২৬ মাস পর সেঞ্চুরি মুমিনুলের ব্যাটে

বিশেষ সংবাদদাতা
বিশেষ সংবাদদাতা বিশেষ সংবাদদাতা
প্রকাশিত: ০৩:৩৯ পিএম, ১৬ জুন ২০২৩

টেস্টে তাকেই বাংলাদেশের সফলতম ব্যাটার ভাবা হতো। প্রায় শুরু থেকে টেস্টে মুমিনুল হকের ব্যাট থেকে নিয়মিত রান বেরিয়ে এসেছে। ধারাবাহিকভাবে ভাল খেলার পুরস্কার হিসেবে টেস্টে ক্যাপ্টেন্সিও পান মুমিনুল।

কিন্তু একটা সময় এসে বিশেষ করে ২০২১ সালের জুলাই জিম্বাবুয়ে সফরের পর থেকে মুমিনুল হক আস্থা হারিয়ে ফেলেন অনেকটাই। ব্যাটের তেজও কমে যেতে থাকে।

এর মধ্যে ২০২২ সালের ১ জানুয়ারি মাউন্ট মঙ্গানুইয়ে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ৮৮ রান করার পর থেকে হঠাৎ মুমিনুল হকের ফর্ম খুব খারাপ হতে থাকে। নিজেকে হারিয়ে ফেলেন এ ছোটখাট গড়নের বাঁ-হাতি ব্যাটার। রীতিমত রান খরা নেমে আসে তার ব্যাটে।

খারাপ খেলার মাত্রা প্রবল হতে থাকে। একদমই রান করতে ভুলে যান মুমিনুল। ফর্ম এতটাই খারাপ হয়ে যায় যে ২০২২ সালের জুনে অধিনায়কত্ব হারিয়ে ফেলেন। তারপর ১৭ ইনিংসে শুধু একবার পঞ্চাশের ঘরে (২০২২ সালের ২২ ডিসেম্বরে মিরপুরের শেরে বাংলায় ভারতের বিপক্ষে ৮৪) পৌঁছাতে সক্ষম হন মুমিনুল হক।

তারও অনেক থেকে শতরান ছিল না ব্যাটে। শেষ সেঞ্চুরি করেছেন দুই বছরের বেশি সময় আগে ২০২১ সালের ২১ এপ্রিল পাল্লেকেলেতে। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ৪৩১ মিনিটে ৩০৪ বলে ১১ বাউন্ডারিতে ১২৭ রানের ইনিস খেলেন মুমিনুল হক। তারপর ২৭ ইনিংস পর আজ আবার টেস্ট শতক মুমিনুলের।

মাঝের সময়টায় তিনবার পঞ্চাশের ঘরে পা রাখলেও শতকের ঘরে পৌঁছাতে পারেননি। দু’বার আশির ঘরে আর একবার ৭০-এ গিয়ে আউট হয়েছেন মুমিনুল হক। এর ভেতর ২০২২ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সাথে ৮৪ রানের ইনিংসটি মুমিনুল হককে আবার সাহস জোগায়।

আফগানিস্তানের সাথে শেরে বাংলায় এ টেস্টের প্রথম ইনিংসেও রান পাননি মুমিনুল। ফিরে পান ১৫ রানে। সেই ১৫ রানও যে খুব আস্থা ও আত্মবিশ্বাসে করেছেন, তা নয়। আজ শুক্রবার দ্বিতীয় ইনিংসে আবার নিজেকে খুঁজে পেয়েছেন মুমিনুল। খেলেছেন নিজের মত।

শুরুতে খানিক আড়ষ্ট ছিলেন। কিছু শট খেলেছেন আত্মবিশ্বাস কম নিয়ে। ব্যাটের কানায় লেগে কিছু শট এদিক-ওদিক চলে যায়। দেখে মনে হচ্ছিল এই বুঝি আউট হযে যাবেন। তারপর সময় গড়ানোর সাথে সাথে আত্মবিশ্বাস ফিরে পান। শটের ওপর পূর্ণ নিয়ন্ত্রন চলে আসতে থাকে।

প্রথম পঞ্চাশ খেলতে সময় নেন ৯২ মিনিট। বল খেলেন ৬৭টি। হাফ সেঞ্চুরির ২৮ রান আসে শুধু বাউন্ডারি (৭ টি) থেকে। পরের পঞ্চাশও প্রায় একই গতি ও ছন্দে পূর্ণ করেন মুমিনুল।

এরপর শতক থেকে মাত্র ৫ রান দুরে অপরাজিত অবস্থায় চা বিরতিতে সাজঘরে ফেরত আসেন মুমিনুল। চা বিরতির পর আর বেশি সময় নেননি। ১২ মিনিট পর আফগান পেসার ইয়ামিন আহমাদজাইয়ের খাট লেন্থের বলকে উইকেটরক্ষক ও স্লিপের ওপর দিয়ে থার্ডম্যানে গলিয়ে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে শতকপূর্ণ করেন মুমিনুল। ১৯০ মিনিট ক্রিজে কাটিয়ে ১২৩ বলে একডজন বাউন্ডারিতে পৌঁছে যান তিন অংকে।

আগে থেকেই টেস্টে বাংলাদেশের সর্বাধিক সেঞ্চুরিরর মালিক ছিলেন তিনি। আফগানিস্তানের বিপক্ষে এই টেস্ট খেলতে নামার আগেই তামিমের (৭০ টেস্টে ১০) চেয়ে মুমিনুল (৫৬ টেস্টে ১১) এক সেঞ্চুরি বেশি ছিল। শুক্রবার টেস্ট ক্যারিয়ারের ১২ নম্বর শতক পূর্ণ হয় কক্সবাজারের ৩১ বছর বয়সী উইলোবাজের।

এআরবি/আইএইচএস/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।