পরিকল্পনা ছাড়া লকডাউন প্রত্যাহার না করার আহ্বান
সীমিত আকারে লকডাউন খুলে দেয়া, শিথিলতা, সমন্বয় ও পরিকল্পনাহীনতা যেন করোনা সাগর পাড়ি দিতে মাঝ সাগরে হাল ছেড়ে দেয়া বা যুদ্ধে নেমে মাঝপথে রণভঙে আত্মসমর্পণে পরিণত না হয় বলে মন্তব্য করেছে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জাসদ।
শুক্রবার (১ মে) দলটির সভাপতি হাসানুল হক ইনু ও সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার এক বিবৃতিতে এ মন্তব্য করেন।
বিবৃতিতে তারা বলেন, করোনার ছোবল থেকে মানুষের জীবন বাঁচাতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অত্যন্ত সময়োচিত উদ্যোগ ও পদক্ষেপ গ্রহণ করে দিনরাত কাজ করে যাচ্ছেন। একদিকে সরকারি ছুটির নামে অঘোষিত লকডাউন করে মানুষকে ঘরে রেখে সংক্রমণ বিস্তার রোধ এবং অন্যদিকে লকডাউনে কর্মহীন নিরুপায় অসহায় মানুষকে ত্রাণ সহায়তা প্রদান করে মানুষ বাঁচানোর আপ্রাণ ও অক্লান্ত প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। মহামারি মোকাবিলায় আমাদের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার অপ্রতুলতা বিবেচনায় নিয়েই প্রধানমন্ত্রীর এই সকল পদক্ষেপই আমাদের দেশের জন্য সর্বোত্তম উপায়। এতে সংক্রমণ বিস্তার কমেছে। করোনায় মৃত্যু কমেছে, অনেক মানুষের প্রাণ বেঁচেছে। করোনা সংক্রমণ বিস্তার রোধের পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত অর্থনীতি পুনরুদ্ধার ও কর্মহীন অসহায় নিরুপায় মানুষকে খাদ্যত্রাণ দেয়ার কঠিন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় প্রধানমন্ত্রী সরকার ও রাষ্ট্রের আর্থিক সামর্থ্যও দেখিয়েছেন।
জাসদ নেতৃদ্বয় বলেন, প্রধানমন্ত্রীর সুনির্দিষ্ট নির্দেশনার বাইরে বহুক্ষেত্রেই ভয়ংকর অনিয়ম, সমন্বয়হীনতা, যা ইচ্ছে তাই করার ঘটনা ঘটেই চলেছে। পোশাক শিল্প কারখানার মালিকরা সরকারি নির্দেশনা উপেক্ষা করে তাদের ইচ্ছামত সারা দেশ থেকে শ্রমিক এনে কারখানা চালাচ্ছে, পুলিশি সিদ্ধান্তে ইফতার বাজার খুলে দেয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী নিজে মাস্কের মান নিয়ে কথা বলার পরও মাস্কের মান নিয়ে কথা বলায় দুইজন চিকিৎসকের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে, করোনাকালেও স্বাস্থ্যখাতে কেনাকাটায় ভয়ংকর দুর্নীতি হয়েছে, খাদ্যত্রাণ প্রদানের তালিকা প্রণয়নে দুর্নীতি, অনিয়ম, স্বজনপ্রীতি হয়েছে, খাদ্যত্রাণ চুরির ঘটনা ঘটছে, এক মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আরেক মন্ত্রণালয়ের সমন্বয়হীনতা নগ্নভাবে প্রকাশিত হচ্ছে। অবস্থা এমন দাঁড়িয়েছে যে, কেউ কেউ নিজেদের প্রধানমন্ত্রীর চেয়েও ক্ষমতাধর হিসাবে প্রমাণ দিচ্ছে।
জাসদ নেতৃদ্বয় বলেন, যখন আইইডিসিআর, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, দেশের মহামারি রোগ বিশেষজ্ঞগণ আশঙ্কা করছেন করোনা সংক্রমণ বিস্তারের ক্ষেত্রে মে মাসসহ আগামী দুইমাস বাংলাদেশের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ তখন সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা ও সমন্বয় ছাড়া এলোপাথাড়িভাবে লকডাউন শিথিল করা, লকডাউন তুলে নেয়া, সব কিছু খুলে দেয়া প্রধানমন্ত্রীর মানুষ বাঁচানোর, দেশ বাঁচানোর ঐকান্তিক অক্লান্ত প্রচেষ্টার সুফলকে ধ্বংস করে দিতে পারে।
জাসদ নেতৃদ্বয় প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা ও সমন্বয় ছাড়া এলোপাথাড়িভাবে লকডাউন শিথিল করা, তুলে নেয়া, সব কিছু খুলে দেয়া হবে করোনার সাগর পাড়ি দিতে গিয়ে মাঝ সাগরে নৌকার হাল ছেড়ে দেয়া বা করোনার বিরুদ্ধে যুদ্ধ জয়যাত্রার অর্ধেক পথে এগিয়ে রণভঙের শামিল।
এফএইচএস/এইউএ/এফআর/পিআর