মন্ত্রীদের জেলা সদরে চিকিৎসা নেয়া বাধ্যতামূলক করুন : আলাল

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৫:১৫ পিএম, ১৩ জুন ২০২০

দেশের স্বাস্থ্য খাতের উন্নতির জন্য মন্ত্রী-এমপিসহ সকল জনপ্রতিনিধি ও আমলাদের নিজ নিজ এলাকায় চিকিৎসা গ্রহণ বাধ্যতামূলক করার দাবি জানিয়েছেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল।

শনিবার দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এ দাবি জানান।
‘আজন্ম যোদ্ধা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীসহ করোনায় আক্রান্ত সকলের রোগমুক্তি কামনা ও চিকিৎসা পেয়ে বা না পেয়ে এই মহামারির সময়ে যারা মৃত্যুবরণ করেছে তাদের মাগফিরাত কামনা করে দোয়া মাহফিল এবং চলমান করোনা মহামারি উত্তরণে নাগরিক ভাবনা ও আমাদের ভবিষ্যৎ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এ দাবি জানান।

‘রণাঙ্গনের মুক্তিযোদ্ধা’ ও ‘মুক্তিযুদ্ধের প্রজন্ম’ নামের দুটি সংগঠন যৌথভাবে এ সভার আয়োজন করে।

করোনাকালীন দেশের চিকিৎসা-ব্যবস্থার যে ভঙুর পরিস্থিতি পরিলক্ষিত হয়েছে তা থেকে উত্তরণের জন্য সুনির্দিষ্ট প্রস্তাবনায় সাবেক সংসদ সদস্য আলাল বলেন, এই সরকার অনতিবিলম্বে একটা ঘোষণা দিক এবং ক্ষমতাসীন দলের যারা আছেন বা সরকারে যারা আছেন, মন্ত্রীরা তাদের নিজ নিজ জেলার সরকারি সদর হাসপাতালে চিকিৎসা গ্রহণ বাধ্যতামূলক। এমপিরা, বর্তমান আমলের এমপিরা, বিশেষ করে তাদের নিজ নিজ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা করা বাধ্যতামূলক। উপজেলা চেয়ারম্যান, ইউনিয়ন চেয়ারম্যান যারা, তাদের ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নেয়া বাধ্যতামূলক। আর সচিব যারা, তাদের নিজ নিজ জেলার সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নেয়া বাধ্যতামূলক। এটা যদি করতে পারে তাহলে স্বাস্থ্য খাতের উন্নতি সম্ভব। তা না হলে করোনার ভয়বাহ যে থাবা বিস্তার হচ্ছে এটা ধীরে ধীরে কোথায় গিয়ে থামবে তা আমরা নিজেরাও বলতে পারি না।

দুর্নীতিগ্রস্তদের ধরে তাদের থেকে টাকা আদায় করে করোনা ফান্ড গঠনের তাগিদ দিয়ে বিএনপির এই নীতিনির্ধারক বলেন, ‘সিকদার গ্রুপ, কাজী জাফর উল্লাহ, শামীম গ্রুপ, জি কে শামীম, খালিদ মাহামুদ চৌধুরী, বেসিক ব্যাংকের আব্দুল হাই বাচ্চু, কাজী শহিদ পাপলু, কর্নেল ফারুকের ভাই, আমাদের একমাত্র জামাতার কথাও শোনা যায়। তাদের ধরে ধরে প্রত্যেকের থেকে টাকা আদায় করে করোনা ফান্ডে যদি জমা করতে পারে তাহলে বলব সরকারের সদিচ্ছা আছে। তা না হলে সরকারকে বিশ্বাস করার কোনো কারণ নেই।’

সরকারের কঠোর সমালোচনা করে আলাল বলেন, ‘বর্তমানে যে কোভিড-১৯ একশ বছর পরপর নাকি এই ধরনের দুর্যোগ পৃথিবীতে আসে। ১৭২০ সালে প্লেগ এসেছিল, ১৮২০ সালে কলেরা এসেছিল, ১৯২০ সালে সার্স এসেছিল। আবার ২০২০সালে কোভিড-১৯ এসেছে। অর্থাৎ এক শতাব্দী পরপর। কিন্তু বাংলাদেশের দুর্ভাগ্য হচ্ছে, স্বাধীনতার ৫০ বছরের মাথায় কোভিড ১৯ এর চেয়ে ভয়াবহ মহামারি আওয়ামী লীগের শাসন। মাত্র ৫০ বছরের মাথায়। একশ বছর পর আসলেও বোঝা যেত ওইটার সাথে যোগাযোগ আছে। এরা ৫০ বছরের মাথায় এসে হাজির হয়েছে। আওয়ামী লীগ হচ্ছে ৫০ বছরের মহামারি, একশ বছরের না।’

তিনি বলেন, ১১ মার্চ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা করোনাভাইরাসকে বিশ্বমহামারি ঘোষণা করে কিন্তু আমরা সতর্ক হইনি। নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী, স্বাস্থ্যমন্ত্রী করোনা শুরুর প্রাক্কালে এ নিয়ে যেসব উক্তি করেছেন সে নিয়েও মন্ত্রীদের কটাক্ষ করেন সাবেক এই সংসদ সদস্য।

তিনি বলেন, ‘আমরা ১০ টাকার চক্কর দেখছি, ১০ টাকায় ব্যাংক অ্যাকাউন্ট, ১০ টাকায় চা-সামুচা, ১০ টাকায় চিকিৎসা, ১০ টাকায় স্যানিটারি— এসব ১০ টাকার চক্কর হচ্ছে আওয়ামী লীগের পাপের নমুনা।’

আলাল বলেন, বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে ড. কামাল হোসেনের ওপর আক্রমণ হলো তার তদন্ত প্রতিবেদন আজ পর্যন্ত জমা হয়নি। চিত্রশিল্পী শহিদুল আলমকে অন্যায়ভাবে নির্যাতন করা হলো। সরকার ভিন্নমতকে সহ্য করতে পারে না।

২০২০-২১ অর্থবছরের ঘোষিত বাজেট মোবাইল কলচার্জে ভ্যাট আরোপের তীব্র সমালোচনা করেন সাবেক এই আইনপ্রণেতা। জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি ইশতিয়াক আজিজ উলফাতের সভাপতিত্বে সভায় ইন্টারনেটে যুক্ত হন বিএনপির সাবেক নেতা কর্নেল (অব.) অলি আহমদ, ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ নোমান, মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, অধ্যাপক আসিফ নজরুল, ডাকসু ভিপি নুরুল হক। এছাড়া সভায় উপস্থিত ছিলেন নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শওকত মাহমুদ প্রমুখ।

কেএইচ/এমএআর/এমকেএইচ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।