বছরজুড়ে নন্দিত সাকিব, নিন্দিত সাকিব

ইমাম হোসাইন সোহেল
ইমাম হোসাইন সোহেল ইমাম হোসাইন সোহেল
প্রকাশিত: ০৪:৩৯ পিএম, ২৯ ডিসেম্বর ২০১৯

শুধু বাংলাদেশ ক্রিকেটেই নয়, বিশ্ব ক্রিকেটের একজন কিংবদন্তি ক্রিকেটার হওয়ার সব রসদ কিংবা উপাদানই তার অর্জনের ঝুলিতে চলে এসেছে। দীর্ঘসময় ধরে বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার। সে সুবাধে নিজের নামের প্রতি সুবিচার করে সর্বশেষ বিশ্বকাপে তিনি যে পারফরম্যান্স দেখিয়েছেন, তাতে তাকে কিংবদন্তির কাতারেই নয় শুধু, ক্ষণজন্মাদের কাতারে রাখতেও অনেকে দ্বিধা করবেন না।

ইংল্যান্ডের মাটিতে অনুষ্ঠিত হওয়া সর্বশেষ বিশ্বকাপে ৬০০ প্লাস রান এবং ১০ প্লাস উইকেট তুলে নেয়া সাকিব ইতিহাসের পাতায় একমাত্র ক্রিকেটার হয়ে গেলেন, যেখানে নাম লেখাতে পারেননি ক্রিকেট ইতিহাসে এর আগে জন্ম নেয়া অনেক রথি-মহারথি। কিংবদন্তি অলরাউন্ডার ইমরান খান, ইয়ান বোথামদের বিরল কৃতিত্ব ভেঙে খান খান করে দিয়েছেন সাকিব।

শুধু এই বিশ্বকাপেই নয়, বিশ্বকাপের ইতিহাসেরই একজন সেরা ক্রিকেটার হওয়ার পথে অনেকখানি এগিয়ে গেলেন তিনি। যে কারণে দেখা যাচ্ছে ক্রিকেটের বাইবেলখ্যাত ইংল্যান্ডের বিশ্বখ্যাত ম্যাগাজিন ক্রিকেটার্স অ্যালামানাকের দশকের বর্ষসেরা একাদশে একমাত্র স্পিনার এবং অলরাউন্ডার হিসেবে রাখা হয়েছে সাকিব আল হাসানের নাম।

ইংল্যান্ড বিশ্বকাপের সেরা খেলোয়াড় নির্বাচন করতে গিয়ে অ্যাডজুকেটরদের দারুণভাবে দ্বন্দ্বে ফেলে দিয়েছিলেন সাকিব। যার ঝুলিতে ৬০০ প্লাস রান এবং ১০ প্লাস বেশি উইকেট, তাকে সেরা হিসেবে স্বীকৃতি না দিয়ে কি কোনো উপায় আছে?

কিন্তু সাকিব যে দলের প্রতিনিধিত্ব করেন, সেই বাংলাদেশ ক্রিকেট দল বিশ্বকাপের ১০ দলের মধ্যে আট নম্বর। এমন একটি দলের বড় তারকা তিনি! কিন্তু যত পারফরম্যান্সই তিনি করুন না কেন, সাকিব তো আর নিজের দলকে সেমিফাইনালেও তুলতে পারেননি।

এ কারণেই মূলত বিচারকরা সাকিবকে নয়, সেরা হিসেবে বেছে নিয়েছিলেন দলকে ফাইনাল পর্যন্ত টেনে নিয়ে যাওয়া নিউজিল্যান্ডের অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসনকে।

‍Shakib-WC

বিশ্বকাপে হয়তো সেরার স্বীকৃতি পাননি সাকিব; কিন্তু ভক্ত-সমর্থকদের বিচারে তো সেরার স্বীকৃতি মিলেছে তার। বিশ্বকাপের সেরা একাদশে নাম লেখানো ছাড়াও তার নামের পাশে যুক্ত হয়েছে অনেক কৃতিত্ব এবং অর্জন। এক কথায় ইংল্যান্ড বিশ্বকাপকে যেন একারই করে নিয়েছিলেন তিনি।

এমন সাকিব আল হাসানের ২০১৯ সালের পুরোটাই হতে পারতো ফুলে ফুলে সুশোভিত। তার কৃতিত্ব এবং গৌরবোজ্জ্বল অর্জন হয়ে থাকতে পারতো ২০১৯ সালে কুসুমাস্তীর্ণ একটি বছর হিসেবে। কিন্তু তা আর হতে পারলো কই? বছরের শেষটা হলো যে সাকিবের জন্য চরম এক হতাশাজনক অভিজ্ঞতা দিয়ে!

