লন্ডনে সাকিব আল হাসান ক্যানসার ফাউন্ডেশনের যাত্রা

মাহবুব আলী খানশূর
নানা ধরনের মানবিক ও সামাজিক কার্যক্রমের অংশ হিসেবে এবার ক্রিকেটের অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসানের উদ্যোগে শুরু হলো ‘সাকিব আল হাসান ক্যানসার ফাউন্ডেশন।’ সোমবার লন্ডনে আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা করলো ফাউন্ডেশনটি।
উত্তর লন্ডনের আরিয়ানা ব্যাঙ্কুইট হলে সন্ধ্যা ৭টায় এক গালা ডিনারে ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের টেস্ট ও টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক সাকিব আল হাসান আনুষ্ঠানিক পথ চলার ঘোষণা দেন। বাংলাদেশে ক্যানসার রোগীদের মধ্যে সচেতনতা তৈরি এবং তাদের চিকিৎসা সহায়তার জন্য টাইগার অলরাউন্ডারের এই উদ্যোগ।
এর আগেও বাংলাদেশের এই ক্রিকেট অলরাউন্ডরের উদ্যোগে নানা ধরনের মানবিক কার্যক্রম হয়েছে। করোনা মহামারির সময় সারাদেশের মানুষ লড়ছে ওই মহামারিকে রুখতে। সে সময় করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে অসংখ্য সুবিধাবঞ্চিত মানুষ দিন গুনছে কবে তাদের রোজগার আবার স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসবে।
ওই মানুষগুলোর প্রতি সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতে ‘দ্য সাকিব আল হাসান ফাউন্ডেশন’ পদক্ষেপ নিয়েছে দেশ এবং সারাবিশ্বের বিভিন্ন ব্যক্তি ও সংস্থা থেকে ফান্ড উত্তোলনের। ওই ফান্ড ব্যবহার করা হয়েছে করোনাভাইরাসে প্রভাবিত সুবিধাবঞ্চিত মানুষদের সাহায্য করার জন্য।
লন্ডনে অনুষ্ঠিত ‘সাকিব আল হাসান ক্যানসার ফাউন্ডেশন’ অনুষ্ঠানের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সাকিব ক্যান্সার ফাউন্ডেশনের জন্য যুক্তরাজ্য প্রবাসী বাংলাদেশিদের পরামর্শ ও সহযোগিতা কামনা করেন।
সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে তিনি বলেন, ক্যানসার রোগী নিয়ে তার পরিবার এবং রোগী নিজে কতটা কষ্ট করেন তা আমরা দেখি। এই জায়গা থেকে আমরা একটা ভালো উদ্যোগ গ্রহণ করার চেষ্টা করেছি। এই ফাউন্ডেশনের অগ্রগতিতে আপনাদের সবার সহযোগিতা প্রয়োজন। এখানে আসার জন্য সবাইকে ধন্যবাদ জানাই। আশা করি, আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে বাংলাদেশের জন্য ভালো কিছু করবো। আমরা সবাই আমাদের লক্ষ্য সম্পর্কে অবগত আছি।
এরপর এক ভিডিও বার্তায় সাকিব আল হাসানের স্ত্রী উম্মে আহমেদ শিশির বলেন, আপনারা জানেন, আমি আমার বাবা-মাকে ক্যানসারের কারণে হারিয়েছি। এক বছরের ব্যবধানে দু’জনকেই হারানো আমার কাছে দুঃস্বপ্নের মতো ছিল। এটা খুবই কঠিন যাত্রা, যারা এর মধ্য দিয়ে গেছেন তারা বুঝবে।
তিনি বলেন, তাই আমি চাই না, কেউ আর এমন পরিস্থিতির মধ্যে পড়ুক। ক্যানসার যদি শুরুতে ধরা পড়ে তাহলে জীবন বাঁচানো সম্ভব। এই সংগঠনের সঙ্গে কাজ করার সুযোগ পেয়ে আমি কৃতজ্ঞ। শিশিরের আবেকঘন বক্তব্যের সময় সমগ্র হলরুমজুড়ে এক হৃদয়বিদারক পরিবেশের তৈরি হয়। অনেককে সে সময় চোখ মুছতেও দেখা যায়।
‘সাকিব আল হাসান ক্যানসার ফাউন্ডেশন’ উপলক্ষে আয়োজিত ওই অনুষ্ঠানে যুক্তরাজ্য প্রবাসী বাংলা মিডিয়ার সাংবাদিক, আইনজীবী, শিক্ষক এবং নানা পেশাজীবীর মানুষ অংশ নেন। তারা সাকিবের এই মহতী উদ্যোগের প্রশংসা করেন এবং এই ফাউন্ডেশনের সব ধরনের কার্যক্রমে সহযোগিতা করার আশ্বাস দেন।
এমআরএম/জিকেএস