ইউনূসকে রিজভী

কোন সুতার টানে, কার পরামর্শে এপ্রিলে নির্বাচন

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৫:২১ পিএম, ০৮ জুন ২০২৫
বক্তব্য রাখছেন রুহুল কবির রিজভী

দু-একজন লোক বা দু-একটি রাজনৈতিক দলের কথায় প্রধান উপদেষ্টা এপ্রিলে নির্বাচনের কথা বলছেন বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়ির যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী।

এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এপ্রিলে নির্বাচনের সিদ্ধান্তকে দেশের জনগণ অর্বাচীনের মতো কাজ ও অপরিণামদর্শী সিদ্ধান্ত বলে মনে করে। কোন সুতার টানে, কার পরামর্শে ড. ইউনূস এপ্রিলে নির্বাচনের কথা বলছেন? তিনি নির্বাচন নিয়ে কেন টানাহেচঁড়া করছেন—এসব প্রশ্ন রাখেন রিজভী।

বিজ্ঞাপন

রোববার (৮ জুন) দুপুরে রাজধানীতে জাতীয়তাবাদী ভ্যান শ্রমিক ও রিকশা শ্রমিক দলের উদ্যোগে ঈদের খাবার বিতরণকালে তিনি এসব কথা বলেন।

রুহুল কবির রিজভী বলেন, কেন দু-একজন লোকের কথায় বা দু-একটি রাজনৈতিক দলের কথায় প্রধান উপদেষ্টা এপ্রিলে নির্বাচনের কথা বলছেন? এপ্রিলে তো প্রচণ্ড খরতাপ থাকে, ঝড়-বৃষ্টি হয়, এসএসসি পরীক্ষাসহ অন্যান্য পরীক্ষা থাকে। তখন কেবল রোজার ঈদ শেষ হবে। এপ্রিলে নির্বাচন হলে রমজানে প্রচারণা চালাতে হবে। মানুষ রোজা রেখে কীভাবে প্রচারণা চালাবে? মানুষ রোজা রাখবে নাকি নির্বাচনের প্রচারণা করবে?

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

আরও পড়ুন

অন্তর্বর্তী সরকার গণতন্ত্র আর সংস্কারকে মুখোমুখি করেছেন মন্তব্য করে তিনি বলেন, বাংলাদেশের পলিমাটির যে বাতাস তা অত্যন্ত পরিশোধিত। তবে এ বাতাসের মাঝে এমন কিছু বঙ্কিম বাতাসও প্রবাহিত হয়। ক্ষমতায় এলেই তারা চিরস্থায়ী ক্ষমতার স্বপ্ন দেখেন। অন্তর্বর্তী সরকারের শরীরেও বঙ্কিম বাতাস লাগছে কি না—এটি মানুষের কাছে এখন বড় ধরনের প্রশ্ন হয়ে দেখা দিয়েছে।

বিএনপির এ মুখপাত্র বলেন, ছাত্র-জনতার আত্মদান তো ছিল যে গণতন্ত্রকে শেখ হাসিনা সিন্ধুকে তালাবদ্ধ করেছিলেন, সেই গণতন্ত্রকে অবমুক্ত করার জন্য। ১৫ -১৬ বছর ধরে এদেশের মানুষ ভোট দিতে পারেনি। আওয়ামী লীগ দিনের ভোট রাতে দিয়েছে, সব অবাধ-সুষ্ঠু নির্বাচনের ইতিহাসকে দুপায়ে মাড়িয়েছে।

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, গণতন্ত্রের একটি প্রধান মাধ্যম হচ্ছে নির্বাচন, আমি আমার বন্ধুর সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করতেই পারি। তবে অধিকাংশ মানুষ যাদের সমর্থন করবে ভোট দেবে, তারাই বিজয়ী হবে। এটিই নির্বাচন। এজন্য আন্দোলন-সংগ্রাম করতে হয়েছে। এটি বলতে গিয়ে আমাদের নেতাকর্মীরা গুমের শিকার হয়েছে। কারণ, তারা গণতন্ত্র চেয়েছিল। অবাধ-সুষ্ঠু নির্বাচন আর কথা বলার স্বাধীনতা চেয়েছিল। এই চাওয়াটুকুই ছিল তাদের অপরাধ। শেখ হাসিনা তাদের গুম করেছিল।

‘কত যুবককে বিচার বহির্ভূত হত্যা করেছে, কারও লাশ নদীর ধারে, খালের ধারে ফেলে দিয়েছে, মিথ্যা মামলা দিয়ে বছরের পর বছর কারাগারে রেখেছে, এই সবকিছুর মূলে ছিল গণতন্ত্র। আর গণতেন্ত্রর মূল উপাদান হচ্ছে অবাধ-সুষ্ঠু নির্বাচন। কিন্তু বাংলাদেশে গণতন্ত্রের খুব দুর্ভাগ্য। গণতন্ত্র নিজেই এক দুর্ভাগ্যের মধ্যে পড়েছে। এখনো সব গড়িমসিই যেন অবাধ-সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে।’

বিএনপির এ নেতা আরও বলেন, আন্দোলনে যারা গুম-খুন হয়েছেন তাদের সমর্থনও কিন্তু ড. ইউনূস পেয়েছেন। কিন্তু কোন সুতার টানে, কার পরামর্শে তিনি নির্বাচন নিয়ে টানাহেচঁড়া করেছেন? নির্বাচন নিয়ে কেন এই টানাপোড়েন তৈরি করছেন? এ পরিস্থিতিতো হওয়ার কথা নয়। আমরা সব না বুঝলেও এটি বুঝি।

বিজ্ঞাপন

আরও পড়ুন

রুহুল কবির রিজভী বলেন, জাপানে গিয়ে তিনি (ড. ইউনূস) বলে দিলেন- একটি দল ছাড়া কেউ নির্বাচন চায় না। কিন্তু সেই একটি দলের আয়তন কত, প্রশস্ত কতটুকু তা কি তিনি জানেন না? অবশ্যই জানেন ওই দলটির জনসমর্থন কতটুকু। তার মতো দায়িত্বশীল কীকরে এসব কথা বলেন? এরপরও দেখেন কত রাজনৈতিক দল ডিসেম্বরে নির্বাচন চাইছে।

আয়োজক সংগঠনের আহ্বায়ক জহির রায়হানের সভাপতিত্বে ও আফজাল হোসেনের পরিচালনায় আরও বক্তব্য রাখেন- বিএনপির স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম, নির্বাহী কমিটির সদস্য মাহুবুব ইসলাম ও ডা. জাহিদুল কবির প্রমুখ। সার্বিক ব্যবস্থাপনায় ছিলেন সংগঠনের নেতা আরিফুর রহমান তুষার।

বিজ্ঞাপন

কেএইচ/এমকেআর/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন jagofeature@gmail.com ঠিকানায়।