বিশ্বকাপের অসামান্য অর্জনে নন্দিত হয়েছিলেন সাকিব আল হাসান। বছর শেষে সেই সাকিবই হলেন নিন্দিত। আজ রাজা, কাল ফকির- মুদ্রার এ দুই পিঠই এক বছরে, তথা ২০১৯ সালে দেখেছেন বিশ্বসেরা এই অলরাউন্ডার। সুখের অপর পিঠে দুঃখ কিংবা সাফল্যের অন্য পাশে যে ব্যর্থতা লেখা থাকে, এটা সম্ভবত হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছেন সাকিব।

সময় কত দ্রুতই না পাল্টে যায়! সময়ের ব্যবধানে কত কিছুই তো বদলে যায়। আজ আপনি হয়তো সাফল্যের এভারেস্টে আরোহন করেছেন; কিন্তু কাল সেই এভারেস্ট থেকে যে ভূপাতিত হবেন না, সেই নিশ্চয়তা কেউ দেবে না আপনাকে। সাকিবের অবস্থাটাই হয়েছে তেমন। যে কারণে এই লেখার শিরোনামটাই দিতে হয়েছে ‘নন্দিত সাকিব, নিন্দিত সাকিব।’

২০১৯ সালের পুরোটাই কেটেছে সাকিব আল হাসানের অম্ল-মধুর। ২০১৮ সালের পুরোটাই তাকে ভুগিয়েছে আঙুলের ইনজুরি। ঘরের মাঠে জিম্বাবুয়ে-শ্রীলঙ্কাকে নিয়ে অনুষ্ঠিত ত্রিদেশীয় সিরিজে আঙুলে চোট পেয়েছিলেন তিনি, যা পুরো বছর সাকিবকে ভুগিয়েছে। সেই ইনজুরির রেশ ছিল ২০১৯ সালের শুরুতেও।

বছরের শুরুতে ঢাকা ডায়নামাইটসের হয়ে বিপিএলটা খেলেছেন ভালোভাবে। দলকে তুলেছিলেন ফাইনালে। কিন্তু সাকিব আল হাসান ফাইনালে ভালো পারফর্ম করতে পারেননি। দলকে এনে দিতে পারেননি শিরোপা। তামিম ইকবালের কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের কাছে হেরে গেলেন। ওই ম্যাচেই নতুন করে আবারও আঙুলের ইনজুরিতে পড়লেন সাকিব।

‍Shakib-WC

ওই ইনজুরির কারণে নিউজিল্যান্ডে অনুষ্ঠিত সিরিজে অংশ নিতে পারেননি বিশ্বসেরা এই অলরাউন্ডার। যদিও আইপিএল খেলার জন্য নিজেকে ফিট করে তোলেন তিনি। বছরের শুরুতে তাই সাকিবের আঙুলের ইনজুরি নিয়ে অনেক বিতর্ক তৈরি হয়। সাকিব নিজেই সে সব বিতর্কের জন্ম দিয়েছিলেন। যে কারণে বিসিবি সভাপতি পাপন পর্যন্ত বলতে বাধ্য হয়েছিলেন, ‘সাকিবকে শুধু আইপিএল খেলতে অনুমতি দিতে পারি না!’

