস্বীকৃত। প্রধানমন্ত্রী লাখ লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়ে যে মহানুভবতার আশ্রয় দিয়েছেন, তা একজন বাংলাদেশি হিসেবে আমাদের গর্বিত করে। নোয়াখালীর হাতিয়ার ভাসানচরে যে উঁচু লাইট হাউজ নির্মাণ করা হয়েছে, সেটার ফলে বঙ্গোপসাগরে চলাচলকারী জাহাজ ভাসানচরকে চিনতে পারে। ১৪ নটিক্যাল মাইল পর্যন্ত নেভিগেশন সুবিধা দিতে পারবে সমুদ্র থেকে ভাসানচরের অবস্থান নির্ণয়ের জন্য তৈরি করা এই ৯১ ফুট উঁচু দৃষ্টিনন্দন লাইট হাউজ। অনেকেই এটাকে বলেন লাইট অব হোপ, আশার আলো, মানবতার আলো, মানবিকতার আলো। মাদার অব হিউম্যানিটি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই লাইট হাউজের নাম রেখেছেন লাইট অব হিউম্যানিটি, যা বিশ্বের বুকে মানবতার এক মহাকাব্যিক উপাখ্যান।
লেখক : সাংবাদিক ও প্রাবন্ধিক।
safiul.azam@gmail.com
এইচআর/জিকেএস