প্রবাসী সোহাগ হাসানের মা পেলেন রত্নগর্ভা সম্মাননা

আহসান রাজীব বুলবুল
আহসান রাজীব বুলবুল আহসান রাজীব বুলবুল , কানাডা প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ০১:৫১ এএম, ০৯ মে ২০২২
রত্নগর্ভা সম্মাননাপ্রাপ্ত মিসেস ফয়েজুন্নেছা ও সোহাগ হাসান

বিশ্ব মা দিবস উপলক্ষে রত্নগর্ভা ৩৮ মাকে সম্মাননা দিয়েছে আজাদ প্রোডাক্টস প্রাইভেট লিমিটেড। রোববার (৮ মে) রাজধানীর ঢাকা ক্লাবের স্যামসন এইচ চৌধুরী সেন্টার মিলনায়তনে রত্নগর্ভা মায়েদের হাতে ‘রত্নগর্ভা মা-২০২১’ পুরস্কার তুলে দেন অতিথিরা।

সম্মাননাপ্রাপ্তদের মধ্যে রয়েছেন বিশিষ্ট সংগীতশিল্পী ও কমিউনিটি ব্যক্তিত্ব কানাডার আলবার্টা প্রদেশের ক্যালগেরি প্রবাসী সোহাগ হাসানের মা ফয়েজুন্নেছা বেগম।

আট সন্তানের জননী ফয়েজুন্নেছার স্বামী অবসরপ্রাপ্ত প্রকৌশলী আব্দুল সাত্তার বর্তমানে চাঁদপুরে বসবাস করেন। আট সন্তানের প্রত্যেকেই দেশ-বিদেশের স্বনামধন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে উচ্চশিক্ষা লাভ করে চাকরিতে নিয়োজিত। ভাইবোনদের মধ্যে সোহাগ হাসান পঞ্চম।

প্রবাসী সোহাগের বড় ভাই ইসমে আজম পনির আমেরিকা থেকে কম্পিউটার সায়েন্সে বিএসসি এবং এমবিএ সম্পন্ন করে দীর্ঘদিন ধরে আমেরিকার এটিএন টি'র প্রিন্সিপাল প্রোগ্রাম ম্যানেজার হিসেবে নিয়োজিত রয়েছেন। সোহাগ হাসান চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক প্রশাসন বিভাগ থেকে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করে আলবার্টার সাউদার্ন আলবার্টা ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি থেকে পিপিডি ডিগ্রি সম্পন্ন করে বর্তমানে আগাড ওয়েল অ্যান্ড গ্যাস ল্যাবে কর্মরত।

ফয়েজুন্নেছার অন্য ছয় সন্তানের মধ্যে জান্নাতুল মাওয়া চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করে বর্তমানে একটি বেসরকারি এনজিওতে কর্মরত। এ এস এম মঈন ডুয়েট থেকে বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং (সিভিল) সম্পন্ন করে বর্তমানে ঢাকা আনোয়ার গ্রুপে ডিরেক্টর (অপারেশন) কর্মরত। গাউছুল আজম চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে এমএসএস সম্পন্ন করে বর্তমানে মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত। আহসান হাবীব জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইতিহাসে এম এ ও পরবর্তীতে ডিপ্লোমা ইন মাল্টিমিডিয়া সম্পন্ন করে বর্তমানে ক্লিক অন মার্কেটিং কমিউনিকেশনস লিমিটেডে ম্যানেজিং ডিরেক্টর হিসেবে কর্মরত। জান্নাতুল নাঈম ইডেন মহিলা কলেজ থেকে (সমাজ বিজ্ঞান) এএমএ সম্পন্ন করে সামাজিক সেবা কার্যক্রমে নিয়োজিত। রত্নগর্ভা ফয়জুন্নেসার সর্বকনিষ্ঠ সন্তান জান্নাতুল ফেরদাউস ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে (উদ্ভিদবিজ্ঞান) এমএসসি এবং পিএইচডি সম্পন্ন করে বর্তমানে রাজশাহী কলেজের সহযোগী অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত।

মা রত্নগর্ভা সম্মানে ভূষিত হওয়ার পর ফয়েজুন্নেছার বড় সন্তান ইসমে আজম পনির গণমাধ্যমকে বলেন, সন্তানরা মাকে ঘিরেই ভালোবাসার পৃথিবী রচনা করে। মাকে খুশি করাই সব সন্তানের ব্রত হওয়া উচিত। ছোট বেলা থেকেই দেখেছি কিভাবে মা তার শাসন আর ভালোবাসা দিয়ে আমাদের আগলে রেখেছেন।

