বাতাসের ছন্দে দুলছে কৃষকের স্বপ্ন
সকালের নরম রোদ আর হালকা বাতাসে যখন মাঠজুড়ে ঢেউ তোলে পাকা ধান, তখন সেই দোলায় মিশে থাকে একজন কৃষকের দীর্ঘ অপেক্ষা, নিরব সাধনা আর আগামী দিনের স্বপ্ন। কাদা-পানিতে ভেজা পা, রোদ-বৃষ্টির সঙ্গে প্রতিদিনের লড়াই সবকিছুর শেষে এই সোনালি মুহূর্তই তার সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি। প্রতিটি শীষে যেন লেখা থাকে পরিশ্রমের গল্প, আর প্রতিটি দোলায় দুলে ওঠে স্বচ্ছল জীবনের আশা। গ্রামবাংলার প্রান্তরে তাই শুধু ধান নয়, বাতাসের ছন্দে দুলছে কৃষকের বেঁচে থাকার স্বপ্ন। ছবি: আবদুল্লাহ আল-মামুন
-
ফেনীর ৬ উপজেলায় রোপা আমনের আবাদ যেমন লক্ষ্যমাত্রার বেশি হয়েছে তেমনি ফলনও লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে গেছে। এরই মধ্যে জেলার অর্ধেকের বেশি ধান কাটা সম্পন্ন হয়েছে। শেষ হতে আরও সপ্তাহ খানেকের বেশি লাগবে বলে ধারণা কৃষি বিভাগের।
-
এবার রোপা আমনের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৬৬ হাজার ৭৫৫ হেক্টর। ছয় উপজেলায় আবাদ হয়েছে প্রায় ৬৭ হাজার হেক্টর। কৃষি বিভাগের হিসাব অনুযায়ী জেলায় উচ্চ ফলনশীল জাতের আবাদ হয়েছে বেশি। লক্ষ্যমাত্রার প্রায় ৯০ শতাংশই উচ্চ ফলনশীল জাত আবাদ করেছে কৃষকরা। জেলায় এ জাতের আবাদ হয়েছে ৬৩ হাজার ৭৮৫ হেক্টর, অন্যদিকে স্থানীয় জাতের ২ হাজার ৯২১ হেক্টর আর হাইব্রিড হয়েছে মাত্র ৮৮ হেক্টর। উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা উফশী জাতের প্রতি হেক্টরে ৪ দশমিক ০৫ মেট্রিক টন থাকলেও এরই মধ্যে কর্তন হওয়া জমিতে আরও বেশি উৎপাদন হয়েছে।
-
মাঠ পর্যায়ের কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সময়মতো বৃষ্টিপাত এবং আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবছর রোপা আমনের ফলন ভালো হয়েছে। এছাড়া কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের জেলা থেকে মাঠ পর্যায়ের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তাগণও কৃষকদের আমন আবাদে উৎসাহ যুগিয়েছেন এবং বিভিন্নভাবে কারিগরি সহযোগিতা দিয়েছেন।
-
কৃষি বিভাগের দেওয়া তথ্যমতে, বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ৮৩শতাংশ কাটা সম্পন্ন হয়েছে। ২০ নভেম্বর থেকে জেলায় আমন ধান কাটা শুরু হয়েছে। ২০ ডিসেম্বরের মধ্যে অবশিষ্ট জমির ধান কাটা সম্পন্ন হবে।
-
কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ আতিক উল্যাহ জানান, এ বছরের আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবং সময়মতো বৃষ্টিপাত হওয়ায় জেলায় আমনের বাম্পার ফলন হয়েছে। একইসঙ্গে বন্যায় পলি জমার কারণে সারের ব্যবহার অর্ধেক কমেছে। এতে করে কৃষকদের যেমন খরচ কমেছে, অন্যদিকে ফলনও ভালো হওয়ায় তাদের মুখে হাসি ফুটেছে। এছাড়া চলতি মৌসুমে পোকামাকড় দমনে পার্সিং, আলোকফাঁদ পদ্ধতি ব্যবহার করে কৃষকরা উপকৃত হয়েছেন।