আমি খেলোয়াড় হলে বিপিএল না খেলে আইপিএলে যেতাম: সুজন

ক্রীড়া প্রতিবেদক ক্রীড়া প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৭:১১ পিএম, ০৩ জানুয়ারি ২০২৩

একটা সময় আইপিএলের পরই সবচেয়ে বড় ফ্র্যাঞ্জাইজি আসর দাবি করা হতো বিপিএলকে। সময়ের প্রবাহতায় সেই দাবি এখন আর ধোপে টেকার নয়। আইপিএল-বিগ ব্যাশ তো পরে এখন পাকিস্তানের পিএসএল কিংবা দক্ষিণ আফ্রিকার লিগের সঙ্গেও টক্কর দিতে পারছে না বিপিএল।

বহির্বিশ্বে বিপিএলের গ্রহণযোগ্যতা কমেছে। ফলে বিদেশি ক্রিকেটার খুব একটা পাওয়া যাচ্ছে না। যারা আসছেন, তাদের বেশিরভাগই আদতে অন্য জায়গায় দল পাচ্ছেন না বলে।

বিসিবি পরিচালক এবং খুলনা টাইগার্সের কোচ খালেদ মাহমুদ সুজন স্বীকার করছেন, বিপিএলের মান পড়ে গেছে। তাই বিদেশি খেলোয়াড় আসতে চাচ্ছেন না, আর সেটাই স্বাভাবিক।

সুজন বলেন, ‘পেশাদারিত্ব হিসেবে আমরা খুবই ভালো ছিলাম। আইপিএলের পর আমরা ছিলাম। বাট সবাই হতো টেক ওভার করছে। অনেকেই হয়তো ভালো করছে। এটাও সত্য কথা যে, আমাদের ফ্রাঞ্চাইজি যারা আসছে এটা ওপেন (বিদেশি) করার পরও ড্রাফট থেকে খুব ভালো খেলোয়াড় আমরা পাইনি।’

আর ভালো খেলোয়াড় না আসার কারণ যে বিপিএলের গ্রহণযোগ্যতা কমে যাওয়া, সেটি আকার-ইঙ্গিতে বুঝিয়ে দিয়েছেন সুজন। তিনি বলেন, ‘যেহেতু দক্ষিণ আফ্রিকা টুর্নামেন্ট করছে। যারা ওখানে খেলছে তারা কিন্তু আইপিএল বেইজ টিমই। তাদের জন্য মুখ্য ভূমিকা থাকে আইপিএল খেলার। খেলোয়াড়রা কিন্তু আলটিমেটলি চায় ওইসব টুর্নামেন্ট খেলতে, যেন আইপিএলের নজর কাড়তে পারে।’

তিনি খেলোয়াড় হলেও তেমনটাই ভাবতেন জানিয়ে সুজন বলেন, ‘সারাবিশ্বে আইপিএলের ওপর কোনো ফ্রাঞ্চাইজি টুর্নামেন্ট নেই। তাদের দলে খেলার জন্য ইচ্ছা তো থাকবেই। আমি খেলোয়াড় হলে আমারও থাকতো। আমি এখানে না থেকে ওখানে যেতাম। আমার মনে হয় আমরা ভারতের মার্কেটের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারছি না।’

বিপিএলের পিছিয়ে পড়ার কারণ হিসেবে ফ্র্যাঞ্চাইজিদের লোকসানের বিষয়টিও সামনে এনেছেন সুজন, ‘আমাদের ফ্রাঞ্চাইজি মালিকরাও যে খুব বড় বাজেটের দল করছেন তা না। তিন চার বছর আগে তিন-চারটা টিম বড় বাজেটের টিম করতো সেটা এখন কমে গেছে। খালি বিজনেসম্যানরা এসে ১০-১৫ কোটি টাকা খরচ করছে, বিনিময়ে কী নিয়ে যাচ্ছে? হয়তো স্পন্সর পাচ্ছে। কিন্তু স্পন্সর থেকেও যে বিশাল অঙ্কের টাকা তুলতে পারছে বর্তমানে দেশের যা অবস্থা, তাও না। একটা টিম কিন্তু আসে। এক-দুই-তিন বছর থাকে। তখন ৩ কোটি টাকা লস করে। তিন বছর পর এই লসটা কিন্তু করবে না কেউ।’

‘আপনি যদি ৮ বছরের জন্য টিম নেন। প্রথম তিন বছর লস করবেন, তারপর একটা ব্রেক ইভেনে যাবেন তারপর প্রোফিট করা শুরু করবো। ওরকম না হলে কিন্তু সবাই আসতে চাইবে না। দিনশেষে তারা সবাই ব্যবসায়ী। তারা বিজসেনটাই বুঝবে। আমি বিশ্বাস করি এরকম দলও থাকবে যারা লম্বা সময়ের জন্য খেলবে। কুমিল্লা যেমন আছে। এটা ভালো দিক। রংপুরও আবার ব্যাক করেছে। খুলনাও এখন অনেক দিন ধরে খেলছে। বড় টিমগুলো আরো বেশি ভালো হবে।’

তাহলে আইপিএল কিভাবে লাভ করছে? সুজন বলেন, ‘আপনি যদি আইপিএলের ফরম্যাটে যান, তাহলে আমাদেরকে কিছুটা হলেও চিন্তা করতে হবে। যেন ফ্রাঞ্চাইজি ও বিসিবির উইন উইন পরিস্থিতিতে আসে। কারণ বিসিবি এখান থেকে সামান্য টাকা আয় করে। সেটা দলগুলোর জন্যও হতে হবে। উইন উইন পরিস্থিতিটা কিভাবে আনা যায়, বিজনেস মডিউল কিভাবে করা যায় সেটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের সেভাবেই চিন্তা করতে হবে। এটা টিকে থাকবে, বিপিএল আরো বড় হবে, প্রসার পাবে, আরো বড় খেলোয়াড়রা খেলতে আসবে চাইবে, তাহলেই এটা ভালো হবে।’

এমএমআর/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।