হাথুরু অনেক ভালো মানুষ, পেছনে নয় সামনেই কথা বলেন: সুজন

বিশেষ সংবাদদাতা
বিশেষ সংবাদদাতা বিশেষ সংবাদদাতা
প্রকাশিত: ০৭:০৯ পিএম, ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৩

তিনি আরও একবার বাংলাদেশের হেড কোচ হয়েছেন। এবার আবারও হলেন এবং ইংল্যান্ডের বিপক্ষে আগামী মার্চে অনুষ্ঠেয় সিরিজ দিয়েই বাংলাদেশে শুরু হবে নতুন করে ফিরে আসা হাথুরুর দ্বিতীয় ইনিংস। বিসিবি থেকে জানানো হয়েছে, বিপিএল শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই ঢাকা চলে আসবেন চণ্ডিকা হাথুরুসিংহে।

অর্থাৎ, সব কিছু ঠিক আছে; কিন্তু তারপরও হাথুরুকে নিয়ে চারদিকে নানা কথা। হাথুরুর ফিরে আসা কতটা যৌক্তিক? এ লঙ্কানকে আবার কোচ করে আনাই বা কতটা ঠিক হলো? এমন নানা গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে ক্রিকেট পাড়ায়।

হাথুরু ইস্যুতে আজ মিডিয়ার মুখোমুখি হয়েছিলেন জাতীয় দলের টিম ডিরেক্টর খালেদ মাহমুদ সুজন। হাথুরুকে খুব কাছ থেকে দেখা খালেদ মাহমুদ সুজনের কাছে মিডিয়ার প্রশ্ন, ‘হাথুরু আবার আসায় বাংলাদেশের ক্রিকেটের কী উপকার হবে? বাংলাদেশে তার প্রথমবার ড্রেসিংরুমে যে যে পরিস্থিতির উদ্ভব ঘটেছে, তার পুনরাবৃত্তি কি ঘটতে পারে?’

উত্তর দিতে গিয়ে অনেক কথার ভিড়ে খালেদ মাহমুদ সুজন প্রকশ্যে বলেন, ‘আমি মনে করি হাথুরু ভালো মানুষ। যা বলে, সামনা সামনি বলে। পেছনে কথা বলে না কাউকে। পেছনে গসিপিং করার চেয়ে একটা খেলোয়াড়কে যদি সামনে বলেন, তোমার থেকে আমি এটা চাই বা তোমার এই জিনিসটা ভালো নয়। এতে খারাপ কিছু তো দেখি না।’

হাথুরুকে কিছুতেই কড়া হেড মাস্টার মানতে রাজি নন সুজন। তিনি বলেন, ‘সবসময়ই আমরা একটা কথা বলি, মিডিয়ায়ও আগে শুনি, হাথুরু কড়া হেডমাস্টার। আমার মনে হয় হি ইজ নট দ্যাট কড়া, যে রকম করে আমরা বলি সেরকম কিন্তু ও না। বরং সে পেছনে কথা না বলে সামনে কথা বলে। এটা একটা ভালো মানুষের লক্ষণ।’ সুজন যোগ করেন, ‘এসব আচরণ যদি কড়া হেডমাস্টার হয়ে যায়, তাহলে অবশ্যই সে কড়া হেডমাস্টার।’

দীর্ঘদিন জাতীয় দলের সাথে কাজ করা সুজনের মনে হয় বাংলাদেশে আগে কাজ করে যাওয়া কেউ কেউ সামনে আর পেছনে দু’রকম কথা বলেন। সে অভিজ্ঞতার রেশ ধরেই তিনি বলেন, ‘আমি অনেক কোচের সঙ্গে কাজ করেছি বাংলাদেশে, যারা সামনে একরকম আবার পেছনে অন্যরকম কথা বলে। হাথুরুর ব্যাপারে একটা কথা বলবো, ওর এই গুণটা আমার দারুণ লাগে যে ও যা বলে সামনে বলে। সাকিব কিংবা তামিম- অবশ্যই তারা সম্মানিত, বড় প্লেয়ার, সিনিয়র প্লেয়ার, গুরুত্বপূর্ণ প্লেয়ার আমাদের দলের। হাথুরু এই ডেফিনেশন তৈরি করে না দলে। একটা তরুণ প্লেয়ার যে রেসপেক্ট পাওয়া উচিত, সবসময় সব প্লেয়ারকে তা দিয়েছেন তিনি।’

ড্রেসিং রুমের পরিবেশ নিয়েও খালেদ মাহমুদ সুজনের কোনো তিক্ত ও নেতিবাচক অভিজ্ঞতা নেই। তার দাবি, ‘হাথুরু যখন হেড কোচ ছিলেন, তখন সবচেয়ে ক্লিন ড্রেসিং রুম ছিল ।’

হাথুরুর কোনো কিছুকে নেতিবাচক চোখে দেখতে নারাজ সুজন। তার মনে হয়, হাথুরু আগেরবার যখন কোচ ছিলেন তখন তার বয়স কিছুটা কম ছিল। বাংলাদেশও ছিল হারের বৃত্তে আটকা। অবস্থার পরিবর্তনের জন্য তাকে কিছু কাজ করতে হয়েছিল, যা কারও কারও চোখে নেতিবাচক।

তাই সুজনের মুখে এমন কথা, ‘আমি নেতিবাচক সেন্সে নিতে চাই না। তখন ও (হাথুরু) তরুণ ছিল। বাংলাদেশের ক্রিকেটেরও যে একটা অবস্থা ছিল। তখন আমরা জিততে পারছিলাম না। এজন্য অনেক কিছু বদলাতে হয়েছে তখন। এখন তো পরিস্থিতি অন্যরকম। যদি আমরা ইতিবাচকভাবে নেই, সবকিছু ঠিক থাকে। আমার মনে হয় না যে, খারাপ করবো ওর অধীনে। ভালো করারই কথা।’

সুজনের আশা, হাথুরু এখন আগের চেয়ে অনেক পরিণত। তখন বয়স ছিল ৪০-এর কোঠায়। এখন বয়স বেড়েছে। আরও পরিণত হয়েছে। অভিজ্ঞ ও ম্যাচিউর হাথুরুকে পাবে এবার বাংলাদেশ।

সুজনের অনুভব, ‘হাথুরু আমাদের খেলোয়াড়দের খুব ভালো করে চেনে। আমাদের ক্রিকেট খুব ভালোভাবে ওর নখদর্পনে আছে। আমি তো ভালো কিছু প্রত্যাশা করি। সময়ই বলে দেবে আসলে কী হয়। যখন হাথু এসেছিল, তখন তার বয়স ছিল খুব কম। এখন তো অভিজ্ঞ হাথুকে পাবো, ম্যাচিউরড অনেক। আমি আশা করি ভালো কিছু হবে। দেখা যাক, ভালো হওয়ার চিন্তা করেই বিসিবি আনছে ওকে। ওই ভালোটা ডেলিভার করবে বলে আশা করি।’

এআরবি/আইএইচএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।