টিকিট কালোবাজারিরা এখন রিফান্ড ব্যবসা শুরু করেছে: মাহবুব কবীর

আসন্ন ঈদুল ফিতর ঘিরে ঈদযাত্রা শুরুর ১০ দিন আগে সব আন্তঃনগর ট্রেনের শতভাগ টিকিট অনলাইনে বিক্রির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ঈদ অগ্রিম ও ফিরতি যাত্রার টিকিট সূচি অনুযায়ী যাত্রার তারিখ ১৭ থেকে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত ঈদ অগ্রিম যাত্রা ও ফেরত যাত্রার সব টিকিট শুধু অনলাইনে বিক্রি করা হবে। টিকিট কালোবাজারি বন্ধ করতে এ পদক্ষেপ নিয়েছে রেলওয়ে। তবে অনলাইনে টিকিট কেটেও বেশি দামে বিক্রির অভিযোগ রয়েছে কালোবাজারিদের বিরুদ্ধে। এক্ষেত্রে তারা অভিনব পদ্ধতি হিসেবে ‘রিফান্ড’ করে ফের টিকিট নিয়ে তা বিক্রি করছেন।
এ বিষয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে এক পোস্ট করে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেছেন অবসরপ্রাপ্ত অতিরিক্ত সচিব মাহবুব কবীর মিলন।
জাগো নিউজের পাঠকদের জন্য তার স্ট্যাটাসটি হুবহু তুলে ধার হলো-
‘মজার বিষয় হচ্ছে কালোবাজারি সাহেবরা এখন রিফান্ড ব্যবসা শুরু করেছে। তারা আগেই টিকিট কেটে রাখে। এরপর যাত্রী জোগাড় করে কোনো এক ফাঁকে কাউন্টারে গিয়ে টিকিট রিফান্ড করেই সঙ্গে সঙ্গে যাত্রীর এনআইডি এবং নাম, মোবাইল নম্বর দিয়ে টিকিট করে দিচ্ছে। ট্রেনে যাত্রীকে চেকিং করলেও আর ধরার উপায় নেই।’
তিনি লেখেন, ‘এরকম খবর পাওয়ার পর খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, এক মোবাইল নম্বর দিয়ে অসংখ্যবার রিফান্ড করা হয়েছে এক সপ্তাহে। এগুলো প্রায় সবগুলোই কাউন্টারের রিফান্ড। অসংখ্য মোবাইল নম্বরে অসংখ্য রিফান্ড। যেন রিফান্ডের জোয়ার বয়ে যাচ্ছে।’
‘রিফান্ড করলে এখন সার্ভারে টিকিট ওপেন হয়ে যায়। কিন্তু আগে থেকেই টিকিট শেষ হয়ে যাওয়ায়, কেউ তো দিনের পর দিন বারবার চেক করবে না বা কাউন্টারে যাবে না। সেই সুযোগেই কাউন্টারে রিফান্ড করেই সঙ্গে সঙ্গেই এরা টিকিট করে নেয় কালোবাজারিরা। নতুন বুদ্ধি। মজার পদ্ধতি।’
অবসরপ্রাপ্ত এ অতিরিক্ত সচিব আরও লেখেন, ‘এক টিকিটে চার যাত্রীকে ঢুকিয়ে দিচ্ছে এরা বিভিন্নভাবে। একজনের নাম থাকছে, বাকি তিনজনের লাগে না। তাই প্রাথমিক পর্যায়ে অনলাইন টিকিটে চার বা সব যাত্রীর নাম এবং এনআইডি ও জন্মসনদ নম্বর দেওয়ার কাজ চলছে। কাউন্টার টিকিট ছোট, তাই সেটাকে লম্বা করে সবার নাম ও এনআইডি দেওয়া হবে বলে শুনলাম।’
তিনি লেখেন, ‘রিফান্ড ব্যবসা বন্ধে ভারতের মতো ওয়েটিং লিস্ট করার সিদ্ধান্তও নেওয়া হতে পারে। সময়ে অনেক কিছুই হবে ইনশাআল্লাহ। কালোবাজারি যে শতভাগ থাকবে না, এটা প্রায় নিশ্চিত। অনলাইন টিকিটে যাত্রীর ছবি এখনি সংযুক্ত করা সম্ভব।’
‘অনলাইন চার্জ ২০ টাকা আগে সিএনএসের সঙ্গে ছিল, এখন সহজের সঙ্গেও তাই চুক্তি করেছে রেল। এই চার্জের বড় একটা অংশ পায় টিকিটিং সার্ভার প্রোভাইডার, বাকি অংশ গেটওয়ে, ব্যাংক এবং রেল। এই ২০ টাকা আর কখনোই কমাতে পারবে না রেল। কারণ বহু বহু বছর আগেই একটা ভুল করেছিল রেল। ভুল বা বলা চলে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি তখন। কাজেই এখন আর করার কিছুই নেই কারোর।’
মাহবুব কবীর মিলন আরও লেখেন, ‘১ এপ্রিল ২০২৩ থেকে টিকিট কাটার মেয়াদ ৫ দিনের পরিবর্তে ১০ দিন স্থায়ীভাবে করা হয়েছে। অনলাইন ও কাউন্টার টিকিট শতভাগ ওপেন থাকবে। কোনো কোটা থাকবে না। শুধুমাত্র ১৭-৩০ এপ্রিল ঈদের জন্য টিকিট শতভাগ অনলাইন করা হয়েছে। কাউন্টার টিকিট বন্ধ থাকবে। এরপর আবার অনলাইন-কাউন্টার শভাগ ওপেন থাকবে।’
কেএসআর/এএসএম