‘সরকার চাইলেই মিরপুর স্টেডিয়াম ব্যবহার করতে পারে’

বিশেষ সংবাদদাতা
বিশেষ সংবাদদাতা বিশেষ সংবাদদাতা
প্রকাশিত: ১০:১৬ পিএম, ২৭ মার্চ ২০২০

‘সবার ওপরে মানুষ সত্য তাহার ওপরে নাই।’ প্রাণঘাতি করোনা ভাইরাস মোকাবিলায় মানবতার টানে, জীবনের প্রয়োজনে এখন গোটা বিশ্ব এক সুঁতোয় গেঁথে গেছে।

করোনা সঙ্কট এড়াতে সম্ভাব্য সব চেষ্টাই চলছে। যার যতটুকু সামর্থ আছে, তা নিয়ে করোনা মোকাবিলায় এগিয়ে আসছেন সবাই। এখানে ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান, সংগঠন, জাতি,সরকার, দেশীয় ও আন্তর্জাতিক সেবামুলক প্রতিষ্ঠানের বাচ-বিচার নেই। করোনা মহামারি এড়াতে জীবনের প্রয়োজনে এখন গোটা বিশ্ব মিলেমিশে একাকার।

বাংলাদেশের জাতীয় ক্রিকেট দলের প্রতিনিধিত্ব করা ২৭ ক্রিকেটার মিলে ৩১ লাখ টাকা দিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার করোনা তহবিলে। বিসিবিও ঘোষণা দিয়েছে সহযোগিতা করার।

শুধু আর্থিক সহযোগিতাই নয়, করোনা থেকে নিরাপদ থাকার জন্য কোয়ারেন্টাইন সেন্টার তৈরিতে কলকাতারা ইডেন গার্ডেন্স, হায়দরাবাদের রাজীব গান্ধী ইন্টারন্যাশনাল স্টেডিয়াম, রিয়াল মাদ্রিদের সান্তিয়াগো বার্নাব্যু কিংবা ব্রাজিলের ঐতিহাসিক মারাকানা স্টেডিয়ামও ছেড়ে দেয়া হচ্ছে।

রাজধানী ঢাকার মিরপুরে অবস্থিত শেরে বাংলা স্টেডিয়ামেও কি কোয়ারেন্টাইন সেবার জন্য বরাদ্দ দেয়া হবে? আজ বিকেল থেকে এমন এক গুঞ্জন আছে ক্রীড়া অনুরাগীদের মধ্যে। এ ব্যাপারে বিসিবির ভাষ্য কি?

আজ শুক্রবার স্থানীয় এক টেলিভিশনের সাথে মুঠোফোন আলাপে বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনও জানিয়েছেন আমরা সহযোগিতার হাত বাড়িয়েই আছি। করোনা সংকটে সম্ভাব্য যা যা করা সম্ভব, তা করতে প্রস্তুত বিসিবি। আমরা সাহায্য-সহযোগিতার জন্য বসে আছি। সরকারের যখন যা লাগবে, যেটা প্রয়োজন হবে আমরা তা করতে বসে অছি। সেটা জায়গা কিংবা স্টেডিয়াম বলেন, যা লাগে আমরা তা দিতে এক পায়ে দাঁড়িয়ে।’

অর্থ্যাৎ শেরে বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামও করোনা ভাইরাসে আক্রান্তদের চিকিৎসা কিংবা কোয়ারেন্টাইন হিসেবে ব্যবহার করার কথা পরিষ্কার বলেছেন বিসিবি সভাপতি। তারপরও শেরেবাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামের বরাদ্দ নিয়ে একটি ধুম্রজাল তৈরি হয়েছে। আজ সে ধুম্রজাল দুর করেছেন বিসিবি প্রধান নির্বাহী নিজামউদ্দীন চৌধুরী সুজনও।

শুক্রবার রাতে জাগো নিউজের সাথে আলাপে বিসিবি প্রধান নির্বাহী খানিকটা বিস্ময় প্রকাশ করে উল্টো জানতে চান, ‘বুঝি না শেরেবাংলা স্টেডিয়াম ব্যবহার নিয়ে বিসিবির অনুমতি বা বরাদ্দ দেয়ার প্রশ্ন আসছে কেন? বিষয়টা বিভ্রান্তিকর। আমার মনে হয় এ বিভ্রান্তির অবসান হওয়া দরকার।’

নিজামউদ্দিন চৌধুরী জানান, আসলে স্পেনের রিয়াল মাদ্রিদের স্টেডিয়াম, কলকাতার ইডেন গার্ডেন্স আর হায়দরাবাদের রাজিব গান্ধী স্টেডিয়াম বরাদ্দের সাথে শেরেবাংলা স্টেডিয়াম বরাদ্দের তুলনা করলে ভুল করা হবে। তিনি বলেন, ‘কোলকাতার ইডেন গার্ডেন্স হলো ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন অব বেঙ্গলের (সিএবি) নিজস্ব মাঠ। আর রাজিব গান্ধী স্টেডিয়ামও হায়দরাবাদ রাজ্য ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশের মাঠ। একইভাবে সান্তিয়াগো বার্নাব্যুও হচ্ছে স্পেনের রিয়াল মাদ্রিদের নিজস্ব মাঠ। কাজেই ওই মাঠগুলোর মালিকরাই সেগুলো করোনায় ব্যবহার করার অনুমতি দিয়েছে। কিন্তু আমাদের শেরেবাংলার ক্ষেত্রে কোন অনুমতির দরকার নেই। কারণ শেরে বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়াম তো আর ক্রিকেট বোর্ডের নিজস্ব সম্পত্তি নয়। এটা সরকারের। দেশে এখন চরম করোনা সঙ্কট। সরকার যেভাবে চাইবে, সেভাবেই ব্যবহার করবে। এখানে বিসিবির অনুমতির কিছুই নেই। আমরা অনুমতি কিংবা বরাদ্দের এখতিয়ারও রাখি না। সরকারের মাঠ। সরকার ইচ্ছে করলে যে কোন কাজে ব্যবহার করতে পারবে।’

এদিকে আগেই জানা বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড করোনা সঙ্কট মোকাবেলা দেশের মানুষের পাশে দাড়াতে বদ্ধ পরিকর। সিইও বলেন, ‘প্রাণনাশি করোনা ভাইরাস সংক্রমণরোধে সরকারের যে কোন কার্যক্রমে সহযোগিতার হাত বাড়াতে মুখিয়ে আছি আমরা। বোর্ড কি ধরনের সহযোগিতা করতে পারে, তা নিয়ে সরকারের উচ্চ পর্যায়ের সাথে কথাবার্তাও চলছে। সরকার যেমনটা চাইবে আমরাও তেমনটা করতে প্রস্তুত।’

তিনদিন আগে জাগো নিউজের সাথে আলাপে এমন আন্তরিক ইচ্ছেই প্রকাশ করেছিলেন বিসিবি প্রধান নির্বাহী নিজামউদ্দীন চৌধুরী সুজন। এখন দেখার বিষয় সরকারের তরফ থেকে বিসিবির কাছে কি চাওয়া হয়, আর্থিক সহযোগিতা, নাকি আনুসাঙ্গিক উপকরণ?

এআরবি/আইএইচএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।