চ্যালেঞ্জটা কিন্তু তাসকিন-শরিফুলদেরও
![চ্যালেঞ্জটা কিন্তু তাসকিন-শরিফুলদেরও](https://cdn.jagonews24.com/media/imgAllNew/BG/2023March/taskin-20230905210450.jpg)
বুধবার পাকিস্তানের সাথে কী করবে বাংলাদেশ? জিততে হলে সাকিবের দলের করণীয় কী? টাইগার ভক্তদের বড় অংশের ধারণা, পাকিস্তানি ফাস্টবোলিং তোড় সামলে ওঠার ওপরই নির্ভর করছে টিম বাংলাদেশের ভাগ্য।
বেশিরভাগ বাংলাদেশ সমর্থকের চোখ পাকিস্তানের ফাস্টবোলারদের ওপর। তাদের উৎকণ্ঠামাখা প্রশ্ন, ‘আচ্ছা শাহিন শাহ আফ্রিদি, হারিস রউফ আর নাসিম শাহর দুরন্ত গতি আর আগ্রাসী রূপের সামনে সাহস নিয়ে বুক চিতিয়ে লড়াই করতে পারবে টাইগাররা?
যাদের দুর্দান্ত গতি, বিষাক্ত সুইংয়ের সামনে রোহিত শর্মা, বিরাট কোহলির মত বিশ্বসেরা ব্যাটাররাই দাঁড়াতে পারেনি; সেখানে লিটন, সাকিব, মুশফিক, হৃদয়, মিরাজরা কি পারবেন?
কাল বুধবারের ম্যাচ নিয়ে আশপাশে অনেকের মনেই এ সংশয়। এ চিন্তা যে অমূলক, তা নয়। তবে ভুলে গেলে চলবে না, লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়াম কিন্তু অস্ট্রেলিয়ার পার্থের ওয়াকা নয় যে, ফাস্টবোলারদের বোলিং তোড়ে ব্যাটারদের নাভিশ্বাস উঠে যাবে ।
গাদ্দাফি স্টেডিয়াম হলো মূলত ব্যাটারদের স্বর্গ। একদিনের ক্রিকেটে ঘরের মাঠে পাকিস্তানের সবচেয়ে বড় (৩৭৫/৩) দলগত স্কোরটা (জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ২০১৫ সালের ২৬ মে) কিন্তু গাদ্দাফিতে। ঘরের মাঠে পাকিস্তানের দ্বিতীয় সর্বাধিক (৩৪৯/৪) স্কোরটিও ওই মাঠেই (২০২২ সালের ৩১ মার্চ অস্ট্রেলিয়ার সাথে)।
পাকিস্তানের ট্র্যাক রেকর্ড বলে, পাকিস্তানের ঘরের মাঠে সাফল্যের অন্যতম অনুকূল ক্ষেত্র এই গাদ্দাফি স্টেডিয়াম। সেই মাঠে পাকিস্তানি ফাস্টবোলারদের রুদ্রমূর্তি নিয়েই কথা হচ্ছে বেশি।
বাংলাদেশ সমর্থকদের বড় অংশের যত চিন্তা পাকিস্তানি ফাস্টবোলিং নিয়েই। কিন্তু অনেকে ভুলেই গেছেন যে, সুপার ফোরের প্রথম লড়াইয়ে জিততে হলে পাকিস্তানি পেসারদের সামলানোর পাশাপাশি বাবর আজম, ফাখর জামান, ইমাম উল হক, মোহাম্মদ রিজওয়ান আর ইফতেখার আহমেদদের বড়সড় স্কোর গড়া থেকে বিরত রাখতে হবে।
পাকিস্তানিরা একবার বড় পুঁজি গড়ে তুলতে পারে আর রক্ষে নেই। তখন শাহিন শাহ আফ্রিদি, হারিস রউফ আর নাসিম শাহরা হয়ে উঠবেন আরও ভয়ঙ্কর। তাদের বলে ধার বেড়ে যাবে কয়েকগুণ।
কাজেই টিম বাংলাদেশের আসল কাজ হলো পাকিস্তানিদের বড় পুঁজি গড়া থেকে বিরত রাখা। যেহেতু গাদ্দাফির উইকেট একটু দ্রুতগতির, স্পিনারদের কার্যকারিতার রেকর্ড কম। তাই বোলিংয়ে স্পিনার সাকিব ও মিরাজের চেয়ে পেসারদেরই দরকার পড়বে বেশি। মানে অগ্রণী ভূমিকা রাখতে হবে বাংলাদেশের দ্রুতগতির বোলারদের।
তাসকিন আহমেদ, শরিফুল ইসলাম আর হাসান মাহমুদরা এখন অনেক পরিণত। কোন উইকেটে কাদের বিপক্ষে কোন লাইন ও লেন্থে বল করতে হবে, নতুন বলে কি করণীয়, ডেথ ওভারে প্রতিপক্ষ যখন হাত খুলে রান তোলায় মনোযোগী হয়- তখনকার কাজগুলোইবা কী?
আগের যে কোনো সময়ের চেয়ে এখন বাংলাদেশের পেসারদের তা ভালো জানা। আফগানিস্তানের সাথে এই গাদ্দাফিতে আগের খেলায় বড় পুঁজি নিয়ে রহমানুল্লাহ গুরবাজ, ইব্রাহিম জাদরান, রহমত শাহ, হাসমতউল্লাহ শহিদিদের ভালোই কোণঠাসা রেখেছিলেন তাসকিন-শরিফুলরা।
এখন দেখার বিষয় একই মাঠে বাবর আজম, ফাখর জামান, মোহাম্মদ রিজওয়ান, ইমাম উল হক, ইফতেখার আহমেদদেরর বিপক্ষে একইরকম পারফর্ম করতে পারেন কিনা বাংলাদেশি পেসাররা।
ব্যাটিং অনুকূল উইকেটে পাকিস্তানের সমৃদ্ধ ব্যাটিং লাইনআপের বিরুদ্ধে বল করা অনেক এক বড় চ্যালেঞ্জ। তাদের হাত খুলে খেলা থেকে বিরত রাখা, প্রথমে চেপে বসতে না দেওয়া, মাঝখানে রানের গতি আটকে রাখা আর একদম শেষদিকে উত্তাল উইলোবাজি করতে না দেওয়া-অনেক কঠিন চ্যালেঞ্জ। তাসকিন-শরিফুলরা কি সেই চ্যালেঞ্জ উৎড়ে যেতে পারবেন?
এআরবি/এমএমআর/এএসএম