ইসলামের দৃষ্টিতে আইন পেশার গুরুত্ব ও অপরিহার্যতা

ইসলাম ডেস্ক
ইসলাম ডেস্ক ইসলাম ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৯:২০ পিএম, ০৪ আগস্ট ২০২২

অ্যাডভোকেট জিয়া হাবীব আহ্সান

ইসলাম একটি বিজ্ঞানময়, শাশ্বত, পূর্ণাঙ্গ জীবন বিধান। মানব জীবনের এমন কোনো দিক নেই যা ইসলামে আলোচিত হয়নি। সংক্ষেপে এখানে ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে পেশা হিসেবে, আইনপেশা সম্পর্কে কী বলা আছে ও সমাজে এর গুরুত্ব কী তা তুলে ধরবো।

সবার প্রতি ন্যায়বিচার প্রদানই হচ্ছে আদালতের প্রথম ও প্রধান উদ্দেশ্য। আর মামলা-মোকদ্দমায় ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় আইনবিদগণ বিচারককে সাহায্য করে থাকেন। সত্য প্রতিষ্ঠায় আদালতকে সাহায্য করা, ইনসাফ প্রতিষ্ঠায় বিরাট অবদান রাখার সমতুল্য। আদালতকে ভুল ব্যাখ্যা দেওয়া, মক্কেলের স্বার্থে অসত্যের আশ্রয় গ্রহণ করা, মক্কেলকে অন্যায় করতে পরামর্শ দেওয়া কখনও একজন ভালো অ্যাডভোকেটের বৈশিষ্ট্য হতে পারে না।

জামেয়া আহমদীয়া সুন্নিয়া আলীয়া মাদ্রাসার সাবেক অধ্যক্ষ মরহুম হজরত আল্লামা জালালুদ্দীন আল কাদেরী (রহ.) বলেন, ‘ইমামে আজম হজরত আবু হানিফা (রহ.) নিজেই একজন আইনবিদ ও ফিকাহ্ শাস্ত্রের পণ্ডিত ছিলেন। তাঁর রচিত ফিকাহ্ শাস্ত্রসমূহ ইসলামী আইনের জগতে উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হয়ে আছে।’ ইসলামী দুনিয়ার সর্বজন শ্রদ্ধেয় ইলমে ফিকহের পণ্ডিত ইমামে আজম হজরত আবু হানিফা (রহ.) এর মাজহাবের ফেকাহের কিতাব সমূহে ওকালতি সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা রয়েছে। এ কিতাবসমূহের মধ্যে হেদায়া, শরহে বেকায়া, কানজুদ দকায়েক, কুদুরী, মালাবুদ্দা মিনহুম প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য।

ওকালতকে অস্বীকার করা মানে হলো হানাফী মাজহাবের কিতাব সমূহ থেকে ‘বাব-উল-ওকালত’কে রদ করে দেওয়া। বিশ্বজোড়া সর্বজনগ্রাহ্য ফতোয়ার কিতাব ‘ফতোয়ায়ে আলমগিরী’, ‘ফতহুল কাদির’, ‘ফতোয়ায়ে শামী’সহ বিখ্যাত ফতোয়ার কিতাবসমূহে ‘ওকালত’ ও এর বিষয়বস্তু সম্পর্কে বিস্তারিত বলা রয়েছে। তাছাড়া কুতুবে দাওয়ান, মুজাদ্দিদে জামান, হাকীমুল উম্মাত হজরত মাওলানা আশরাফ আলী থানভী (রহ.)-এর ‘বেহেশতী জেওর’-এ উকিল ও ওকালতি সম্পর্কে মন্তব্য করা হয়েছে।

