‘সরকারের অদক্ষতায় বিশ্বে বাংলাদেশ ঝুঁকিপূর্ণ বলে চিহ্নিত হচ্ছে’
সরকারের অদক্ষতায় বাংলাদেশ এখন সারাবিশ্বে ‘ঝুঁকিপূর্ণ দেশ’ হিসেবে চিহ্নিত হচ্ছে বলে মনে করে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জেএসডি।
রোববার (১২ জুলাই) দলটির সভাপতি আ স ম আবদুর রব ও সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট ছানোয়ার হোসেন তালুকদার এক বিবৃতিতে এ কথা বলেন।
নেতাদ্বয় বলেন, করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণের নামে সরকার যে কাণ্ডজ্ঞানহীন এবং দায়িত্বহীন আচরণ করেছে ও করছে তার ফলশ্রুতিতে ইতালি, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়াসহ অনেক দেশ বাংলাদেশের সাথে বিমান যোগাযোগ বন্ধ করে দিয়েছে। এভাবে চলতে থাকলে সারাবিশ্ব থেকে বাংলাদেশ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়বে, যার পরিণতি হবে ভয়াবহ।
এর দায় সরকারকেই বহন করতে হবে জানিয়ে জেএসডির পক্ষ থেকে ছয় দফা প্রস্তাবনা উপস্থাপন করা হয় বিবৃতিতে।
বিবৃতিতে নেতাদ্বয় বলেন, করোনা নিয়ন্ত্রণের প্রশ্নে সরকার শুরু থেকেই ভুলের পর ভুল করে আসছে। প্রবাসী বাংলাদেশিদের দেশ ভ্রমণের সময় যথাযথ কোয়ারেন্টাইন করতে পুরোপুরি ব্যর্থ হওয়া, লকডাউনের পরিবর্তে ছুটি ঘোষণা করা, গার্মেন্টস শ্রমিকদের কাজে যোগদান এবং ফেরত পাঠানো নিয়ে নাটকীয়তা, শুরুতে মাত্র একটি কেন্দ্রে করোনা পরীক্ষা সীমাবদ্ধ রাখার অযৌক্তিক সিদ্ধান্ত, রমজানের ঈদে ঢাকা ছাড়ার প্রশ্নে নানাবিদ সিদ্ধান্ত, লকডাউন বাস্তবায়নে সিদ্ধান্তহীনতা, সীমিত পর্যায়ে পরিবহন চালাতে গিয়ে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখায় ব্যর্থতা এবং সবশেষে জোন চিহ্নিতকরণের নামে লাল-সবুজ-হলুদ নাটক মঞ্চায়নের ফাঁকা ঘোষণা দেশব্যাপী করোনার বিস্তারে সহায়তা এবং করোনা সংকট মোকাবিলা জটিলতর করেছে।
‘এছাড়া করোনা মোকাবিলায় জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ উপর্যুপরি উপেক্ষা, করোনা পরীক্ষায় ফি নির্ধারণ, চিকিৎসকদের জন্য নিম্নমানের সুরক্ষা সামগ্রী ক্রয় এবং বিতরণ, হাসপাতালসমূহে করোনা ব্যবস্থাপনায় ব্যর্থতা, রিজেন্টের মতো লাইসেন্সবিহীন ভুয়া প্রতিষ্ঠানকে করোনা পরীক্ষার অনুমতি দেয়া, স্বাস্থ্যসহ সকলখাতে সীমাহীন দুর্নীতি ও লুটপাট, লন্ডভন্ড স্বাস্থ্য ব্যবস্থা এবং সর্বোপরি টেস্টবিহীন করোনা পরীক্ষার ভুয়া সার্টিফিকেট প্রদান বাংলাদেশকে আজ ‘ঝুঁকিপূর্ণ দেশ’ হিসেবে চিহ্নিত হওয়ার পর্যায়ে নিয়ে গেছে।’
আ স ম রব ও অ্যাডভোকেট ছানোয়ার এমন পরিস্থিতিতে সরকারের শুভ চেতনার উদয় হওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেন। তারা সরকারের নিকট ছয় দফা প্রস্তাবনা তুলে ধরেন। প্রস্তাবনাগুলো হলো- জাতীয় স্বাস্থ্য কাউন্সিল (এনএইচসি) গঠন করা; করোনা নিয়ন্ত্রণে জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ মতো ব্যবস্থা নেয়া; করোনা পরীক্ষার ফি প্রথার বাতিল করা; করোনা পরীক্ষার সংখ্যা বাড়ানোর জন্য উপজেলা পর্যায়ে ল্যাব স্থাপন করা; দেশব্যাপী সক্রিয়ভাবে করোনা রোগী শনাক্ত করে আইসোলেশন ও চিকিৎসা, কন্টাক্ট ট্রেসিং এবং কোয়ারেন্টাইনসহ করোনা প্রতিরোধের কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করা; টেস্টবিহীন করোনা পরীক্ষার ভুয়া সার্টিফিকেট প্রদান রোধে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া।
জেএসডি নেতারা বলেন, আশা করছি উল্লিখিত ব্যবস্থা গ্রহণ করে জরুরি ভিত্তিতে দেশ ও জাতিকে ‘ঝুঁকিপূর্ণ দেশ’ হিসেবে চিহ্নিত হওয়ার অপবাদ থেকে অব্যাহতির ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এইউএ/এইচএ/এমকেএইচ