অথচ শেষ দুটি টেস্টে নেগেটিভ ছিলেন হেরাথ!
চলতি বছর টেস্ট, ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি খেলতে একবার-দুবার নয়, পাঁচবার দেশের বাইরে গেছে টিম বাংলাদেশ। আগের চার বার শ্রীলঙ্কা, জিম্বাবুয়ে, নিউজিল্যান্ড ও আরব আমিরাতেও প্রায় গড়পড়তা এক মাসের বেশি সময় খেলে এসেছে টাইগাররা।
কিন্তু একবারের জন্যও করোনা আক্রান্ত হননি দলের কেউ। বলা যায় নির্বিঘ্নে করোনামুক্ত অবস্থায় প্রতিবার বিদেশ সফর করে নিরাপদেই দেশে ফিরে এসেছে জাতীয় দরে বহর।
এ বছর মার্চেও ওয়ানডে, টি-টোয়েন্টি খেলতে নিউজিল্যান্ডে গিয়েছিল জাতীয় দল। তখনও কোন সমস্যা হয়নি। কিন্তু এবার নিউজিল্যান্ডে গিয়ে করোনা পজিটিভ হলেন স্পিন বোলিং কোচ রঙ্গনা হেরাথ। পাশাপাশি অধিনায়ক মুমিনুল হক, নির্বাচক আব্দুর রাজ্জাকসহ ৮-৯ জনের এক বহর আছেন আইসোলেশনে।
এখন তাদের কেউও করোনা আক্রান্ত কি না? তা নিয়েই উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা। নিউজিল্যান্ডে জাতীয় দল এখন কোথায় অবস্থান করছে? কী অবস্থা এখন সেখানে? জাতীয় দলের বহরের বাকি কে কেমন আছেন? রঙ্গনা হেরাথেরই বা করোনা পজিটিভ হলো কবে, কখন? এসব খবর জানতে উন্মুখ ক্রিকেট অনুরাগিরা।
বাংলাদেশের টিম ডিরেক্টর খালেদ মাহমুদ সুজন ও দলের সঙ্গে যাওয়া নির্বাচক আব্দুর রাজ্জাক ক্রাইস্টচার্চ থেকে মুঠোফোনে জাগো নিউজের সঙ্গে আলাপে তা জানিয়েছেন। বুধবার বাংলাদেশ সময় দুপুরে (ক্রাইস্টচার্চে তখন রাত) মুঠোফোন আলাপে টিম ডিরেক্টর খালেদ মাহমুদ সুজন জানান, এ মুহূর্তে রঙ্গনা হেরাথ ছাড়া আর কেউ পজিটিভ নয়।
তবে খালেদ মাহমুদ সুজন তারপরও পুরোপুরি নির্ভার নন। আরও কেউ পজিটিভ কি না? তা এখনই জোর দিয়ে বলা যাচ্ছে না। সুজন যোগ করেন, পুরো দলের পর্যায়ক্রমে করোনা টেস্ট চলছে। বাকিদেরও টেস্ট করানো হয়েছে। সেটা বৃহস্পতিবার সকালে জানা যাবে। কেন তিনি বাকিদের নিয়ে চিন্তিত?
তার উত্তরে সুজনের সংশয়মাখা সংলাপ, আমি এই কারণে বাকিদের নিয়ে চিন্তিত, কারণ রঙ্গনা হেরাথেরও প্রথম দুই টেস্টে নেগেটিভ এসেছিল। আজ সকালে তার পজিটিভ এসেছে। তার মানে আগের দুই তিন টেস্টে নেগেটিভ কারও আজকের টেস্টে পজিটিভ ধরা পড়তে পারে।
সুজন আরও জানান, বিমানে যে যাত্রীর কাছ থেকে রঙ্গনা হেরাথ সংক্রমিত হয়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে, সেই বিমান ভ্রমণে বাকি যারা কাছাকাছি ছিলেন, তাদের আলাদা করে আইসোলেশনে রাখা হয়েছে। আর বাকি বহরটা কদিন জিমেও গেছে। আজও নাকি একটি বহর জিম করেছে।
তবে আগামীকাল যদি নতুন করে কারও পজিটিভ আসার খবর মেলে, তাহলে হয়তো সেটা বন্ধ হয়ে যাবে। নির্বাচক আব্দুর রাজ্জাক জানান, সব কিছু ঠিক থাকলে আজ (১৫ ডিসেম্বর) থেকে টিম প্র্যাকটিস শুরুর কথা ছিল। সেটা আর শুরু হয়নি।
এদিকে তারা জানিয়েছেন, নিউজিল্যান্ডে করোনা প্রটোকলটা মেইনটেইন করে সে দেশের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। এখানে নিউজিল্যান্ড ক্রিকেট বোর্ডের কোন কিছুই করার নেই। নিউজিল্যান্ড স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয় থেকে বাংলাদেশ দলের প্রতিটি সদস্যকে করোনা টেস্টের পর তিন-চারটি আলাদা ক্রাইটেরিয়ায় ভাগ করা হয়েছে।
যাদের হালকা উপসর্গও রয়েছে, তাদের সবার বাহুতে হলুদ ব্যান্ড পরানো আছে। আর যারা সব সংশয়-শঙ্কামুক্ত, তাদের পরানো হয়েছে নীল ব্যান্ড। এছাড়া পার্পেল ব্যান্ডও পরানো আছে কারও কারও। কাজেই রঙ্গনা হেরাথের পজিটিভ ধরা পড়ার পর এখন বাকি যাদের মধ্যে এক-আধটু উপসর্গ আছে, তারা সবাই হলুদ ব্যান্ড পরা।
এখন দলের প্রতিটি সদস্য একা এক ঘরে অবস্থান করছেন। কাজেই নতুন করে সংক্রমনের সম্ভাবনা কম। যদি কারও নতুন করে পজিটিভ হয়, তাহলে বুঝতে হবে সেই বিমান ভ্রমণের সময়ই করোনা সংক্রমিত হয়েছিল। হয়তো প্রথম দিকে টেস্টে পজিটিভ ধরা পড়েনি। কদিন পরে আবার নেগেটিভ রিপোর্ট পজিটিভ আসতে পারে, যেমন এসেছে হেরাথের।
এআরবি/এসএএস/এমএস