প্রিন্সিপ্যাল মাওলানা শামছুল হক ফরিদপুরী (রহ.) এর অনুবাদকৃত উক্ত কিতাবের পঞ্চম খন্ডের ১৩৩ পৃষ্ঠায় কাউকে উকিল বানানোর বিবরণ শিরোনামে প্রদত্ত মাসয়ালায় উল্লেখ করা হয়েছে, মানুষ যে কাজ নিজে করার অধিকারী সে কাজ অন্যের দ্বারা করানোরও সে অধিকারী। একেই শরিয়তের ভাষায় ‘উকিল’ বানানো বলে। এখানে উকিলকে আমানতদার ও আমানতের খেয়ানত করাকে শক্ত হারাম বলা হয়েছে।

উকিলকে মেহনতয়ানা যা কিছু দেওয়া হবে, সেটার মালিক সে হবে। উকিলের কাজ করে মেহনতয়ানা চুকিয়ে নেওয়া শরিয়তে জায়েজ আছে। মাওলানা আশরাফ আলী থানভী (রহ.)-এর ওকালতি প্রসঙ্গে প্রদত্ত আলোচনায় অনুবাদক উক্ত কিতাবের একই খন্ডের ১৩৫ পৃষ্ঠায় লিখেছেন, মনে করুন-

আপনি একজনকে উকিল বানালেন আপনার এক মোকদ্দমা চালাবার জন্যে। এক্ষেত্রে আপনিও এ কথা বলতে পারবেন না যে, আমাকে মোকদ্দমায় জিতাতে হবে এবং উকিলও একথা বলতে পারবেন না যে, আমি নিশ্চয়ই মোকদ্দমায় জিতিয়ে দেব। অবশ্য জিতাবার জন্য প্রত্যেকের চেষ্টা হবে এই কথা সুনিশ্চিত। হারবার জন্য তো আর কেউ মোকদ্দমা করে না। কিন্তু এইরূপ শর্ত করা বা শর্ত লাগানো অথবা মোকদ্দমা জিতানোর বা জিতানোর জন্য মিথ্যা সাক্ষী বানানো বা ঘুষের আশ্রয় গ্রহণ করা হারাম ও কবিরা গুনাহ। অবশ্য বুদ্ধির তীক্ষ্ণতার দ্বারা, মস্তিষ্কের প্রখরতার দ্বারা ও বিদ্যার গভীরতার দ্বারা সত্যের সীমা লঙ্ঘন না করে অনেক সময় এমন অনেক সূক্ষ্ণ পয়েন্ট বের করা যায়, যা দ্বারা উকিলের কৃতিত্ব প্রমাণিত হয়, মিথ্যা সাক্ষীও লাগে না।

মূলকথা এই যে, সত্যের সীমা, ন্যায়ের সীমা, ধর্মের সীমা লঙ্ঘন না করে, ওকালতি ব্যবসার দ্বারা পয়সা উপার্জন করা জায়েজ আছে। বিনা পয়সায় নিঃসহায়ের সহায়তা করলেও তাতে সওয়াব আছে।

প্রকৃত পক্ষে প্রত্যেক পেশাকে হালাল-হারামভাবে পরিচালনা করা স্ব-স্ব পেশাজীবিদের উপর নির্ভর করে। ব্যাংকার, ডাক্তার, প্রকৌশলী, সাংবাদিক, শিক্ষক, ব্যবসায়ী সব পেশায় সততা ও ন্যায় নিষ্ঠা বজায় রাখলে তা হালাল অন্যথায় তা হারাম।

প্রখ্যাত আলেমে দ্বীন মাওলানা মহিউদ্দিন খান সম্পাদিত বহুল প্রচারিত মাসিক মদিনায় জামালপুর জজ আদালতের জনৈক অ্যাডভোকেট আবদুর রশিদ প্রশ্ন করেছিলেন, ‘আইন ব্যবসা করা কুরআন ও হাদিসের দৃষ্টিতে হালাল ব্যবসা কিনা এবং এই ব্যবসার মাধ্যমে অর্জিত আয় হালাল কিনা?