মাকে নিয়ে গর্বিত আবেগাপ্লুত কণ্ঠশিল্পী সোহাগ হাসান গণমাধ্যমকে বলেন, প্রবাসে প্রতিটা ক্ষণ যাকে খুব মিস করি, যার কল্যাণে পৃথিবীতে আলোর মুখ দেখা সেই মা আজ রত্নগর্ভা সম্মাননা নিচ্ছে এর চাইতে বড় আনন্দ সন্তানের আর কিছুই হতে পারে না। নৈতিক চরিত্র ও মূল্যবোধের শিক্ষা সন্তানকে মাই দিয়ে থাকেন। একজন আদর্শ মা সন্তানের পাশে থাকেন বিপদে বন্ধু হিসেবে। হতাশায় আশার আলোকবর্তিকা হয়ে। অসহায় অবস্থায় অভিভাবক হয়ে। সর্বোপরি সব পরিস্থিতিতে স্নেহ-দয়া ও ভালোবাসার অপার ভাণ্ডার হলেন মা। সবাই আমার মায়ের জন্য দোয়া করবেন।

রত্নগর্ভা সম্মাননা পাওয়ায় আবেগে আপ্লুত ফয়েজুন্নেছা বলেন, আমিও কোনো মায়ের সন্তান। এই আনন্দ সব সন্তানদের আনন্দ। পৃথিবীর সব মায়েদের আনন্দ। আমাদের মনে রাখা উচিত, আজ যিনি সন্তান, তিনিই আগামী দিনের বাবা কিংবা মা। বৃদ্ধ বয়সে এসে মা-বাবারা যেহেতু শিশুদের মতো হয়ে যায়, তাই তাদের জন্য সুন্দর জীবনযাত্রার পরিবেশ তৈরি করাই সন্তানের কর্তব্য। এসময় তিনি রত্নগর্ভা সম্মাননা দেয়ার জন্য কর্তৃপক্ষ ও সংশ্লিষ্ট সকলকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান।

এদিকে ক্যালগেরির প্রবাসী বাঙালিরাও সোহাগ হাসান ও তার রত্নগর্ভা মাকে অভিনন্দন জানিয়েছেন।

সম্মাননা পাওয়া ৩৮ রত্নগর্ভার মধ্যে ১৩ জনকে বিশেষ ও ২৫ জনকে সাধারণ ক্যাটাগরিতে অ্যাওয়ার্ড দেওয়া হয়।

বিশেষ ক্যাটাগরিতে অ্যাওয়ার্ড পাওয়া রত্নগর্ভা মা হলেন- হামিদা বেগম, মাহমুদা বেগম, জাহানারা বেগম, সফুরা খাতুন, মাহমুদা খাতুন, মাইমুনা আক্তার খাতুন, মাজেদা বেগম, আশা বড়ুয়া, খালেদা খানম, মাফিয়া বেগম, জাহানারা হোসেন, নাজিমা বেগম ও জান্নাতুল ফেরদৌসী।

সাধারণ ক্যাটাগরির ২৫ মা হলেন- আমেনা বেগম, লতিফা খানম, পুনুয়ারা বেগম, মর্জিনা সাখাওয়াত, সামসুন নাহার, আয়েশা খাতুন, রোকশনা আহম্মেদ, নাফিসা বেগম, ফারমিদা সাত্তার, সেলিমা খাতুন, রেহানা শফিক, অ্যাডভোকেট হাজেরা পারভীন, সুরাইয়া খানম, মাফিয়া আখতার, খোশনূর, পারুল বেগম, নাজমা আনিস, ফরিদা ইয়াসমিন, রওশনয়ারা বেগম, ওয়াজিফা খাতুন, সিদ্দিকা বেগম, শাতিল আবেদা, ফয়জুন্নেছা বেগম, মমতাজ খানম ও মমতাজ বেগম।

এমকেআর

প্রবাস জীবনের অভিজ্ঞতা, ভ্রমণ, গল্প-আড্ডা, আনন্দ-বেদনা, অনুভূতি, স্বদেশের স্মৃতিচারণ, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক লেখা পাঠাতে পারেন। ছবিসহ লেখা পাঠানোর ঠিকানা - [email protected]