সংসদে নতুন মুখ

ভোটের প্রচারের মতোই গ্রামে গ্রামে গিয়ে মানুষের কথা শুনবো

সালাহ উদ্দিন জসিম
সালাহ উদ্দিন জসিম সালাহ উদ্দিন জসিম , জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০২:৩১ পিএম, ১৪ জানুয়ারি ২০২৪

আলাউদ্দিন আহমেদ চৌধুরী নাসিম। দ্বাদশ জাতীয় সংসদে নবীন সদস্য। তবে, বয়সে ও রাজনীতিতে প্রবীণ। ১৯৬১ সালের ৭ নভেম্বর ফেনী জেলার পরশুরামের ঐতিহ্যবাহী গুথুমা চৌধুরী বাড়িতে তার জন্ম। পেশায় বর্তমানে ব্যবসায়ী হলেও বিসিএস (প্রশাসন) ক্যাডারের কর্মকর্তা ছিলেন তিনি। এক সময়ের ছাত্রলীগের ডাকসাইটের এ নেতা ‘৯৬ সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রটোকল অফিসার ছিলেন। ২০০১ সালে বিরোধীদলীয় নেতার সহকারী একান্ত সচিব ছিলেন। পরে নানা চড়াই-উতরাই পেরিয়ে ২০০৮ সালে তিনি উপ-সচিব পদে থাকা অবস্থায় স্বেচ্ছায় অবসর গ্রহণ করেন।

২০১২ সালে তাকে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য নির্বাচিত করা হয়। মাঝখানে দীর্ঘদিন কেন্দ্রীয় রাজনীতিতে নিষ্ক্রিয় থাকলেও ফেনীতে তার অবদান ছিল অনেক।

এবার দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ফেনী-১ আসনে মনোনয়ন পান তিনি। বেশ জোয়ার তুলেই নির্বাচিত হন। সংসদের নতুন এ মুখ মুখোমুখি হন জাগো নিউজের সঙ্গে। অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে নবনির্বাচিত সংসদ সদস্য আলাউদ্দিন আহমেদ চৌধুরী নাসিম বলেন, ‘দীর্ঘদিন রাজনীতির মাঠে ছিলাম। এখন সংসদীয় রাজনীতিতে আসলাম। অনুভূতি অবশ্যই ভালো।’

সাদামাটা কর্মপরিকল্পনার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘কর্মপরিকল্পনা হচ্ছে-জনগণের সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত হয়ে এলাকার উন্নয়ন এবং দেশের আইন প্রণয়ণে যথাযথভাবে ভূমিকা রাখা।’

নির্বাচনী অভিজ্ঞতার বিষয়ে নবনির্বাচিত এমপি নাসিম বলেন, ‘নির্বাচনী মাঠে ৫০ বছরের খরা দূর করার জন্য আওয়ামী লীগ সভানেত্রী আমাকে ফেনী-১ আসেন পাঠিয়েছেন। আমি তার প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি। নির্বাচনী মাঠে আমি একটা কথা বলেছিলাম, এটি বিএনপি অধ্যুষিত এলাকা নয়, খালেদা জিয়া অধ্যুষিত এলাকা ছিল কিছুদিন আগ পর্যন্ত। কারণ এখানে বিএনপি এবং আওয়ামী লীগের ভোটের হার ছিল সমান সমান। আমার বিবেচনায় ৭০ শতাংশের কাছাকাছি। খালেদা জিয়া যখন এখান থেকে নির্বাচিত হয়েছেন, খুব বেশি ভোটে নির্বাচিত হননি। পরে দেখা গেছে, তার ভোট বেড়ে গেছে। স্বাভাবিকভাবেই একটা এলাকা থেকে একজন প্রধানমন্ত্রী হলে তার প্রতি মোহ কাজ করে। সুতরাং ৩০ শতাংশ সাধারণ বা নিরপেক্ষ ভোট খালেদা জিয়ার পক্ষে চলে যায়। এজন্য আমি এটাকে খালেদা জিয়া অধ্যুষিত বলি’।

jagonews24

তিনি বলেন, ‘মানুষের ভেতর প্রচণ্ড আগ্রহ ছিল আমাকে নিয়ে। কারণ আমি দীর্ঘদিন ধরে এ অঞ্চলে রাজনীতির সঙ্গে জড়িত, সেই ছাত্র জীবন থেকেই। পরে আমি প্রশাসন ক্যাডারে জয়েন করি। তারপর ১৯৯৬ সালে জাতির জনকের কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কার্যালয়ে কাজ করার সুবাদে এলাকার উন্নয়নে ব্যাপক ভূমিকা রেখেছি। সেটা জনগণ মনে রেখেছে। তখন থেকে সরকারিভাবে এবং পরে চাকরি ছেড়ে ব্যবসায় আত্মনিয়োগের পর ব্যক্তিগত উদ্যোগেও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছি। আমি মনে করেছি, এ অঞ্চলের জন্য কাজ করাটা আমার দায়িত্বের মধ্যে পড়ে। যখন সুযোগ পেয়েছি, করেছি। নির্বাচন না করলেও এ কাজ আমি করে যেতাম। নির্বাচনের যখন সুযোগ পেয়েছি, মাঠে গিয়ে দেখেছি, জনগণের মধ্যে স্বতঃস্ফূর্ত সাড়া।’।

নাসিম বলেন, ‘আমি আমার এলাকার জনগণের কাছে কৃতজ্ঞ। কারণ আমি যেখানেই গেছি, তারা আমাকে ব্যাপকভাবে গ্রহণ করেছেন। এখন তাদের সেই ভালোবাসার প্রতিদান দেওয়ার পালা। আগামী দিনে ভোটের প্রচারের মতোই গ্রামে গ্রামে গিয়ে মানুষের কথা শুনবো। সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করবো। হয়তো সবগুলো সমাধান করতে পারবো না, আমার সঙ্গে কথা বলে মানুষ শান্তি পাবে, আমি সেটাই দেওয়ার চেষ্টা করবো। এটাই আমার প্রতিশ্রুতি।’

১০ জানুয়ারি সংসদে অন্যদের সঙ্গে শপথ নেন আলাউদ্দিন আহমেদ চৌধুরী নাসিম। ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে ফেনী-১ আসনে জয়ী হন তিনি। ভোটে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী হিসেবে ১ লাখ ৮২ হাজার ৭৬০ ভোট পান। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী লাঙ্গল প্রতীকের প্রার্থী শাহরিয়ার ইকবাল পান ৪ হাজার ১৯৫ ভোট। ফেনী-১ আসনে ১৪টি ইউনিয়ন ও দুটি পৌরসভায় মোট ভোটার ৩ লাখ ৫৯ হাজার ৩০৬ জন। আসনটির ১১৫ ভোটকেন্দ্রের ৭৭৯ ভোটকক্ষে ব্যালটের মাধ্যমে ভোটগ্রহণ করা হয়।

এসইউজে/এমআইএইচএস/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।