মাওলানা মুহিউদ্দিন খান সংক্ষেপে উত্তর দিয়েছিলেন, ‘আইনব্যবসা নিঃসন্দেহে বৈধ পেশা এবং এর দ্বারা উপার্জিত আয় হালাল।’ (মাসিক মদীনা, এপ্রিল’ ৯৭ সংখ্যা)

মুসলিম আইনবেত্তাগণ মামলা-মোকদ্দমায় উকিল নিয়োগের বিষয়টি নিয়ে বহু গবেষণা করেছেন। প্রায় সব মুসলিম আইনবেত্তাগণই বিচার ব্যবসাকে সহজ করে ন্যায়বিচার প্রদানের পথকে সুগম করার লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি/পক্ষের উপস্থিত-অনুপস্থিত সব অবস্থায় মামলা-মোকদ্দমায় উকিল নিয়োগ করার বিষয়টি বৈধ বলে মতামত ব্যক্ত করেছেন। মদিনা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রকাশিত সহিহ আল বুখারি-এর ২য় খন্ডের ৩৯০ পৃষ্ঠায় কিতাবুল ওকালত প্রসঙ্গে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে।

প্রকৃত অর্থে আইন পেশা একটি মহৎ পেশা। হাদিসের আলোকে আলোচনায় সেখানে উল্লেখ আছে যে, উপস্থিত ও অনুপস্থিতদের জন্যে উকিল নিয়োগ করা জায়েয। কোনো উকিলকে বা ক্ষমতাপ্রাপ্ত প্রতিনিধিকে কিংবা কোনো কওমের সুপারিশকারীকে কোনো বস্তু হেবা (দান) করা জায়েয।

কিতাবুল ওকালতের উক্ত অনুচ্ছেদে আরও বলা হয়েছে যে, যদি কেউ কোনো উকিল (ক্ষমতাপ্রাপ্ত প্রতিনিধি) নিয়োগ করে আর ওই উকিল কোনো কিছু ছেড়ে দেয় এরপর মুয়াক্কিল (উকিল নিয়োগকারী) তা অনুমোদন করে, তবে তা জায়েয।

‘উকিল’ এবং মুয়াক্কিল আদালতের দুটি প্রচলিত পরিভাষা ও ইসলামী শব্দ বা পরিভাষা। আদালতে আইনবিদ আইনগত তথ্য উদঘাটনে, সাক্ষ্যের চুলচেরা বিশ্লেষণ ও ব্যাখ্যা প্রদান করে মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছেন।

কারণ, বিচারের নীতি হলো-প্রয়োজনে প্রতি ১০ জন অপরাধীর ৯ জনই ছাড়া পেয়ে যাবে তবুও যেন ১ জন নিরপরাধ ব্যক্তির ভুলবশত হলেও সাজা হয়ে না যায়। কেননা প্রকৃত অপরাধীকে শাস্তি দিতে গিয়ে যদি কোনো নিরপরাধ ব্যক্তিকে শাস্তি কিংবা কারাভোগ করতে হয়; তার চেয়ে বড় কোনো অপরাধ হতে পারে না। এতে করে মানবাধিকার হয় ভ‚লুণ্ঠিত এবং সমাজে প্রতিশোধের জিঘাংসা ও অপরাধপ্রবণতা বৃদ্ধি পায়। এক্ষেত্রে বিচারকের দৃষ্টিতে যে সব সূক্ষ্ণ ও ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র তথ্য ও তত্ত্ব ধরা পড়ে না আইনজিবীগণ নিজ নিজ পক্ষে জোরালো যুক্তি উপস্থাপন করার মাধ্যমে বিচারকগণকে সত্য উদঘাটনে প্রচুরতম সহযোগিতা প্রদান করে মানবাধিকার সংরক্ষণে ভূমিকা রাখছেন।

ফলে বিচারকগণ নিখুঁত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারেন। আপাতদৃষ্টিতে মনে হয়, আইনবিদগণ নিরপরাধীকে যেমন সাহায্য করেন তেমনি অপরাধীকেও সাহায্য করেন, এ ধারণা সঠিক নয়।