শেষ পর্যন্ত সাকিব আইপিএলে খেললেন। কিন্তু সানরাইজার্স হায়দরাবাদের হয়ে এই বছরটাতে খুব একটা সুযোগ মেলেনি তার। এ সুযোগ না পাওয়াটাই সাকিবের জন্য শাপে বর হয়ে দেখা দিয়েছিল। কারণ, এই সময় নিজেকে সামনের বিশ্বকাপের জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত করেন। ঢাকা থেকে নিজের শিক্ষক সালাউদ্দিনকে উড়িয়ে নিয়ে গিয়েছিলেন হায়দরাবাদে। তার অধীনে করেন বিশেষ অনুশীলন।

আইপিএল খেলে দেশে ফেরার পরও তিনি যেন বিতর্ককে পেছন থেকে তাড়াননি। বিশ্বকাপ এবং আয়ারল্যান্ডে ত্রিদেশীয় সিরিজের জন্য যে অফিশিয়াল ফটোশ্যুট করা হয়েছিল, মাঠে এসেও সেই ফটোশ্যুটে অংশ না নিয়ে চলে যান তিনি। কারণ, একটি বিজ্ঞাপনচিত্রে অংশ নেয়া, যা নিয়ে তুমুল বিতর্ক তৈরি হয়েছিল তখন। সাকিবের দেশপ্রেম নিয়েও কথা উঠে গিয়েছিল ওই সময়।

তবুও অপরিহার্য সদস্য সাকিবকে ছাড়া তো দল গঠনই অসম্ভব। এ কারণে সাকিবকে নিয়েই আয়ারল্যান্ড গেল বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। কিন্তু ওয়েস্ট ইন্ডিজ আর আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে অনুষ্ঠিত ত্রিদেশীয় সিরিজের তিন ম্যাচ খেলার পরই সাইড স্ট্রেইনে ভুগতে শুরু করেন। যে কারণে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ফাইনালে পর্যন্ত খেলতে পারেননি। তবুও, শিরোপা জিতেছিল বাংলাদেশ। তিন দেশ কিংবা তদুর্ধ্ব যে কোনো টুর্নামেন্টের প্রথম শিরোপা এটা বাংলাদেশের।

এলো কাংখিত বিশ্বকাপ। লন্ডনের দ্য ওভালে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে বিশ্বকাপ অভিযান শুরু বাংলাদেশের। সাকিব আল হাসানেরও। প্রথম ম্যাচেই তিনি খেললেন ৭৫ রানের অনবদ্য ইনিংস। মোহাম্মদ মিঠুনের ৭৮ রানের ওপর ভর করে বাংলাদেশ করেছিল ৩৩০ রান। জবাবে প্রোটিয়ারা থেমে গেলো ৩০৯ রানে। ২১ রানের জয় দিয়ে শুরু হলো বাংলাদেশের বিশ্বকাপ মিশন। ১ উইকেট নিলেন সাকিব। ম্যাচ সেরাও হলেন।

পরের ম্যাচ সেই ওভালেই নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে। এবার সাকিব খেললেন ৬৪ রানের ইনিংস। উইকেট নিলেন ২টি। কিন্তু বাংলাদেশ বাজে ফিল্ডিংয়ের খেসারত দিয়ে হেরে গেলো ২ উইকেটে।

shakib_injuri

পরের ম্যাচ কার্ডিফে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে। এই ম্যাচে সাকিব কোনো উইকেট পেলেন না। ইংলিশ ব্যাটসম্যানরা তুললো ৩৮৬ রান। জবাবে বাংলাদেশ করেছে ২৮০ রান। সাকিব আল হাসান একাই করেছেন ১২১ রান। অসাধারণ একটি সেঞ্চুরি সত্ত্বেও বাংলাদেশকে জেতাতে পারলেন না সাকিব।

পরের ম্যাচ ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে। এবারও জ্বলে উঠলো সাকিব আল হাসানের ব্যাট। এবারও করলেন সেঞ্চুরি। অপরাজিত থাকলেন ১২৪ রানে। ওই ম্যাচে নিয়েছেন ২ উইকেট। ওয়েস্ট ইন্ডিজের ৩২১ রানের বিশাল স্কোরও সাকিবের অপরাজিত ১২৪ রানের ওপর ভর করে টপকে যায় বাংলাদেশ। এবারও ম্যাচ সেরা তিনি।

অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে করেছিলেন ৪১ রান। পুরো বিশ্বকাপে ওটাই ছিল সাকিবের সর্বনিম্ন স্কোর। উইকেটও পাননি। তবে সেঞ্চুরি করেছিলেন মুশফিক। অসিদের ৩৮১ রানের জবাবে বাংলাদেশ করেছিল ৩৩৩ রান। ওয়ার্নারের ক্যাচ মিস না হলে ওই ম্যাচটা জিততেও পারতো বাংলাদেশ। কারণ, ১০ রানে জীবন পেয়ে ১৬৬ রান করেছিলেন ওয়ার্নার।

আফগানিস্তানের বিপক্ষে সাকিবের ব্যাট থেকে আসে ৫১ রান। উইকেট নিয়েছিলেন ৫টি। ক্রিকেট বিশ্বকাপের ইতিহাসে এক ম্যাচে ৫০ প্লাস রান এবং ৫ উইকেট নেয়ার কৃতিত্ব ছিল কেবল যুবরাজ সিংয়ের। সেই কৃতিত্বে ভাগ বসিয়ে দিয়েছিলেন সাকিব। বাংলাদেশ জিতেছিল ৬২ রানে। ম্যাচ সেরাও হয়েছিলেন সাকিব।

এরপর যদিও আর কোনো ম্যাচ জেতেনি বাংলাদেশ। তবে ভারতের বিপক্ষে ৬৬ এবং পাকিস্তানের বিপক্ষে ৬৪ রান করেছিলেন বাংলাদেশের এই বিশ্বসেরা ক্রিকেটার। এর মধ্যে ভারতের বিপক্ষে নিয়েছিলেন ১টি উইকেট।

বিশ্বকাপে ৬০৬ রান করেছিলেন সাকিব। বল হাতে ৮ ম্যাচে নিয়েছিলেন ১১ উইকেট। বিশ্বকাপের ইতিহাসে একমাত্র ক্রিকেটার হিসেবে ছয়শ প্লাস রান এবং ১০ প্লাস উইকেট নেয়া ক্রিকেটার হলেন সাকিব আল হাসান। এমন পারফরম্যান্সের পরও সাকিব আল হাসানের বিশ্বকাপের সেরার স্বীকৃতি না পাওয়াটা দুঃখজনক। এটা হয়নি, তার একমাত্র কারণ দল হিসেবে বাংলাদেশ বিশ্বকাপে ভালো করতে পারেনি।

shakib_bcb

বিশ্বকাপের পর শ্রীলঙ্কা সিরিজ। সাকিব ছুটি নিয়েছিলেন, মাশরাফি যেতে পারেননি। তামিমের নেতৃত্বে তাই শ্রীলঙ্কায় দল পাঠায় বাংলাদেশ। কিন্তু সেখানে চরম বাজে ফল করেই দেশে ফিরে আসে টাইগাররা। শ্রীলঙ্কা সিরিজের পর গত সেপ্টেম্বরে ঘরের মাঠে ছিল আফগানদের বিপক্ষে একমাত্র টেস্টের সিরিজ। সাকিবও ফিরে আসেন টেস্ট নেতৃত্বে। কিন্তু তার নেতৃত্বে এই টেস্টে চরম ভরাডুবি ঘটে বাংলাদেশের। চারদিকে বয়ে সমালোচার ঝড়।

যদিও পরবর্তী টি-টোয়েন্টি সিরিজে সাকিবের নেতৃত্বে ফাইনাল খেলে বাংলাদেশ। কিন্তু বৃষ্টির কারণে সেই ফাইনালে আর মাঠে নামা হয়নি টাইগারদের। আফগানদের সঙ্গে শিরোপা ভাগাভাগি করে নিতে হয়েছে। ত্রিদেশীয় সিরিজের ফাইনালের দিন রাতেই সিপিএল খেলতে চলে যান বাংলাদেশের টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক।

এরই মধ্যে বিতর্ক দানা বাধতে শুরু করে সাকিবকে নিয়ে। নন্দিত সাকিবের নিন্দিত হওয়ার পদযাত্রা শুরুও হলো যেন। হঠাৎ বিপিএলে রংপুর রাইডার্সের সঙ্গে সাড়ে ৩ কোটি টাকার বিনিময়ে চুক্তি করলেন সাকিব। ছেড়ে দিলেন ঢাকা ডাইনামাইটস। বিপিএলের পরবর্তী যত পট-পরিবর্তন, তার সূচনা কিন্তু সাকিবের এই চুক্তিকে ঘিরেই আবর্তিত হয়েছে বলে মনে করেন অনেকে।

