মিশিগানে জেমস উন্মাদনা!

আশিক রহমান
আশিক রহমান আশিক রহমান মিশিগান, যুক্তরাষ্ট্র
প্রকাশিত: ০৮:৪১ এএম, ০২ আগস্ট ২০২৩

ব্যান্ড তারকা জেমসের গিটারের সুর ও গান আনন্দে মেতে উঠেন মিশিগানে বসবাসরত বাংলাদেশি আমেরিকানরা। দর্শক ও স্রোতাদের বাঁধভাঙা উল্লাসে প্রায় ২০ হাজার মানুষের উপস্থিতিতে মুখরিত হয়ে ওঠে ডিট্রয়েট সিটির বাংলা টাউন নামক জেইন ফিল্ডের মেলা প্রাঙ্গন।

তিন দিনব্যাপী ২২তম নর্থ আমেরিকা বাংলাদেশি ফেস্টিভ্যালের শেষদিন ছিল ৩০ জুলাই রোববার। দুপুর থেকেই দর্শক-স্রোতা আসতে থাকেন মেলা প্রাঙ্গনে। একটা সময় বাংলাদেশ অ্যাভিনিউ খ্যাত কনান্ট- ডেভিসন রোডের ট্রাফিক অবস্থা দুর্বল হয়ে পড়ে। ট্রাফিক জ্যাম সরাতে স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনের হিমশিম পোহাতে হয়।

সময় যত গড়াতে থাকে বাংলাদেশিদের আগমন ততই বাড়তে থাকে। আয়োজকদের ঘোষণা অনুযায়ী বিকেল ৬টায় নগর বাউলের জেমস এর আসার কথা থাকলেও তীর্থের কাকের মতো অপেক্ষা করেন প্রিয় শিল্পীর গান শুনতে ও দেখতে।

অভিনেত্রী রীচি সোলায়মান ও শারমিনা সিরাজ সোনিয়া যখন ২২তম নর্থ আমেরিকা বাংলাদেশি ফেস্টিভ্যালে ব্যান্ডের গুরুর নাম উচ্চারণ করেন শুরু হয় দর্শকদের তুমুল করতালি। শেষ পর্যন্ত রাত ১০টায় স্টেজে আসেন গামছা পরিহিত বাবরি দোলানো চুলের বাহারে সজ্জিত জেমস।

ব্যান্ডের গুরু জেমসের মিশিগান আগমনে নতুন প্রজন্মের বাংলাদেশিদের মধ্যে ছিল উন্মাদনা। জেমসের আমেরিকা সফরে কয়েকটি কনসার্ট হলেও মিশিগানেই হলো সর্বশেষ এবং উন্মুক্ত কনসার্ট। এই কনসার্টে মিশিগান ছাড়াও ওহাইও, শিকাগো (ইলিনয়স), নিউজার্সি এবং কানাডা থেকে কয়েক শত বাংলাদেশিরা জড়ো হন প্রিয় শিল্পীর গান শোনতে এবং এক নজর দেখতে।

মাথায় গামছা বেঁধে গিটার হাতে সুর তুলতেই পুরো মাঠজুড়ে ছিল দর্শকদের সুনসান নীরবতা, প্রথম গান কবিতা, শুরু হয় নতুন প্রজন্মের নাচ ও গুরুর সুরের সাথে সুর মেলানো। দর্শকদের অনুরোধে একে একে অনেকগুলো জনপ্রিয় গান পরিবেশন করেন এই তারকা শিল্পী। উচ্ছ্বসিত দর্শক স্রোতাদের জন্য ঢাকা থেকে নিজের ভালোবাসার বার্তা দেন এভাবেই ‘উম্মা উম্মা’।

মেলায় দেখতে আসা দর্শকরা প্রিয় শিল্পীর গান শুনে অভিব্যক্তি প্রকাশ করেন। নাম প্রকাশ না করা শর্তে এক নারী ভক্ত জানান, জেমসের অনেক গান শুনেছেন, জীবনে কখনো সরাসরি দেখননি। মেলায় প্রিয় জেমস কে কাছে থেকে দেখা ছিল স্বপ্নের মতো।

মেলার শেষ দিনে পারফর্ম করেন আরেক তারকা রিজিয়া পারভিন। নিজেদের এক এক গান পরিবেশনায় দর্শকরা নেচে গেয়ে আনন্দে মাতেন। পৃথা দেব, রিয়া রহমান, প্রেমা রহমান, শফির গানে মাতোয়ারা ছিলেন কয়েক হাজার দর্শক। এমনকি মিশিগানের এ আর রহমানের গান ছিল অনবদ্য।

মেলায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন, বাংলাদেশি মালিকাধীন ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটি অফ সাইন্স এন্ড টেকনোলজির ভাইস চ্যান্সেলর আবু বকর হানিফ, ডিট্রয়েট সিটি কাউন্সিলর স্কাট বেনসন, বেপাক এর সভাপতি এবং ব্যবসায়ী এহসান তাকবিম ববিসহ কমিউনিটির অনেক নেতারা।

মেলায় ছিল দেশীয় কাপড়ের দোকান এবং খাবারের স্টল। দর্শকদের প্রত্যাশা প্রতি বছরই যেন এমন আয়োজন হয় এবং আয়োজক আকিকুল হক শামীম, এসএনএস হোম লোনের কর্ণধার নাসির সবুজ, খালেদ আহমদ, সাকের উদ্দিন সাদেক, রায়হান আহমেদসহ কমিটির সকল সদস্যদের ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান। এমনকি আয়োজকরাও ঘোষণা দিয়েছেন, আগামী ২৩তম মেলাটি হবে আরও জাঁকজমকপূর্ণ এবং আকর্ষণীয়।

এমআরএম/এএসএম

প্রবাস জীবনের অভিজ্ঞতা, ভ্রমণ, গল্প-আড্ডা, আনন্দ-বেদনা, অনুভূতি, স্বদেশের স্মৃতিচারণ, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক লেখা পাঠাতে পারেন। ছবিসহ লেখা পাঠানোর ঠিকানা - [email protected]