খেটে খাওয়া মানুষের কথা ভাবে না বিএনপি : তথ্যমন্ত্রী
তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘বিএনপি খেটে খাওয়া মানুষের কথা ভাবে না, সেজন্যই তারা সবকিছু বন্ধ করে দেয়ার মতো কথা বলতে পারে।’
রোববার (৩১ মে) সচিবালয়ে নিজ দফতরে সংক্ষিপ্ত ব্রিফিংয়ে ‘লকডাউন’ খোলার বিরুদ্ধে বিএনপির বক্তব্য নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি একথা বলেন।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর প্রতিদিন নানা কথা বলছেন। বিএনপির বক্তব্যে মনে হয়, তাদের চিন্তাধারা একপেশে। দেশের কোটি কোটি খেটে খাওয়া মানুষের কথা তারা মোটেও চিন্তা করে না। প্রতিদিনের আয়ের ওপরই যে কোটি কোটি মানুষের জীবন-জীবিকা চলে, তাদের মুখে আহার ওঠে, সেই কথাটা মোটেই তারা চিন্তা করে না। সেজন্যই তারা সবকিছু একেবারে বন্ধ করে দেয়ার মতো কথা বলতে পারে, কারফিউ দেয়ার কথাও মাঝেমধ্যে তারা বলে।
‘আমাদের দেশ একটি খেটে খাওয়া মানুষের দেশ, এখানে কোটি কোটি মানুষ তাদের প্রতিদিনের উপার্জনের ওপর নির্ভর করে, তাদের কথা মাথায় রেখেই সরকার সঠিক পদক্ষেপ নিয়ে এগোচ্ছে’— বলেন ড. হাছান।
জীবনরক্ষার জন্য জীবিকাকেও রক্ষা করতে হয় এবং সরকারকে জীবন ও জীবিকা দুটিই রক্ষার জন্য কাজ করতে হয় উল্লেখ করে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘সে কারণেই পৃথিবীর উন্নত দেশগুলো অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড শুরু করেছে। যুক্তরাজ্যে মৃত্যুহার ১৪ শতাংশের বেশি, সেখানে বেশ আগেই সমস্ত কর্মকাণ্ড শুরু হয়েছে। বেলজিয়ামে মৃত্যুর হার ১৬ শতাংশের বেশি, সেখানে গত সপ্তাহে সবকিছু খুলে দেয়া হয়েছে। ইতালি, স্পেনে কী বিপর্যস্ত অবস্থা ছিল! সেখানেও অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড শুরু হয়েছে। ইউরোপের অন্যান্য দেশেও তা শুরু হয়েছে। পাকিস্তানে বেশ কদিন আগে সবকিছু খুলে দেয়া হয়েছে। ভারতে দুই সপ্তাহের বেশি সময় আগে ট্রেনসহ নানা গণপরিবহন চালু করা হয়েছে, বিভিন্ন রাজ্যে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড শুরু হয়েছে। আর আমাদের দেশে সরকারের সঠিক পদক্ষেপের ফলে মৃত্যুর হার ১.৩৬ শতাংশ যা ভারত, পাকিস্তান ও ইউরোপ-আমেরিকার চেয়ে অনেক কম।’
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, বাংলাদেশেও মানুষের জীবনজীবিকা রক্ষার জন্যই প্রধানমন্ত্রী ২৬ মার্চ থেকে ঘোষিত সাধারণ ছুটি আজকের পর আর প্রলম্বিত করেননি। কারণ আমাদের দেশ একটি খেটে খাওয়া মানুষের দেশ। এখানে মাসের পর মাস সবকিছু বন্ধ করে রাখা সম্ভব নয়। যেখানে ইউরোপের উন্নত দেশগুলো পারেনি, সেখানে প্রতিদিন এখনও বহু মানুষের মৃত্যু হচ্ছে, প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে, তারপরও তারা অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড শুরু করেছে।
একই সাথে সতর্কবার্তা উচ্চারণ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘তবে এই অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড শুরু করা কিংবা ছুটি প্রলম্বিত না করার মানে এই নয় যে, আমরা করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব শুরু হওয়ার আগে যেভাবে চলতাম, সেভাবে চলব। এখন অবশ্যই আমাদের স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে, সবাইকে মাস্ক পরতে হবে, জনসমাগম এড়িয়ে চলতে হবে, সব ধরনের শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। আড্ডা থেকে শুরু করে সামাজিক মেলামেশা পরিহার করতে হবে।’
‘মনে রাখতে হবে, আমার সুরক্ষা আমার হাতে’ উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, শুধুমাত্র প্রয়োজনেই আমরা ঘর থেকে বের হব ও কাজ করব, অপ্রয়োজনীয় কোনো কিছু করব না, তাহলেই আমরা আমাদেরকে সুরক্ষা দিতে পারব।
এমইউএইচ/এমএআর/এমএস