অপরাধীর পক্ষ সমর্থন করার মানে অপরাধীকে সমর্থন করা নয় বরং অপরাধীর বিরুদ্ধে অপরাধ করার প্রমাণ সন্দেহাতীতরূপে উপস্থিত করা হয়েছে কিনা তা নির্ধারণে আইনবিদগণ বিচারককে সাহায্য করেন।

ফৌজদারী আইনে একটা ম্যাক্সিম আছে, ‘দ্য প্রসিকিউসন মাস্ট প্রুভ ইটস কেইজ বাউন্ড অল রেস্পোন্সিবল ডাউট’। একটি হাদিসে এ ব্যাপারে প্রমাণ পাওয়া যায়। হজরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা বর্ণনা করেছেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, মুসলমানের উপর শরিয়তের বিধান কার্যকরী করা হতে যতদূর সম্ভব দূরে থাক। অভিযুক্তের নিষ্কৃতি দেওয়ার সামান্যমাত্র সুযোগ থাকলেও তার মুক্তির পথ উন্মুক্ত করে দাও। কেননা, রাষ্ট্রপ্রধানের পক্ষে ভুল করে কাউকে মুক্তিদান করা, ভুল করে কাউকে শাস্তি দান করা অপেক্ষা উত্তম ও কল্যাণকর। (তিরমিজি)

একজন ভালো আইনবিদের জেরা করাকে ওপেন হার্ট সার্জারীর সঙ্গেও তুলনা করা যায়। কেননা এর ফলে আদালতের সামনে সত্য ও লুকায়িত তথ্য বেরিয়ে আসে। অর্থ আয়ের জন্য সব পথই বৈধ-এ কথা একজন পরকালে বিশ্বাসী আইনবিদের পক্ষে মেনে নেওয়া সম্ভব নয়। মামলাবাজ, ধুরন্ধর শয়তান ব্যক্তির অসৎ উদ্দেশ্য সাধনের জন্যে ধর্মপ্রাণ আইনবিদ কখনো আল্লাহ প্রদত্ত তাঁর মেধাশক্তিকে কাজে লাগান না তথা তাদের প্রশ্রয় দিতে পারেন না। যদি কেউ দিয়ে থাকেন সে ব্যাপারে তাকে আল্লাহর দরবারে জবাবদিহির জন্যে প্রস্তুত থাকতে হবে। এ জন্য সমগ্র আইনবিদ ও আইন পেশাকে হারাম বলা যেতে পারে না।

আইনবিদ বিতর্ক সৃষ্টি করেন না। আইনের মাধ্যমে তর্ক মিটাতে ভূমিকা রাখেন মাত্র। একজন আদর্শ আইনবিদ বিচারককে আইন বা ঘটনা সম্পর্কে কোনো চাতুরী বা মিথ্যা উক্তি দ্বারা ভুল বুঝাতে পারেন না। জেনে-শুনে আইনের ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে আদালতকে ভ্রমে পতিত করে মক্কেলের উপকার করার চেষ্টা তিনি কখনো করতে পারেন না। একজন কৌশুলী ইনসাফ প্রতিষ্ঠায় নিজের শ্রম ও মেধাকে কাজে লাগান মাত্র।

প্রতিটি মানুষের কথা বলা ও মতামত বা যুক্তিতর্ক ব্যক্ত করার আলাদা পদ্ধতি রয়েছে। কারো যুক্তিতর্ক খুবই তীক্ষ্ণ ও কৌশলপূর্ণ, আবার কারো খুবই সহজ-সরল। প্রতিটি মানুষ তার অধিকার সম্পর্কে সচেতন। কেউ তীক্ষ্ণ জোরালো কৌশলপূর্ণ যুক্তি-তর্কের মাধ্যমে অধিকার সম্পর্কে সচেতন।

