‘নান্নু ভাইকে নিয়ে আপনাদের এই প্রশ্ন করা কি ঠিক?’

ক্রীড়া প্রতিবেদক ক্রীড়া প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৩:০০ পিএম, ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪

জাতীয় দলের প্রধান নির্বাচক হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার পর ২০১৬ সাল থেকে বেশ দাপটের সঙ্গেই দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন মিনহাজুল আবেদিন নান্নু। দলের সাফল্য-ব্যর্থতা, সব কিছুর সঙ্গেই জড়িয়ে নির্বাচক প্যানেলের নাম। তবে সাফল্যের চেয়ে ব্যর্থতাতেই সবচেয়ে বেশি আলোচিত থাকে নান্নু নির্বাচক প্যানেল। বিশ্বকাপসহ নানা সিরিজ এবং টুর্নামেন্টে বাংলাদেশ দল ব্যর্থ সর্বপ্রথম অভিযোগের তীরটা ভেসে আসে নির্বাচক প্যানেলের দিকেই।

সর্বশেষ ভারতে অনুষ্ঠিত ওয়ানডে বিশ্বকাপে বাংলাদেশ দলের ব্যর্থতার জন্য সবচেয়ে বেশি দায়ী করা হয় নান্নু-বাশারদেরই। এমনকি বিসিবিও সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলে, এই কমিটি আর নয়। সোশ্যাল মিডিয়া থেকে শুরু করে সব জায়গায় নান্নু-বাশারদের মুন্ডুপাত চলতে থাকে। সবাই চায়, এই নির্বাচক প্যানেলের বিদায়।

তবুও, বিসিবির নির্বাহী কমিটির সভা হতে বিলম্ব হওয়ায় নান্নু-বাশাররা দায়িত্ব চালিয়ে যাচ্ছিলেন। তবে শেষ পর্যন্ত আর শেষ রক্ষা হলো না। বিদায় নিতেই হলো নান্নু-বাশারকে। নতুন প্রধান নির্বাচক হলেন গাজী আশরাফ হোসেন লিপু। বাশারকে বাদ দিয়ে নেয়া হলো হান্নান সরকারকে।

নির্বাচক প্যানেল নিয়োগ দেয়া নিয়ে আজ সকালে চট্টগ্রামের এমএ আজিজ স্টেডিয়ামে দুর্দান্ত ঢাকার অনুশীলন শুরুর আগে দলটির কোচ, বিসিবি পরিচালক খালেদ মাহমুদ সুজনের কাছে নানা বিষয় জানতে চান সাংবাদিকরা। এ সময় সদ্য বিদায়ী প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদিন নান্নু সম্পর্কে এক সাংবাদিক জানতে চান, ‘লিপু ভাই ক্রিকেট থেকে অনেকদিন দূরে ছিলেন; কিন্তু মিনহাজুল আবেদিন নান্নুরা তো খুব একটা খারাপ কাজ করেননি। ভালো কাজই করেছেন। তাদের সঙ্গে খেলোয়াড়দের বন্ডিংটাও অনেক ভালো। সেখান থেকে বের হয়ে আসা তার (নান্নু) জন্য কতটা কঠিন মনে করেন?’

জবাবে খালেদ মাহমুদ সুজন তখন বলেন, ‘আপনাদের এই প্রশ্ন করা কি ঠিক? নান্নু ভাইকে আপনারা এমনভাবে… (বলতে গিয়ে থেমে যান সুজন, পরক্ষণে বলেন) নান্নু ভাই খুবই দুর্ভাগা। একজন সাবেক অধিনায়ককে যেভাবে মানুষ বিব্রত করেছে, আমি এটা মেনে নিতেই পারি না। ভুল মানুষের থাকতেই পারে। নান্নু ভাই, সুমন সততার সাথে কাজ করেছেন। ’

শুধু নান্নু-সুমনদের দোষ দিতে চান না সুজন। তিনি বিসিবিরও দোষ খুঁজলেন। সুজন বলেন, ‘শুধু উনাদের (নান্নু-সুমন) দোষ দিয়েও লাভ হবে না। আমরা নির্বাচক খুঁজে পাচ্ছিলাম না। বিসিবি কেন উনাদের এতদিন ক্যারি করেছে? যেটা বাস্তবতা সেটা ভাবতে হবে। নান্নু ভাই দুদিন আগেও খুব খারাপ ছিলেন, আজ তাকে ভালো বলার কারণ আছে বলে মনে করি না। আমাদের সোশ্যাল মিডিয়া দেখে যদি সিলেক্টর তৈরি করি, সিলেক্টর-প্লেয়ারদের গালি দেই! তাহলে তো হবে না। ‘

‘এসব কথা সোশ্যাল মিডিয়া থেকেই ছড়ায়। আপনাদের (সাংবাদিকদের) দায়িত্বও খুব জরুরি। সমালোচনা থাকবেই। শান্ত ভালো খেলবে না, সমালোচনা হবে। লিপু ভাই ভালো কাজ করবে না, সমালোচনা হবে। কিন্তু লিপু ভাইর ভালো কাজের কথাও বলতে হবে।’

সুজনের অভিমত হলো, মিনহাজুল আবেদিন নান্নু এবং সুমনের অধীনে অনেক সাফল্য পেয়েছে বাংলাদেশ। সে সবও স্মরণ করতে হবে। তিনি বলেন, ‘নান্নু ভাই, সুমনের অধীনে বাংলাদেশ দল অনেক সাফল্য পেয়েছে। উনাদের অবদান ভুলে গেলে হবে না। পরিবর্তন দরকার ছিল, বিসিবির এই সিদ্ধান্ত…, নান্নু ভাইরা যতদূর করেছেন, অবশ্যই অনেক ভালো কাজ করেছেন। আমি কোনো দোষারোপ করি না, উল্টো স্যালুট করি। তারা ধৈর্যের সাথে যে কাজটা করে গেছেন। সিলেকশন সহজ কাজ না, আপনি তো সবাইকে খুশি করতে পারবেন না। এতজন থেকে ১৫ জন নেওয়া, আবার পছন্দ-অপছন্দ আছে। এগুলোর মধ্যে কাজ করা সহজ ছিল না।’

আইএইচএস/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।