যাই হোক, সিপিএল খেলে আসার পর সবই ঠিকঠাক চলছিল। হঠাৎ, ২১ অক্টোবর ধর্মঘট ডেকে বসলো বাংলাদেশের প্রায় সব ক্রিকেটার। নেতৃত্বে ছিলেন সাকিব আল হাসান। মোট ১১ দফা, পরবর্তীতে ১৩ দফায় পরিণত- দাবিতে ধর্মঘটের ডাক দেয় তারা। ক্রিকেটাররা দাবি না মানা পর্যন্ত আর মাঠে ফিরবে না বলেই সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেয়।

তিন দিনের ধর্মঘটের অবসান ঘটে বিসিবির দাবি মেনে নেয়ার মধ্য দিয়ে। ক্রিকেটারদের সঙ্গে সমঝোতা বৈঠকও হয় বিসিবির। যেখানে নেতৃত্বে ছিলেন সাকিব আল হাসান। এরই মধ্যে, বিসিবির অনুমতি না নিয়েই বেসরকারী ফোন সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান গ্রামীনফোনের সঙ্গে বিজ্ঞাপন চুক্তি করেন সাকিব। এ বিষয়টাই চরমভাবে ক্ষুব্ধ করে তোলে বিসিবিকে। বাংলাদেশ ক্রিকেটের অভিভাবক প্রতিষ্ঠানটি তো, সাকিবকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়ার কথাও ভাবছিল।

‍Shakib-ban

কিন্তু হঠাৎ ২৮ অক্টোবর রাত থেকেই চাউর হয়ে যায়, ১৮ মাসের জন্য নিষিদ্ধ হচ্ছেন সাকিব। অপরাধ? জুয়াড়িদের ফিক্সিং প্রস্তাবের তথ্য তিনি গোপন করেছিলেন বিসিবি এবং আইসিসির আকসুর কাছে। জুয়াড়িদের তার সঙ্গে যোগাযোগ করার তথ্য তিনি জানাননি বিসিবি কিংবা আকসুকে।

সুতরাং নিশ্চিতভাবেই ৫ বছর পর্যন্ত নিষিদ্ধ হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয় সাকিবের। ২৯ অক্টোবর সারাদিন নানা জ্বল্পনা-কল্পনা শেষে সন্ধ্যার দিকে আইসিসি ঘোষণা দেয় ২ বছর নিষিদ্ধ সাকিব। তবে তদন্ত কাজে সহযোগিতা করা এবং পরবর্তী কার্যক্রম সন্তোষজনক হলে এক বছর নিষেধাজ্ঞার শাস্তি বাতিল।

সাকিব নিজে অপরাধ স্বীকার করে নেন এবং শাস্তিও মেনে নেন। আইসিসির কাছে আর আপিলও করেননি শাস্তি কমানোর বিপক্ষে। যার ফলশ্রুতিতে এমসিসির ক্রিকেট কমিটি থেকে পদত্যাগ করতে হয় সাকিবকে। আইসিসির র্যাংকিং থেকে মুছে ফেলা হয় সাকিবের নাম। ক্রিকেট সম্পর্কিত যে কোনো কর্মকাণ্ড থেকে এক বছরের জন্য নিষিদ্ধ করার কারণে, কোনো কিছুর সঙ্গেই জড়িত হতে পারছেন না আর বিশ্বসেরা এই অলরাউন্ডার।

বিশ্বকাপে অসাধারণ পারফরম্যান্স করে যিনি নন্দিত, বন্দিত হয়েছিলেন বিশ্বজুড়ে, বছরের শেষ প্রান্তে এসে ফিক্সিংয়ের মত গুরুতর অপরাধের (সেটা যেমনই হোক না কেন) সঙ্গে জড়িয়ে নিষিদ্ধ হলেন। যদিও সাকিব বলেছেন, আমার এ ঘটনা সবার জন্য শিক্ষা হয়ে থাকলো। ভবিষ্যতের ক্রিকেটাররা নিশ্চয় সাকিবের এই ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে নিজেদের পথ চলবেন!

আইএইচএস/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।