বীর উত্তম খেতাব পেলেও মেজর জিয়া কখনো মুক্তিযুদ্ধ করেননি: মোশাররফ

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক চট্টগ্রাম
প্রকাশিত: ০২:৪৫ এএম, ১৩ জানুয়ারি ২০২৩

মুক্তিযুদ্ধে অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ মেজর জিয়াউর রহমানকে বীর উত্তম খেতাব দেওয়া হলেও তিনি কখনো মুক্তিযুদ্ধ করেননি বলে দাবি করেছেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন।

তিনি বলেছেন, যারা দেশের ভেতরে যুদ্ধ করেছেন তারাই সবচেয়ে বীরত্বের অধিকারী। মুক্তিযুদ্ধ করেছে আমাদের দেশের দামাল ছেলেরা, কিন্তু খেতাব পেয়েছে যারা ক্যাম্পে পড়ে ছিল। মেজর জিয়া বীর উত্তম হয়েছেন, কিন্তু তিনি কখনো যুদ্ধ করেননি। যেখানে যুদ্ধ সেখানে তিনি ছিলেন না।

বৃহস্পতিবার (১২ জানুয়ারি) বিকেলে চট্টগ্রামের মীরসরাই মহাজনহাট ফজলুর রহমান স্কুল এন্ড কলেজ মাঠে এক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক জেনারেল আতাউল গণি ওসমানীকে ‘বেঈমান’ আখ্যা দিয়ে ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন বলেন, পঁচাত্তরে বঙ্গবন্ধু হত্যার পর জেনারেল ওসমানী আওয়ামী লীগ ছেড়ে জনতা লীগ গঠন করেছিলেন। তার দলে যোগ দেওয়ার জন্য আমাকে ডেকেছিল। কিন্তু আমি যাইনি। উনি ভেবেছিলেন বঙ্গবন্ধু হত্যার পর আওয়ামী লীগ শেষ হয়ে যাবে। আমি সেদিন বলেছিলাম- আওয়ামী আছে, আওয়ামী লীগ থাকবে।

তিনি বলেন, বীর উত্তম খেতাব কে পেয়েছেন? যারা যুদ্ধ করেননি তারা পেয়েছেন। যারা যুদ্ধ করেছেন, তারা বীর অধম হয়েছেন। আমি আগামী বছর একটি বই লিখবো। মুক্তিযুদ্ধে কে, কতটুকু, কোথায় যুদ্ধ করেছেন, বইয়ে সেটা থাকবে। যারা সেক্টর কমান্ডার ছিল তারা ক্যাম্পে ছিল, তারা ময়দানে যাননি। যখন ইন্দিরা গান্ধী যুদ্ধ ঘোষণা করেছিলেন তখন ইন্ডিয়ান আর্মির পেছনে তারা যুদ্ধে এসেছিল। কিন্তু সামনে যায়নি। ভারতীয় সৈন্যরা অগ্রভাগে যুদ্ধ করেছেন।

তিনি আরও বলেন, মুক্তিযুদ্ধের নয় মাস দেশের অভ্যন্তরে থেকে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে বিভিন্ন গেরিলা অপারেশনে অংশগ্রহণ ও তাদের থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা যারা করেছিল, মুক্তিযুদ্ধে তাদের অবদান কম নয়। কোনো মেজর বলে দিলো আর অমনিতেই মুক্তিযুদ্ধে সাধারণ মানুষ জীবন দিয়েছে, তা কিন্তু নায়। বাঙালি ঐতিহাসিক ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর ডাকে সাড়া দিয়েই মুক্তিযুদ্ধ গিয়েছিল।

তিনি বলেন, বিভিন্ন সময় আন্দোলন সংগ্রাম করতে গিয়ে পুলিশের লাঠি পেটা খেয়েছি। ৩ নভেম্বর জেল হত্যার প্রতিবাদ করতে শান্তিপূর্ণ মিছিল করতে যাই। তখন জিয়ার মন্ত্রিসভার মন্ত্রী ব্যারিস্টার সুলতানের নির্দেশে পুলিশ বাধা দেয়। সন্ত্রাসী লেলিয়ে হামলা চালায়। আমার পায়ের রগ কেটে দেয়, পেছনে ছুরি মারে। আমি নিউমার্কেট মোড়ে অজ্ঞান হয়ে পড়ে থাকি। ওই ঘটনায় মেডিকেলে চার ঘণ্টার অপারেশন হয়।

চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের নির্বাহী কমিটির সদস্য মাহবুব রহমান রুহেলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন- চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এম এ সালাম, মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি বদিউল আলম। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এটিএম পেয়ারুল ইসলাম, দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান, উত্তর জেলার সাধারণ সম্পাদক শেখ আতাউর রহমান, চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সিনিয়র সহ-সভাপতি চৌধুরী ফরিদ, সাধারণ সম্পাদক দেবদুলাল ভৌমিক প্রমুখ।

অনুষ্ঠানে চট্টগ্রাম নগর ও দক্ষিণ জেলার বিভিন্ন স্তরের আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা অংশ নেন। পরে ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফের ৮০তম জন্মদিনের কেক কাটা হয়।

ইকবাল হোসেন/এমকেআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।