মাহে রমজান

মসজিদ থাকুক প্রাণবন্ত

মাহমুদ আহমদ
মাহমুদ আহমদ মাহমুদ আহমদ , ইসলামি গবেষক ও কলামিস্ট
প্রকাশিত: ০৯:৫৫ এএম, ০১ এপ্রিল ২০২৩

আজ শনিবার। পবিত্র মাহে রমজানের রহমতের দশকের ৯ম দিন আমরা অতিবাহিত করছি, আলহামদুলিল্লাহ। আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের কাছে এ দোয়াই করি তিনি যেন আমাদেরকে সুস্থ রেখে পুরো রমজান তার ইবাদতে রত থেকে কাটানোর তৌফিক দান করেন। সাধারণত দেখা যায়, যারা সারা বছর ইবাদত বন্দেগিতে যতটা আগ্রহি না তারাও রমজান মাসে ইবাদতের প্রতি বিশেষ মনোযোগী হয়। যারা কোন দিন মসজিদমুখি হয় না তারাও রমজান মাসে মসজিদে কমপক্ষে দৈনিক একবার হলেও আসে। নামাজের সময় মসজিদগুলো নামাজিতে ভরপুর থাকে। শুধু নামাজের সময়ই মসজিদগুলো ভরপুর থাকতে দেখা যায় আর বাকি সময়টুকু বিরান হয়ে পড়ে থাকে।

তাই রমজান মাসে মসজিদ কমিটি যদি বিশেষ কোনো পদক্ষেপ নেয় যাতে করে নামাজ ছাড়াও সব সময় মসজিদ থাকবে প্রাণবন্ত। যেমন মসজিদে বিনামূল্যে কুরআন শিক্ষার ক্লাস চালু করা যেতে পারে, এই ক্লাস দিনের বিভিন্ন সময় হতে পারে, যার যখন সময় থাকবে তারা সে সময় ক্লাসে অংশ নিয়ে এই রমজানে পবিত্র কুরআন শুদ্ধভাবে পড়া শিখে নিবে ।

আমাদের মসজিদগুলোকে বছরের প্রতিটি দিন আবাদ রাখতে হলে রমজানেই মসজিদের প্রতি আকর্ষণ সৃষ্টি করতে হবে। আর এই প্রশিক্ষণ অনুযায়ী বছরের বাকি দিনগুলো কাটাতে চেষ্টা করবে।

রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘কেয়ামতের দিন মহা প্রতাপশালী খোদা বলবেন, উপস্থিত সকলে অচিরেই জানতে পারবে, কে মর্যাদাবান ও সম্মানিত। কেউ একজন জিজ্ঞেস করল, হে আল্লাহর রাসুল (সা.)! মর্যাদাবান এবং সম্মানিত কে? তিনি (সা.) বললেন, মসজিদ সমূহে যারা খোদার স্মরণে একত্রিত হয়।’

অপর একটি হাদিসে বর্ণিত হয়েছে হজরত আবু হুরায়রা (রা.) বর্ণনা করেন, নবী করিম (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি সকাল-সন্ধ্যা মসজিদে যায় আল্লাহতায়ালা তার জন্য জান্নাতে মেহমানদারীর উপকরণ সৃষ্টি করেন’ (বুখারি)।

আমরা সবাই জানি, আমাদের প্রিয়নবী (সা.)এর মসজিদ ছিল অতি সাধারণ খেজুর পাতার কিন্তু তাতে প্রেমপ্রীতি, ভালোবাসা আর শান্তির কোন কমতি ছিল না। বৃষ্টি পড়লে মসজিদে পানি ঢুকে কর্দমাক্ত হয়ে যাওয়া সত্বেও মুসল্লিদের দ্বারা মসজিদ সব সময় থাকত ভরপুর। সামান্য খেজুর পাতায় নির্মিত মসজিদের সোভা ও সৌন্দর্যে যেন ঝকমক করত। এর কি কারণ ছিল? এর কারণ একটাই, আর তাহল আমাদের প্রিয়নবী ও সর্বশ্রেষ্ঠ নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)এর উত্তম আদর্শ এবং তাকওয়ায় সুশোভিত তার পবিত্র সাহাবিগণ।

মহানবীর (সা.) মসজিদ ছিল সবার জন্য শান্তি আর নিরাপত্তার কেন্দ্র। সেই মসজিদ থেকে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবার জন্য শান্তির সুবাতাস প্রবাহিত হত। সমাজ ও দেশ থেকে অন্যায় আর বিশৃঙ্খলা কীভাবে দূর করা যায় সে বিষয়ে প্রিয়নবীর সাহাবারা চর্চা করতেন মসজিদে। সেই খেজুর পাতার মসজিদের রূপের সাথে কোন মসজিদের কি তুলনা হতে পারে? মহানবীর (সা.) মসজিদ ছিল সমাজের সকল শ্রেণির শান্তির কেন্দ্র আর সেই মসজিদ থাকতো সব সময় লোকে লোকারণ্য।

তাই আমরাও পারি এই পবিত্র মাহে রমজানে মসজিদগুলোতে বেশি বেশি এসে মসজিদের হক আদায় করতে এবং মসজিদকে আবাদ করতে। আমরা যদি পুরো পরিবার নিয়ে মসজিদ মুখি হই তাহলে সমাজ থেকেও নানান অপকর্ম দূর হয়ে যাবে আর আমাদের সন্তানরাও ইসলামি শিক্ষায় শিক্ষিত হবে এবং সামাজিক অবক্ষয়ের হাত থেকেও রেহাই পাবে।

আল্লাহতায়ালা আমাদের সকলকে এই রমজানে পুরো পরিবারসহ মসজিদে গিয়ে আল্লাহপাকের ইবাদতে মশগুল থেকে সময় কাটানোর সৌভাগ্য দান করুন, আমিন।

লেখক: ইসলামি গবেষক ও কলামিস্ট।

এইচআর/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।