‘কলে আটকা ইঁদুরের কথা মনে করে নিজের জন্য নিজেরই খুব মায়া হয়’

জাগো নিউজ ডেস্ক
জাগো নিউজ ডেস্ক জাগো নিউজ ডেস্ক
প্রকাশিত: ১০:৫৬ এএম, ২১ আগস্ট ২০২২

মোস্তফা সরয়ার ফারুকী

‘তার আগে বলে নিই, আপনারা তো জানেন আমার একটা ছবি সেন্সর বোর্ডে আটকে আছে। সাড়ে তিন বছর। বাংলাদেশ রাষ্ট্রের সেন্সর বোর্ডে। যে রাষ্ট্রের বুকের ভেতর আমি হাসি, খেলি, বিজ্ঞাপন বানাই, সংসার করি, আমার কন্যার সাথে খেলা করি, ষোলোই ডিসেম্বর আসলে গাই ‘এমন দেশটি কোথাও খুঁজে পাবে নাকো তুমি’!

সে রাষ্ট্রের সেন্সর বোর্ড নামে একটা অফিস আছে সেগুনবাগিচায়। সেখানে আটকে আছে আমার ছবি, আটকে আছি আমি। সেগুন আমার প্রিয় গাছ। বাগিচা আরও প্রিয়। এই বাগিচায় আমি আটকে আছি সাড়ে তিন বছর। বাগিচায় শুয়ে শুয়ে আমার নিজেকে ইঁদুর মনে হয়। কলে আটকে যাওয়া নিরীহ ইঁদুরের কথা মনে করে নিজের জন্য নিজেরই খুব মায়া হয়।

অনেকে মায়া করে আমাকে বলেন, মুভ অন! একটা ছবিই তো আটকেছে। কী আর এমন বড় সমস্যা। এটা ভুলে গিয়ে পরের ছবিতে মন দিলেই তো হয়।

আমিও তাদের মতো চেয়েছি ভুলে গিয়ে পরের কাজে মন দিতে। ল্যাপটপ খুলে বসে থেকেছি আর দেখেছি কী করে ব্যাকস্পেস হয়ে ওঠে আমার চেয়েও বড় স্ক্রিপ্টরাইটার। আমার ল্যাপটপের উপরের দিকের কোনায় প্রায় অলক্ষ্যে থাকা বাটনটার দিকে আমি প্রায়ই নিরীহ ইঁদুরের মতো তাকিয়ে থাকি। আর হাসি, খেলি, বিজ্ঞাপন বানাই, গাই ‘সারে জাঁহা সে আচ্ছা’!

জাস্ট একটা ব্যাকস্পেস কী করে আপনার জীবনের দখল নিয়ে নিতে পারে সেটা আপনি বুঝতেও পারবেন না খুব খেয়াল না করলে। আপনি ভাববেন আপনি ঠিকই আছেন, ঠিকই ভাবছেন, ঠিকই লিখছেন! কিন্তু আদতে আপনার হয়ে ভাবছে, বলছে, লিখছে ব্যাকস্পেস।

ব্যাকস্পেস আমাকে বলে, তুমি কেন তার চেয়ে বরং বানাওনা কোনো কল্পজগতের গল্প? আমি অসহায়ের মতো বলি, আমি তো কেবল আমার চারপাশের গল্পই বলতে জানি মহাশয়!

সকাল-সন্ধ্যা-দুপুর অসহায়ের মতো নদীর পাড়ে বসে থেকে দেখি স্রোতেরা নেচে নেচে যায় সুদূরের পানে। আর আমি বুকের ভেতর জাপটে ধরে থাকি ব্যাকস্পেস। পিতল রংয়ের ঝনঝনে ব্যাকস্পেস।

(মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর ফেসবুক স্ট্যাটাস)।

বিএ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।