খালেদার স্বাস্থ্যের আপডেট জানাতে সেল গঠন দরকার, বলছেন নেতাকর্মীরা
বিএনপির নেতাকর্মীরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বেগম খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের খোঁজখবর রাখছেন। অল্প সংখ্যক নেতাকর্মী সরাসরি চিকিৎসক এবং দায়িত্বশীল নেতাদের কাছ থেকে দলীয় প্রধানের সংবাদ জানলেও অধিকাংশই গণমাধ্যম থেকে জানছেন। তবে খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের বিভ্রান্তিকর তথ্য এড়াতে এবং তার স্বাস্থ্যের হালনাগাদ তথ্য জানাতে সেল গঠনের দাবি জানিয়েছেন নেতাকর্মীরা।
সূত্রমতে, বিএনপির সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটিতে নিয়মিত ভার্চুয়ালি খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য পরিস্থিতি নিয়ে পর্যালোচনা করা হয়। চিকিৎসকরা নিয়মিত খালেদা জিয়ার পরিস্থিতি স্থায়ী কমিটির সদস্যদের অবহিত করেন।
বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট রফিক শিকদার জাগো নিউজকে বলেন, ‘আমি চিকিৎসকদের কাছ থেকে নিয়মিত ম্যাডামের খোঁজখবর রাখছি। পাশাপাশি গণমাধ্যমে মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এবং চিকিৎসকরা যে বক্তব্য দেন সেটা শুনছি। এভাবেই ম্যাডামের স্বাস্থ্যগত বিষয়ে জানছি।’
বিএনপি চেয়ারপারসনের প্রেস উইং সদস্য শায়রুল কবির খান বলেন, ‘অনেকে আমাকে ফোন করে ম্যাডামের স্বাস্থ্য বিষয়ে খোঁজ-খবর নিচ্ছেন। এ ছাড়া গণমাধ্যমে দলের মহাসচিব এবং চেয়ারপারসনের চিকিৎসকরা বক্তব্য দিচ্ছেন, তা থেকে দলের নেতাকর্মীরা এবং দেশবাসীসহ বিশ্ববাসী ম্যাডামের স্বাস্থ্যের ব্যাপারে অবগত হচ্ছেন।’
সভা-সমাবেশের মঞ্চে একসময় বেগম খালেদা জিয়ার সহযোগী ছিলেন জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহম্মেদ। তিনি কীভাবে তার নেত্রীর স্বাস্থ্যের খোঁজ খবর রাখছেন জানতে চাইলে জাগো নিউজকে বলেন, ‘দল থেকে সেভাবে ম্যাডামের বিষয়ে আলাদাভাবে জানানো হয় না। তবে আমি চিকিৎসকদের কাছ থেকে মাঝেমধ্যে ম্যাডামের খোঁজখবর নেই এবং সংবাদমাধ্যমে দলের মহাসচিব, চিকিৎসকরা যে বক্তব্য দেন সেখান থেকেই ম্যাডামের খোঁজখবর জানতে পারি।’
একই বক্তব্য দেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আবু নাসের মোহাম্মদ রহমতুল্লাহ, যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু এবং চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবদিন ফারুক।
তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কেন্দ্রীয় কমিটির একজন সহ-সম্পাদক বলেন, ‘ম্যাডামের স্বাস্থ্য বিষয়ে খোঁজ-খবর দলীয় নেতাকর্মীরা যাতে জানতে পারেন সে ব্যাপারে দলের আলাদা একটা সেল গঠন করা উচিত ছিল। কারণ সোশ্যাল মিডিয়া এবং গণমাধ্যমে ম্যাডামের বিষয় বিভিন্ন খবর আসছে, যা নেতাকর্মীদের মধ্যে বিভ্রান্তি ছড়িয়েছে।’
বেগম খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যগত বিষয়ে দলীয় নেতাকর্মীদের তথ্য দেয়ার জন্য আলাদা কোনো সেল গঠন করা হয়েছে কিনা জানতে চাইলে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত দফতর সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স জাগো নিউজকে বলেন, ‘সেভাবে কোনো সেল গঠন করা হয়নি, প্রতিদিন অসংখ্য নেতাকর্মী শুভাকাঙ্ক্ষী-শুভানুধ্যায়ী আমাকে ও দফতরে কল করে ম্যাডামের খোঁজখবর নিচ্ছেন। আমাদের মহাসচিব স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকে ম্যাডামের শারীরিক সর্বশেষ পরিস্থিতি অবগত করেছেন। কূটনীতিকদের জানিয়েছেন। এভাবেই ম্যাডামের শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে সবাই জানছেন।’
গত ১১ এপ্রিল খালেদা জিয়ার শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়। তার বাসভবন ফিরোজার আরও আটজন ব্যক্তিগত স্টাফও আক্রান্ত হন। এরপর ২৪ এপ্রিল (শনিবার) তার দ্বিতীয় করোনা টেস্টের রিপোর্ট পজিটিভ আসার কথা জানান তার চিকিৎসক ডা. এফ এম সিদ্দিকী।
২৭ এপ্রিল আবার সিটি স্ক্যানসহ প্রয়োজনীয় কিছু পরীক্ষার জন্য খালেদা জিয়াকে এভারকেয়ার হাসপাতালে নেয়া হয়। সেই রাতেই তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
এরপর গত সোমবার (৩ মে) শ্বাসকষ্ট বেড়ে যাওয়ায় তাকে করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) স্থানান্তর করা হয়।
কেএইচ/ইএ/জেআইএম