পিএসএলের ভাগ্য নিয়ে বিভক্ত মুলতান-লাহোর
আর তিনদিন সময় পেলেই পুরোপুরি শেষ হতো পাকিস্তান সুপার লিগের (পিএসএল) পঞ্চম আসরের খেলা। কিন্তু তার আগেই করোনা আতঙ্কের কারণে নিজ নিজ দেশে ফিরে যান বিদেশি খেলোয়াড়রা, মহামারী ঘোষণা করা হয় বিশ্ব স্বাস্থ্যসংস্থার পক্ষ থেকে।
ফলে একপ্রকার বাধ্য হয়েই দুই সেমিফাইনাল এবং ফাইনাল ম্যাচ বাকি থাকতেই স্থগিত করা হয় এবারের পিএসএল। করোনার বর্তমান পরিস্থিতিতে ঠিক কবে হবে টুর্নামেন্টের বাকি ম্যাচগুলো, তা জানা নেই আয়োজকদেরও।
তবে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের (পিসিবি) ইচ্ছা পিএসএলের ষষ্ঠ আসরের আগেই, এবারের আসরের সবগুলো ম্যাচ শেষ করে ফেলা। এতে যত সময় লাগে লাগুক। আর তাদের এমন ভাবনার কারণেই এখন পিএসএলের ভাগ্য নিয়ে দুই মেরুতে অংশগ্রহণকারী দলগুলো।
ধারণা করা হচ্ছে, করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেও, আন্তর্জাতিক সূচির ব্যস্ততার আগামী নভেম্বরের আগে পিএসএলের ম্যাচগুলো আয়োজনের সুযোগ নেই পিসিবির সামনে। কিন্তু এ বিষয়ে আবার দ্বিমত রয়েছে টেবিল টপার মুলতান সুলতানসের। তবে অপেক্ষা করতে রাজি প্রথমবারের মতো সেরা চারে আসা লাহোর কালান্দারস।
পিএসএলের বাইলজ অনুযায়ী, কোনো কারণে টুর্নামেন্ট যদি শেষ করা না যায়, তাহলে গ্রুপ পর্বে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষ থাকা দলকে চ্যাম্পিয়ন হিসেবে ঘোষণা করা হবে। এ সুযোগটিই নিতে চাইছে আগের চার আসরে শিরোপা না জেতা মুলতান। কারণ গ্রুপপর্বে ১০ ম্যাচে ১৪ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে ছিল তারাই।
দলের বোলিং কোচ মুশতাক আহমেদের বিশ্বাস, বাইলজ অনুযায়ী তাদের হাতেই তুলে দেয়া হবে এবারের আসরের শিরোপা। আর এমনটা হলেই অনিশ্চিত পিএসএলের যথাযথ সমাপ্তি হবে বলে মনে করছেন পাকিস্তানের এ সাবেক ক্রিকেটার।
তিনি বলেন, ‘পিএসএলের এবারের আসরের যথাযথ সমাপ্তি হওয়া দরকার। আর তা হবে তখনই, যখন নিয়ম মেনে গ্রুপপর্বে শীর্ষে থাকা দলকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। আর পিসিবি যদি তা না করে, ষষ্ঠ আসর শুরুর আগে এবারের বাকি ম্যাচগুলো খেলার কথা ভাবে, তাহলে পুরো টুর্নামেন্টের গতিবিধিটাই নষ্ট করে দেয়া হবে।’
মুলতান ফ্র্যাঞ্চাইজির মালিক আলমগীর তারিনের কণ্ঠেও একই সুর, ‘আমরা এখনও ম্যানেজম্যান্টের সঙ্গে কথা বলিনি। তাদের সঙ্গে আলোচনা করেই হয়তো শেষের ম্যাচগুলোর ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হবে। তবে আমাদের মতামত হলো, বাকি ম্যাচগুলোর জন্য নতুন সূচি করা বাস্তবসম্মত হবে না। তখন বিদেশি খেলোয়াড়দের পাওয়া যাবে কি না এটাও দেখতে হবে। এছাড়া যদি ষষ্ঠ আসরের আগে এটা করা হয়, তাহলে খেলোয়াড়রা তাদের নতুন দলে খেলবে নাকি পুরনো দলে খেলবে? ঝামেলা কিন্তু থেকেই যায়।’
টুর্নামেন্টের সেরা চারে ওঠা অন্য তিন দল হলো করাচি কিংস, লাহোর কালান্দারস এবং পেশোয়ার জালমি। এদের মধ্যে প্রথমবারের মতো সেরা চারে নাম লিখিয়েছে লাহোর। আগের চার আসরে তারা ছিলো একদম তলানিতে।
তাই এবারের আসরে শিরোপা জেতার সুযোগটিকে বাইলজের মারপ্যাঁচে হাতছাড়া করতে চায় না লাহোর। বরং তাদের আশা দেরিতে হলেও, মাঠে গড়াবে বাকি তিন ম্যাচ। সেমিফাইনালে লাহোরের প্রতিপক্ষ টেবিল টপার মুলতানই। যারা চায় না খেলা মাঠে গড়াক।
লাহোরের অন্যতম মালিক সামিন রানা বলেন, ‘আমাদের কথা হলো, এখন সবাইকে একজোট হয়ে ভাবতে হবে কবে বাকি খেলাগুলো শেষ করা যায়। আমরা প্রতিযোগিতায় বিশ্বাস করি। অন্যথায় ক্রিকেট খেলার তো মানে নেই। গ্রুপপর্বে কী হয়েছে তা দেখে বিজয়ী ঠিক করলে তো খেলার মজাটাই থাকল না। মাঠের প্রতিযোগিতামূলক খেলাই তো ক্রিকেটকে আরও আকর্ষণীয় করে। অন্যথায় তো টস করেই প্রতিদিন জয়ী নির্ধারণ করা যেত।’
এসএএস/পিআর