এলাকার টেপ টেনিস থেকে স্বপ্নের জাতীয় দলে রেজাউর রাজা

দেশের যেকোনো পাড়া-মহল্লায় চোখ রাখলেই দেখা যাবে, নিয়মিত খেলা হয় টেপ টেনিস ক্রিকেট। চামড়ার ক্রিকেট বলে বদলে টেনিস বলে টেপ পেঁচিয়েই চলে ক্রিকেট খেলা। সেখানে ব্যাটের ঝড় তোলেন ব্যাটাররা আবার গতিতে প্রশংসা কুড়ান পেসাররা।
তাদের বেশিরভাগেরই স্বপ্ন থাকে একসময় জাতীয় দলের হয়ে খেলার, নিজ দেশের জার্সি গায়ে মাঠে নামার। কিন্তু সবার সেই স্বপ্ন পূরণ হয় না। তবে হয়েছে সিলেটের তরুণ পেসার রেজাউর রহমান রাজার। যিনি টেপ টেনিস দিয়ে খেলা শুরু করে এখন অপেক্ষায় রয়েছেন মর্যাদার টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেকের।
শুক্রবার থেকে শুরু হচ্ছে বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যকার টেস্ট সিরিজের প্রথম ম্যাচ। যা বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের অন্তর্ভুক্ত। এই সিরিজের জন্য ঘোষিত স্কোয়াডে দুই নতুন মুখ নিয়েছে বাংলাদেশ। তারা হলেন সিলেটের পেসার রেজাউর রহমান রাজা ও চাঁদপুরের ব্যাটার মাহমুদুল হাসান জয়।
চলতি জাতীয় ক্রিকেট লিগে ভালো পারফরম্যান্সের পুরস্কার পেয়েছেন এ দুজন। তবে আরও আগে থেকেই নজরে ছিলেন তারা। জাতীয় দলে সুযোগ পাওয়ার পর নিজের ক্রিকেট শুরুর গল্প শুনিয়েছেন রেজাউর রাজা, জানিয়েছেন তারও শুরুটা মূলত টেপ টেনিস দিয়েই।
বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের সরবরাহকৃত ভিডিওতে রাজা বলেছেন, ‘আসলে টেপ টেনিস খেলা থেকে (ক্রিকেটার হওয়ার) অনুপ্রাণিত হওয়া। এলাকায় টেপ টেনিস খেলতাম। তখন একটা ক্রিকেট বলের টুর্নামেন্ট হয়েছিল। আমি সেখানে খেলতে যাই। বড় ভাইরা আমার বোলিং দেখে বলছিলেন, তোর বোলিং ভালো হচ্ছে, চাইলে স্টেডিয়ামে গিয়ে ক্রিকেট প্র্যাকটিস করতে পারিস।’
বড় ভাইদের পরামর্শেই শুরু হয় সিলেটের এ তরুণের ক্রিকেট বলের ক্যারিয়ার, ‘তো আমি বড় ভাইদের কথা শুনে প্র্যাকটিসে গেলাম। প্র্যাকটিসে গিয়ে আমার মনে হইলো যে, ইনশাআল্লাহ্ আমি পারবো। তো এভাবেই আসলে আমার ক্রিকেটে আসা।’
আসন্ন সিরিজের স্কোয়াডে রাজা ছাড়াও রয়েছেন সিলেটের আরও দুই পেসার আবু জায়েদ রাহি এবং এবাদত হোসেন। এছাড়া আরেক পেসার সৈয়দ খালেদ আহমেদও সিলেটের সন্তান। জাতীয় দলের এই পেসারদের দেখেই উৎসাহ পেয়েছেন বলে জানালেন রাজা।
তার ভাষ্য, ‘চ্যালেঞ্জিং কি না... আসলে চ্যালেঞ্জ নেওয়া পছন্দ করি। আমাদের বড় ভাইদের কাছ থেকে অনুপ্রাণিত হওয়া... আমাদের সিলেটে যেমন রাহি ভাই, এবাদত ভাই, খালেদ ভাইদের কাছ থেকে মোটিভেশন পাওয়া। এই থেকেই আসলে পেস বোলার হওয়ার একটা উৎসাহ জেগেছে।’
এসময় টেস্ট ক্রিকেট তথা লাল বলের ক্রিকেটে বাড়তি আনন্দের কথা জানিয়ে রাজা বলেন, ‘টেস্ট খেলা আমি উপভোগ করি। আলহামদুলিল্লাহ্ ঘরোয়া ক্রিকেটে প্রথম শ্রেণিতে ভালো করেছি। চারদিনের খেলায় ডে বাই ডে কয়েকটা স্পেলে বোলিং করতে পারি। আমার শক্তির জায়গাটা ধরে রাখতে পারি।’
তিনি আরও যোগ করেন, ‘আমার নিজের যেটা মনে হয় যে, এক জায়গায় টানা বল করতে পারি। বলে কিছু মুভমেন্ট করাইতে পারি। এক রিদমে টানা বল করতে পারি। দিনের শুরুতে যেই পেসে বোলিং করি, দিনের শেষে তার চেয়ে একটু বেশি পেসে বল করতে পারি।’
জাতীয় দলে ডাক পাওয়ার আগে ১০টি প্রথম শ্রেণির ম্যাচ খেলে ৩৩ উইকেট নিয়েছেন ২২ বছর বয়সী রাজা। ইনিংসে পাঁচ উইকেট নিয়েছেন দুইবার, একবার পেয়েছেন চার উইকেট। এছাড়া টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে ১৬ ম্যাচে মাত্র ৬.৪৮ ইকোনমি রেটে নিয়েছেন ১৫টি উইকেট।
এসএএস/জেআইএম