অন্যদিকে কেউ এ গুণের অভাবে তার ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত থাকে। বিচারকের সামনে নিজের যুক্তিতর্ক ব্যক্ত করে নিজের অধিকার আদায় ও ন্যায়বিচার পাওয়া সাধারণ মানুষের পক্ষে কষ্টসাধ্য। কেননা একজন সাধারণ লোক সত্যটিকে সহজভাবে উপস্থাপন করার মতো জ্ঞানী নাও হতে পারে।

বিচারক প্রতিটি পক্ষের যুক্তিতর্ক ও ঘটনার বর্ণনা শুনে প্রমাণ দেখে ন্যায়ানুগ বিচার বিশ্লেষণ করে রায় দিয়ে থাকেন। মামলা- মোকদ্দমায় ঘটনার উপর জোরালো যুক্তিতর্কের উপর নির্ভর করছে ন্যায়বিচার। আর এই ধারণাটি আজকের নয়, পুরনোকাল থেকেই মানুষের মাঝে বিরাজ করছে। এ ব্যাপারে আমাদের সবার পথপ্রদর্শক রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু  আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, আমি তো একজন মানুষ। আমার কাছে বিবাদকারীরা আসে। তোমাদের মধ্যে কেউ কেউ অন্যের চেয়ে অধিক বাকপটু। তখন আমি মনে করি যে, সে সত্য বলেছে। তাই আমি তার পক্ষে রায় দেই। বিচারে যদি ভুলবশত অন্য কোনো মুসলমানের অধিকার (হক) তাকে দিয়ে থাকি, তবে তা দোজখের আগুনের টুকরা। এখন সে তা গ্রহণ করুক বা ত্যাগ করুক।’ (বুখারি)

অন্যদিকে আইনের ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, মুসলিম শাসন আমলেও আইনপেশার প্রচলন ছিল। বিশেষ করে মুঘল শাসন আমলে আইন পেশাজীবীদের প্রচলন পরিলক্ষিত হয়। তখনকার আইনপেশা বর্তমান পেশার মতো এতো উন্নত না হলেও দেখা যায় মুফতিগণ বিচারকার্যে বিচারকদের সাহায্য করতেন। তাদেরকে আধুনিক যুগের অ্যাটর্নি জেনারেলের সঙ্গে তুলনা করা যায়। এর আরও পরে দেখা যায় মামলার পক্ষসমূহ পেশাদার আইনজ্ঞ দ্বারা মামলা পরিচালনা করতেন এবং তাদের উকিল বলা হতো।

বলা যায়, মুসলিম শাসকদের সময়েই পেশাদার আইনবিদের বিকাশ ঘটে। তবে আজকের আইনবিদ সমিতির মতো সে সময় তেমন কোনো বার এসোসিয়েশন ছিল না। ফিকহে ফিরোজশাহী এবং ফতওয়ায়ে আলমগীরিতে উকিলের দায়িত্ব ও কর্তব্য সম্পর্কে স্পষ্ট বিবরণ রয়েছে।

সম্রাট শাহজাহানের আমলে সর্বপ্রথম সরকারি উকিল নিয়োগ করা হয় এবং আইন ব্যবসাকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়া হয়েছে বলে ধরে নেওয়া যায়।

সম্রাট আওরঙ্গজেবের সময় প্রতিটি জেলায় সরকারি উকিল নিয়োগ করা হয়। তাদের বলা হতো উকিল-ই শরয়ি। তাদের প্রধান কাজী নিয়োগ দিতেন এবং কখনো প্রধান বিচারপতি নিয়োগ দিতেন। সে সময় লিগ্যাল এইডেরও প্রচলন দেখা যায়। যেমন- গরীব ও অসহায় মামলাকারীদের আইনগত সহায়তার জন্য আইনবিদ(উকিল) নিয়োগ করা হতো। এতে বুঝা যায়, আইন পেশা ইসলামের অন্তরায় নয় বরং সত্যিকার আইনপেশা ইসলামের ইতিহাসের একটি স্বীকৃত পেশা।

লেখক : আইনবিদ, গবেষক, কলামিস্ট, সুশাসন ও মানবাধিকারকর্মী।

এমএমএস/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।